ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য প্রণীত হলো ই-গভর্নমেন্ট মাস্টার প্লান

‘ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ই-গভর্নমেন্ট মাস্টার প্ল্যান’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিরা

সংগৃহীত ছবি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য প্রণীত হলো ই-গভর্নমেন্ট মাস্টার প্লান

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৬ অক্টোবর, ২০১৮

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে চলতি বছর জাতিসংঘের ই-গভর্নমেন্ট জরিপে ১৫০তম স্থান থেকে ১১৫তম অবস্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশ। তবে আগামী ২০২১ সালের মধ্যে এই ই-গভার্নেন্স সূচকে সেরা ১০০-তে বাংলাদেশ ঠাঁই করে নেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

তিনি বলেন, আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ই-গভার্নেন্স র‌্যাঙ্কিংয়ে আমাদের দুই ডিজিটে আসতে হবে। আমরা এই অবস্থানে আসতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছি। এখন এটাই আমাদের লক্ষ্য।

গতকাল বৃহস্পতিবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল মিলনায়তনে আয়োজিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ই-গভর্নমেন্ট মাস্টার প্ল্যান’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এই চুক্তি হস্তান্তর অনুষ্ঠানেই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ই-গভর্নমেন্ট মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন’ প্রকল্পের খসড়া চূড়ান্ত করেছে। এ কাজে তাদের সহযোগিতা করছে কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো অপারেশন এজেন্সি (কোইকা)।

অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তরুণ প্রজন্মকে ডিজিটাল কার্যক্রমে প্রশিক্ষণ দিয়ে সাবলম্বী করতে সারা বাংলাদেশে ২৮টি আইটি পার্কে প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত করেছে সরকার। আগামী বছর এসব প্রশিক্ষণের শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে অন্তত এক হাজার শিক্ষার্থী ‘ডিজিটাল ইকোনমি’তে অবদান রাখবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতর ২০২১ সালের মধ্যে ২০ লাখ তরুণের কর্ম সংস্থানের সুযোগ করে দেবে। ইন্টারনেট পেনিট্রেন ৬৫ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশে উন্নীত হবে সেই বছরের মধ্যে। আর সরকারি সেবাগুলোর ৯০ শতাংশ যেন অনলাইনেই পেতে পারে জনগণ, সে লক্ষ্যে কাজ করতে নির্দেশনাও দিয়েছেন পলক।

ই-গভার্নমেন্ট মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে তিনটি মুখ্য বিষয়ের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন পলক বলেন, ই-গভার্নমেন্ট মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে তিনটি মুখ্য বিষয় হলো, ভেরিফায়াবল ডিজিটাল আইডেন্টিটি, ইন্টার পেয়েবল প্ল্যাটফর্ম, ন্যাশনাল এন্টারপ্রাইজ আর্কিটেকচার। এখন আমরা স্মার্টকার্ড দিচ্ছি, নাগরিকদের সমস্ত তথ্য এখন একটি ডাটাবেইসে রাখছি। কারো পাসপোর্ট করতে গেলে সেই ডেটাবেইস থেকে তথ্য যাচাই করতে পারে কর্তৃপক্ষ। নাগরিকদের জন্য যে সেবাগুলো আমরা দেব, তার মূল্য পরিশোধের সুযোগ থাকা উচিত অনলাইনে। নয়তো সব উদ্যোগ ভেস্তে যাবে।

তিনি আরো বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন ও ইনফো সরকার প্রকল্পের আওতায় সরকার যখন ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিচ্ছে, তখন উপকারভোগীদের ‘ডিজিটাল নেটিভস’, ‘অ্যাডাপ্টার’, আউটলেয়ারস’ এই তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে নিয়ে তাদের জন্য আলাদা করে উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেন পলক।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০০০ সালের পরে যে তরুণরা জন্মেছে, তারা বেড়ে উঠেছে তারা হলো ডিজিটাল নেটিভস। আমরা অ্যানালগ যুগে জন্মে এখন ইন্টারনেট ব্যবহার শিখেছি, আমরা অ্যাডাপ্টার। আর যারা ইন্টারনেটের ব্যবহার একেবারেই জানে না, তারা আউটলেয়ারস। এই তিনটি ক্যাটাগরির মানুষ সবাই যেন আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফলগুলো ভোগ করতে পারে, সেভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে ই-গভার্নমেন্ট মাস্টার প্ল্যান।

সভাপতির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব জুয়েনা আজিজ বলেন, বর্তমানে আমাদের ই-গভর্নমেন্ট সম্পর্কিত কার্যক্রমের জন্য কোনো আইন নেই। ই-গভর্নমেন্ট সংক্রান্ত প্রকল্পটি কার্যকর করার জন্য আমাদের এ ধরনের আইন দরকার। আমি শুনেছি যে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ একটি ই-গভর্নমেন্ট সম্পর্কিত আইন প্রণয়ন করছে যেখানে কোরিয়ানদের ই-গভর্নমেন্ট বাস্তবায়ন অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

জুয়েনা আজিজের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন কোইকার কান্ট্রি ডিরেক্টর জো হেন জু ও কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক মনির হোসেন।

প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্ক বিভাগ (ইউএনডেসা) পরিচালিত ই-সরকার ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স (ইজিডিআই) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশ ০.৪৭৬৩ পয়েন্ট পেয়ে এবং গত দুই জরিপে ৩৫ ধাপ এগিয়ে ১৯৩টি দেশের মধ্যে ১১৫তম স্থানে অবস্থান করে নিয়েছে। ২০১৬ সালের জরিপে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২৪তম, ২০১৪ সালে ১৪৮তম ও ২০১২ সালে অবস্থান ছিল ১৫০তম।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads