তদন্ত ও মামলার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সংরক্ষিত ছবি

সরকার

তদন্ত ও মামলার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৪ জুলাই, ২০১৮

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা উধাওয়ের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ঘটনায় পেট্রোবাংলাকে মামলা করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।

কয়লার অভাবে বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন গত রোববার রাতে বন্ধ হয়ে গেছে। ক্ষমতার অপব্যবহার, জালিয়াতি, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ১ লাখ ১৬ হাজার টন কয়লা খোলাবাজারে বিক্রি করে আনুমানিক ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে গতকাল ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস উদযাপন ও জনপ্রশাসন পদক বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে যান। সেখানে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী, সচিব, পিডিবি ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠকে করেন তিনি। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘উনি (প্রধানমন্ত্রী) পূর্ণ তদন্ত করতে বলেছেন। কারণ ঘটনাটা হয়ে আসছে প্রায় ২০০৫ সাল থেকে। আমরা পুরো কাজে নেমেছি।’

প্রধানমন্ত্রী কি এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ- এক সাংবাদিকের এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই, উনি তো আমার মন্ত্রী, এই বিভাগের মন্ত্রী।’ প্রতিমন্ত্রীর আগে পিডিবির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ বিদ্যুৎ ভবনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মানুষের যেন ভোগান্তি কম হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে।’

খনির কোল ইয়ার্ড থেকে কয়লা উধাওয়ের ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির শীর্ষ পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রতিমন্ত্রীও কয়লাখনির কর্মকর্তাদের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘দুই মাস আগে থেকেই বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে বলা হচ্ছিল যে, আমাদের কয়লার সঙ্কট চলছে। কিন্তু ওখানকার প্রধান প্রকৌশলী বলছিলেন, না কোনো সঙ্কট নেই। তখন বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে তদন্তদল পাঠানোর পর তথ্যটা উদ্ঘাটন হলো।’

দোষীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যেই তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে কেস করার জন্য। তদন্ত চলবে। শাস্তি পাবে। এটা তো একদিনে হয়নি। এটা বহুদিনের ব্যাপার।’ পেট্রোবাংলার তদারকিতে কোনো সমস্যা ছিল কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বলব, অবশ্যই সমস্যা ছিল। পেট্রোবাংলার অধীনের কোম্পানি। ওভারঅল তার মনিটরিং তো থাকতেই হবে।’

পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা : ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ থাকায় রংপুর বিভাগের আট জেলা বিদ্যুৎ সঙ্কটে পড়েছে। এ থেকে উত্তরণের বিকল্প পথ খুঁজছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। প্রতিমন্ত্রী জানান, উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুতের অবস্থা স্বাভাবিক হতে আরো মাসখানেক সময় লাগবে।

শিফট পরিবর্তন করে আগস্টের শেষে নতুন করে কয়লা উত্তোলন শুরু হলে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পুনরায় চালু হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। ‘সাময়িক’ ভোগান্তির জন্য ক্ষমা চেয়ে নসরুল বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিভাগ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। একটা মাস ধৈর্য ধরার জন্য আমি সবার কাছে অনুরোধ করছি।’

রংপুর বিভাগের আট জেলায় প্রতিদিন ৬৫০ মেগওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। আপাতত সিরাজগঞ্জের কেন্দ্রগুলো থেকে রংপুরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়িয়ে সেখানকার পরিস্থিতি ‘কিছুটা’ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। পিডিবির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘কয়লা ছাড়াও কীভাবে সিস্টেমটাকে ঠিক রাখতে পারি, সে চেষ্টাই করছি আমরা।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads