পৃথিবীতে ভেঙ্গে পড়েছে চীনের মহাকাশ গবেষণাগার তিয়ানগং-১। বাংলাদেশ সময় সোমবার সকালে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পর স্পেস ল্যাবটির বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়। আর বাকি অংশ গিয়ে পড়ে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে।
চীনের ম্যান্ড স্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং-এর অফিসের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে,গ্রিনিচ মান সময় ২ এপ্রিল রাত ১২টা ১৫ মিনিটে মহাকাশ গবেষণাগারটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে। বায়ুমণ্ডলে পুনরায় প্রবেশের কারণে এটির বেশির ভাগ অংশ পুড়ে গেছে।
ইউনাইটেড স্টেটস এয়ার ফোর্স ১৮ স্পেস কন্ট্রোল স্টেশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে,অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাজ্যে তাদের সংস্থার সহযোগিতায় দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর দিয়ে স্পেস ল্যাবটির প্রবেশের কথা নিশ্চিত করেছে।
চীন ও ইউরোপের মহাকাশ বিজ্ঞানীরা আগে থেকেই ধারণা করছিলেন,সোমবার নাগাদ মহাকাশ কেন্দ্রটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে। তবে এর সঠিক সময় নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। স্পেস ল্যাবটির সঙ্গে চীনের সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্নও ছিল। ফলে এর পতনের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণও ছিল না।
অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী ব্র্যাড টাকারের বরাতে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে,তিয়ানগং-১ এর অবশিষ্টাংশ তাহিতি’র ১০০ কিলোটার দক্ষিণ-পশ্চিমে পড়েছে।
টাকার বলেন,ক্ষুদ্র অংশ নিশ্চিতভাবেই ভূপৃষ্ঠে পড়েছে। এর ৯০ শতাংশ বায়ুমণ্ডলে পুড়ে যেতে পারে এবং ১০ শতাংশ ভূপৃষ্ঠে পড়েছে,এই অংশের ওজন হবে ৭০০ থেকে ৮০০ কেজি।
ওই স্পেস ল্যাবের আরেকটি নাম হেভেনলি প্যালেস বা স্বর্গীয় প্রসাদ। চীন এই স্পেস ল্যাবটি উৎক্ষেপণ করেছিল ২০১১ সালে। প্রায় আট টন ওজন ও ১০ দশমিক ৩ মিটার দীর্ঘ এই মহাকাশ গবেষণাগারে অল্প কিছু দিনের জন্য মানুষ যেতে পারতো।২০১২ সালে একজন নারী নভোচারী গিয়েছিলেন সেখানে। সেখান থেকে ওয়াং ইয়াপিং নামের ওই নারী নভোচারী স্কুল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে সরাসরি বক্তৃতা্রও দেন।
তবে ২০১৬ সালের মার্চ থেকেই ওই স্পেস ল্যাবের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বলে চিনের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল।
এর আগে ১৯৭৯ সালে নাসার স্পেস স্টেশন স্কাইল্যাব ভেঙে পড়েছিল। আর ২০০১ সালে ভেঙে পড়েছিল রাশিয়ার ১৩৫ টন ওজনের মির স্টেশন।
