ত্রিপক্ষীয় চুক্তি রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র

মিয়ানমারের হত্যাযোগ্যে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ঢল

সংরক্ষিত ছবি

জাতীয়

স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবি টিআইবির

ত্রিপক্ষীয় চুক্তি রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১০ জুলাই, ২০১৮

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রশ্নে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ ধরনের চুক্তি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনাকে পদদলিত করে তাদের চিরতরে বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে সংস্থাটি। এর আগে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে মিয়ানমার সরকার-জাতিসংঘ-ইউএনডিপি-ইউএনএইচসিআরের মধ্যে সম্পাদিত গোপন সমঝোতা স্মারকের সংবাদ প্রকাশিত হয়।

এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বিবৃতিতে বলেন, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফাঁস হওয়া তথ্যমতে উল্লিখিত সমঝোতা স্মারক রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির পূর্বশর্ত হিসেবে নিজ দেশে স্বাধীনভাবে চলাচল ও ‘মিয়ানমারের স্বাধীন নাগরিক’ হিসেবে তাদের অধিকার লাভের দীর্ঘদিনের ন্যায্য দাবির সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে এই গোপন সমঝোতার পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশ না করায় প্রত্যাবাসনসহ সার্বিকভাবে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ, বিশেষ করে সেনাবাহিনীর নির্যাতন বিষয়ে জাতিসংঘের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, যা মিয়ানমারে মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াং লি’র সাম্প্রতিক বক্তব্যেও প্রতিফলিত হয়েছে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরো বলেন, সম্পাদিত এই গোপন সমঝোতা স্মারক এবং তা প্রকাশে গড়িমসি সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সফরে জাতিসংঘ মহাসচিবের দেওয়া বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও পরস্পরবিরোধী। যেখানে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের আদি নিবাসী উল্লেখ করে অনুকূল পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে তাদের যথাযোগ্য মর্যাদায় ফিরিয়ে নেওয়ার এবং সংঘটিত অপরাধের বিচার করার কথা, সেখানে এই ধরনের স্ববিরোধী ও নীতিবিবর্জিত গোপন সমঝোতা কার্যত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে জাতিসংঘেরই ব্যর্থতা ছাড়া কিছু নয়। এ সমঝোতা মানবাধিকার সুরক্ষায় জাতিসংঘের আন্তরিকতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।

সম্প্রতি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের বেশ আগেই তাদের ওপর নির্যাতন ও গণহত্যা সংঘটিত হতে যাওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়ে আগাম একটি বিশেষজ্ঞ প্রতিবেদন জাতিসংঘের মিয়ানমার মিশন কর্তৃক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা সঙ্কটের মতো জাতিগত নিধনসহ মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে পর্যাপ্ত সুযোগের সদ্ব্যবহার না করে নীরব দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ থেকে বরং বাস্তবে নির্যাতিত জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা কার্যক্রমকে পুঁজি করে অর্থ সহায়তার সুবিধা অন্বেষণ জাতিসংঘের উদ্দেশ্য কি না এ প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। জাতিসংঘের উচিত এসব প্রশ্নের উত্তরসহ মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পাদিত সমঝোতা স্মাবকের পূর্ণাঙ্গ তথ্য ও ইতঃপূর্বে গোপনকৃত বিশেষজ্ঞ প্রতিবেদন অবিলম্বে প্রকাশ করা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads