স্মার্টফোনের যুগে মানুষের অনেক কাজকে সহজ ও ঝামেলামুক্ত করার ক্ষেত্রে নানা ধরনের অ্যাপ্লিকেশন বা অ্যাপের ভূমিকা অসামান্য। হোটেলে খাবার অর্ডার করা থেকে শুরু করে শহরের পাবলিক টয়লেট খুঁজে নেওয়ার কাজও অনেক সহজ করে দিয়েছে বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমের অ্যাপ। আবার এসব অ্যাপ ব্যবহারের যে কিছু কুফল আছে সেটিও সবার জানা।
অনেক ব্যবহারকারী নিজের ডিভাইস থেকে তথ্য চুরি হওয়ার ভয় কিংবা নিজের অবস্থান জানানোর অস্বস্তিতে ভোগেন। ওয়েব দুনিয়ায় নিজের বিচরণ অনুসরণ করা হচ্ছে কি না তা নিয়েও ভয়ে থাকেন কেউ কেউ।
তবে ব্যবহারকারী এই ঝুঁকির বিষয়গুলোর জন্য নিজেই অনেকটা দায়ী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। রাশিয়াভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ক্যাসপারেস্কি ল্যাবের এক গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, স্মার্টফোনে ইনস্টল করা অ্যাপের প্রবেশাধিকার আছে কোন কোন জায়গায় তা ৪৭ শতাংশ ব্যবহারকারীই পড়ে দেখেন না। আর ডাউনলোড করে ইনস্টল করার সময় অ্যাপ থেকে চাওয়া শর্তগুলোও পড়ে দেখেন না ২১ শতাংশ ব্যবহারকারী।
এ ব্যাপারে ক্যাসপারেস্কি ল্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট (প্রোডাক্ট মার্কেটিং) দিমিত্রি অ্যালেশিন বলেন, সব কাজের জন্যই আমরা অ্যাপ ব্যবহার করি। রেস্টুরেন্ট বুকিং থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার অনেক কাজেই আমরা অ্যাপের সাহায্য নিই। কিন্তু তার মানে এই নয়, অ্যাপগুলোর প্রতি আমাদের বিশ্বাস আছে। তিনি বলেন, অ্যাপগুলো যে ব্যবহারকারীদের অনলাইনের কার্যক্রম অনুসরণ করে থাকে সে ব্যাপারে অনেকেই সচেতন। কিন্তু এটি ঠেকানোর জন্য তারা যথাযথ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
ক্যাসপারেস্কি ল্যাবের গবেষণাটিতে জানা গেছে, ৮৩ শতাংশ অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ স্পর্শকাতর তথ্য নেওয়ার সুযোগ পায় এবং ৯৬ শতাংশ অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ চালু হয় ব্যবহারকারীর অজান্তেই।
আর এসব কারণেই অনলাইনে নিজের অবস্থান জানাতে অস্বস্তি বোধ করেন ৬১ শতাংশ অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী। এ ছাড়া ৫৬ শতাংশ ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, ওয়েব দুনিয়ার কোথায় কোথায় তারা ঢু মারছেন তা অনুসরণ করা হচ্ছে কি না তা নিয়ে তাদের ভয় রয়েছে। আর ৫০ শতাংশ ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, কেউ তাদের অবস্থান শনাক্ত করছে কি না তা নিয়ে ভয় রয়েছে তাদের।
অথচ ফোনে ইনস্টল করা অ্যাপের কিসে কিসে অ্যাক্সেস আছে তা পড়ে দেখেন না অর্ধেক ব্যবহারকারীই। ইনস্টল করার সময় অ্যাপের শর্তগুলো পড়েন না প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ব্যবহারকারী। তার মানে এসব ব্যবহারকারী নিজেরাই অনেক তথ্য চুরি হওয়ার বিষয়ে সহায়তা করছেন নিজেদের অজান্তেই।