দিনের দৈর্ঘ্য বাড়াচ্ছে চাঁদ

সেই সময় থেকে আহ্নিক গতি কমতে কমতে দিন বেড়ে ২৪ ঘণ্টার হয়েছে

ছবি : ইন্টারনেট

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

দিনের দৈর্ঘ্য বাড়াচ্ছে চাঁদ

  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২৮ জুলাই, ২০১৮

কোনো কাজে মন না বসলেই সময়টাকে দীর্ঘ মনে হয়। আবার কোনো বিপদের সময়েও মনে হয় সময় বুঝি শেষ হচ্ছে না। অথচ সময় বসে থাকে না। সে নদীর স্রোতের মতো বহমান। এ কারণেই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মনে হতে থাকে দিনগুলো বুঝি দ্রুত ফুরিয়ে গেল। কিন্তু আশ্চর্যের কথা হচ্ছে দিন বদলের পালায় বাড়ছে দিনের দৈর্ঘ্যও।

সাধারণভাবে আমরা জানি, প্রতিবছর জুন মাসের ২০ থেকে ২২ তারিখের মধ্যে উত্তর অয়নান্ত ঘটার কারণে দিন ও রাতের দৈর্ঘ্যের পরিবর্তন হয়। সে সময় থেকে সূর্য কিছুটা দক্ষিণ দিকে হেলতে শুরু করে। ফলে সে সময় উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল আর দক্ষিণ গোলার্ধে এই সময় শীতকাল বিরাজ করে। ওই সময়ের পর পৃথিবী যতই তার কক্ষপথে অগ্রসর হয় ততই পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে ঝুঁকতে থাকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্য থেকে দূরবর্তী হতে থাকে। এর ফলে উত্তর গোলার্ধে দিনের দৈর্ঘ্য ক্রমশ বৃদ্ধি পায় এবং রাতের দৈর্ঘ্য ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে। অপরদিকে দক্ষিণ গোলার্ধে এর ঠিক বিপরীত অবস্থা চলতে থাকে।

ঋতুচক্রে এটি স্বাভাবিক। কিন্তু গবেষকরা দাবি করছেন, পৃথিবীর ঘূর্ণন গতি (আহ্নিক গতি) ক্রমেই কমে যাচ্ছে। তাই প্রতিটি দিনের দৈর্ঘ্যও বেড়ে যাচ্ছে। তারা হিসাব করে দেখেছেন প্রতি ১০০ বছরে একেকটি দিন ১ দশমিক ৮ মিলি সেকেন্ড করে দীর্ঘ হয়। সেই হিসাবে প্রতিটি দিন ১ মিনিট করে বড় হতে ৩৩ লাখ বছর লাগবে আর অতিরিক্ত একটি ঘণ্টা প্রতিদিনের সঙ্গে যুক্ত হতে প্রয়োজন হবে ২০ কোটি বছর। গবেষকরা হিসাব করে দেখেছেন, ১৪০ কোটি বছর আগে দিনের দৈর্ঘ্য ছিল ১৮ ঘণ্টা। সেই সময় থেকে আহ্নিক গতি কমতে কমতে দিন বেড়ে ২৪ ঘণ্টার হয়েছে।

গবেষকরা পৃথিবীর বিভিন্ন ঘটনাবলির প্রাক্তন রেকর্ডগুলো ঘেঁটে আহ্নিক গতি ধীর হওয়ার সময় গণনা করেন। তারা ইতিহাসের পাওয়া একেবারে প্রাথমিক দিকের লিখিত পর্যালোচনা করেছেন। এসব প্রাচীন দলিলে সূর্যগ্রহণ ও অন্যান্য জোর্তির্িবদ্যা সম্পর্কিত ঘটনা লিপিবদ্ধ করা আছে। এসব ঘটনার লিপিবদ্ধ সময়ের সঙ্গে বর্তমান গণনার সময় তুলনা করে, তখনকার পৃথিবীতে দিনের দৈর্ঘ্য এবং বর্তমান দিনের দৈর্ঘ্যের পার্থক্য গণনা করে বের করেছেন গবেষকরা।

তবে এবার উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের জোতির্বিদরা দিনের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির নতুন একটি কারণ উদঘাটন করেছেন। তারা বলছেন, পৃথিবীতে দিনের দৈর্ঘ্য বাড়ার পেছনে রয়েছে চাঁদ।

জোতির্বিদরা ওই গবেষকরা জোতির্বিদ্যার তত্ত্ব তথ্য, পৃথিবী থেকে পর্যবেক্ষণের তথ্যের তুলনামূলক বিচার করেন। এরপর তারা স্থির সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, দিনের দৈর্ঘ্য খুব ধীরে অল্প অল্প করে বাড়ছে।

গবেষকরা দেখেছেন, পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ দিন দিন পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এর ফলে শুধু আহ্নিক গতিতে না, প্রভাব পড়ছে বার্ষিক গতিতেও। ফলে সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর ঘুরে আসার জন্য সময় লাগছে বেশি, যার ফলে ২৪ ঘণ্টার রাত দিনও কিছুটা বাড়ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads