ডিজিটাল কমার্স নীতিমালার অনুমোদন দিল মন্ত্রিসভা

বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ই-কমার্স অনেক এগিয়ে গেছে

সংরক্ষিত ছবি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ডিজিটাল কমার্স নীতিমালার অনুমোদন দিল মন্ত্রিসভা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৭ জুলাই, ২০১৮

ই-কমার্সের বাজার সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা-২০১৮ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার মন্ত্রিপরিষদ সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

জানা যায়, ডিজিটাল কমার্স ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং ক্রেতা-বিক্রেতার স্বার্থসংরক্ষণে নীতিগত ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গঠন তৈরিই এ ডিজিটাল কমার্স নীতিমালার মূল উদ্দেশ্য।

পাশাপাশি এ নীতিমালায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি ডিজিটাল কমার্স ব্যবসায়ীদের ব্যবসা প্রসারের লক্ষ্যে সহজশর্তে ঋণ এবং প্রান্তিক পর্যায়ে ব্যবসা প্রসারের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ সৃষ্টির ব্যাপারেও গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। আর নীতিমালার কারণে, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ডিজিটাল কমার্স সম্পর্কিত সচেতনতা এবং এ খাতের অংশীজনদের মধ্যে পারস্পরিক ভারসাম্যও তৈরি হবে।

ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা নিয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘এটা আমার অনেক দিনের যুদ্ধ ছিল। আজ তা বাস্তবায়ন হয়েছে, এতে আমি অনেক আনন্দিত। আর এ জন্য আমি অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতে চাই। কারণ, তার হস্তক্ষেপেই এই ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা অনুমোদন করা সম্ভব হয়েছে।’

এই নীতিমালার একটি অংশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের সহজশর্তে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়গুলোয় তো অবশ্যই জটিলতা বিরাজ করে। আর এ জটিলতা কমানোর জন্যই আমরা বিষয়টিকে সহজ করেছি। যেমন- এত দিন শুধু আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ সহায়তা করেছে। তবে আমরা কিন্তু এখন সেই জায়গাটা অতিক্রম করেছি।’

মন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের অধীনেই আইডিয়া নামের একটি প্রকল্প আছে। সেখান থেকে আমরা ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে মঞ্জুরি থেকে শুরু করে ঋণ দেওয়া পর্যন্ত সবকিছু দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছি।’

মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক অথবা বাণিজ্যিক মন্ত্রণালয় থেকে একটা তহবিল গঠন করা যেতে পারে এবং তাদের মাধ্যমেও ঋণ দেওয়া যেতে পারে। যদিও এসব ছোটখাটো ক্ষেত্রে এসএমই ফাউন্ডেশন উদ্যোগ নিতে পারে। যেহেতু আমরা নীতিমালা অনুমোদন দিয়েছি, সেহেতু আমাদেরই উদ্যোগ নিতে হবে এটা কীভাবে ফাংশনাল করা যায়।’

এদিকে ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা-২০১৮ অনুমোদিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে অভিনন্দন জানিয়ে সফটওয়্যার-রফতানি আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা আমাদের অগ্রসরমান ই-কমার্স খাতকে সুসংহত করবে।

তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ই-কমার্স অনেক এগিয়ে গেছে। অনেক বৈশ্বিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান উপমহাদেশের ব্যবসা পরিচালনা শুরু করেছে। আমাদের স্থানীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো নীতিমালার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন হলে দেশের উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’

এ প্রসঙ্গে বেসিস ডিজিটাল কমার্স স্থায়ী কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ ও বেসিস পরিচালক দিদারুল আলম বলেন, ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা পাস হওয়ায়, এ খাতের উন্নয়নে অগ্রাধিকার নিশ্চিত হলো। বেসিস দীর্ঘদিন ধরেই ই-কমার্স খাতের উন্নয়নে কাজ করে চলেছে, যা এ নীতিমালা প্রণয়নের কারণে আরো বেগবান হবে।

নতুন এই নীতিমালা নিয়ে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) মহাসচিব আবদুল ওয়াহেদ তমাল বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘এটা বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় একটি প্রাপ্তি, আমাদের জন্য অনেক বড় একটি সংবাদ।’

তিনি আরো বলেন, জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নের জন্য সরকারের কাছে দুই বছর আগেই ই-ক্যাব থেকে আমরা প্রস্তাব দেই। এরপর এ বিষয়ে ৩০টিরও বেশি ওয়ার্কশপ আয়োজন করা হয় ই-ক্যাব থেকে। পরে এই ডিজিটাল কমার্স নীতিমালার খসড়া তৈরির জন্য তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়। যার আহ্বায়ক করা হয়েছিল আমাকে। পাশাপাশি কমিটিতে বেসিস, বাক্যসহ আরো কিছু সংগঠনের অনেক প্রতিনিধি ছিলেন।

তিনি আরো বলেন, এই নীতিমালা বাস্তবায়নের ফলে স্থানীয় উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা অনেক উপকৃত হবেন। এ ছাড়া আন্তঃদেশীয় বাণিজ্যের মধ্যেও অনেক বড় পরিবর্তন আসবে। ক্রসবর্ডার ই-কমার্স, রুরাল ই-কমার্স, পেমেন্ট গেটওয়েসহ সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো মাথায় রেখেই এই নীতিমালা তৈরিতে কাজ করেছিলাম।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads