জাতীয়

ডিসিদের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সরকারের না

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৯ জানুয়ারি, ২০২২

স্থানীয় প্রকল্প বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকদের সংযুক্ত করে কমিটি গঠনে জেলা প্রশাসকদের দেওয়া প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে সরকার। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে গতকাল মঙ্গলবার ডিসি সম্মেলনে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিষয়ের আলোচনা পর্বে এই প্রস্তাব নাকচ হয়েছে।

স্থানীয় প্রকল্প বাস্তবায়নে নিজেদের সংযুক্ত করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেন জেলা প্রশাসকরা। এই প্রস্তাব নাকচ করে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এই কমিটি গঠনের প্রয়োজন নেই। সরকারি একটি প্রকল্পের সার্বিক বাস্তবায়ন বিষয়ে পরিবীক্ষণ ক্ষমতা ইতিমধ্যে আইনিভাবে দেওয়া আছে। ডিসিরা তাদের সেই আইনি ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন।

তিনি আরো বলেন, তা ছাড়া যে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা প্রশাসকদের সঙ্গে আলোচনা করেই করে থাকেন। কোনো ক্ষেত্রে এর ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক মন্ত্রণালয়কে জানালে সে বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নেব।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে জেলা প্রশাসকদের এম এ মান্নান বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়ন গুণগতমান রক্ষা ও সময়মতো বাস্তবায়নে সরকারের গুরুত্ব সর্বাধিক। এ লক্ষে আগামী দিনে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) দাপ্তরিক কার্যালয় সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে বিভাগীয় জেলা শহরগুলোতে আইএমইডি অফিস স্থাপন করা হবে। পর্যায়ক্রমে তা সারা দেশে নিয়ে যাওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান জানান, মাঠপর্যায়ে যারা কাজ করেন তাদের গুরুত্ব আছে। তারা কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন। সেগুলো সাধারণভাবে আলোচনা হয়েছে। যেগুলো গ্রহণযোগ্য তা গ্রহণ করা হয়েছে। বাকি প্রস্তাবগুলো সাধারণ আলোচনা হিসেবেই গণ্য হবে।

প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রস্তাবিত কমিটিতে ডিসিদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি প্রত্যাখ্যান বিষয়েও কথা বলেন মসিউর রহমান। তিনি বলেন, দেশে এমন কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা হয় না, যেখানে কোনো জনকল্যাণ নেই। ছোট-বড় সব প্রকল্প গ্রহণ করার আগে স্থানীয়ভাবে মতামত নেওয়া হয়। সেখানে জেলা প্রশাসকসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তাদের মতামত দেন। তাই কমিটি গঠন বিষয়ে আলোচনায় কোনো গুরুত্ব পায়নি। যেহেতু একটি প্রস্তাব উঠেছে, তাই ভবিষ্যতে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমরা আরো বেশি করে স্থানীয় পর্যায়ে সম্পৃক্ত হওয়ার চেষ্টা করব।

জেলা প্রশাসক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে অভ্যন্তরীণ সম্পদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, অর্থ বিভাগ, পরিসংখ্যান বিভাগ এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিষয় সামনে রেখে নানা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন। ডিসি সম্মেলন মোট অধিবেশন হবে ২৫টি। এর মধ্যে কার্য অধিবেশন রয়েছে ২১টি। এতে ৫৫টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা অংশ নিচ্ছে।

এসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে সম্মেলনে ২৬৩টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। বেশিসংখ্যক প্রস্তাব ভূমি মন্ত্রণালয়ের, ১৮টি। এ ছাড়া সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ১৬টি, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৪টি, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ১২টি এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের ১০টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে।

মাঠপর্যায়ের কর্ম সম্পাদনে জেলা প্রশাসকরা যেসব আইনগত, প্রশাসনিক, আর্থিক কিংবা অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছেন, সেসবের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট জেলায় বিদ্যমান সম্ভাবনা সম্মেলনের মাধ্যমে সরাসরি তুলে ধরা হবে। এরপর সম্মিলিত আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাব্য সুযোগগুলো কাজে লাগানোর উপায় খুঁজে বের করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads