শেষ পর্যন্ত টেসলা চেয়ারম্যানের পদ ছাড়তে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ককে। একই সঙ্গে তাকে গুনতে হচ্ছে বেশ বড় অঙ্কের জরিমানা। মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) গত বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে জালিয়াতি মামলা করার পরে পদ ছাড়তে এক প্রকার বাধ্যই হচ্ছেন প্রযুক্তির বরপুত্র খ্যাত এই তরুণ উদ্যোক্তা।
বিবিসির এক খবরে জানানো হয়েছে, টেসলা চেয়ারম্যানের পদ ছাড়তে ৪৫ দিন সময় পাচ্ছেন তিনি। আর এই সময়ের মধ্যে তাকে জরিমানা হিসেবে গুনতে হবে প্রায় দুই কোটি মার্কিন ডলার। তবে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী প্রধানের পদে থাকতে তাকে আর কোনো বাধার মুখে পড়তে হবে না।
খবরে বলা হয়েছে, গত শনিবার মাস্কের জালিয়াতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেছে এসইসি। আগস্ট মাসের ৭ তারিখ এক টুইট বার্তার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করার দায়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। টুইটে মাস্ক বলেন, ৪২০ মার্কিন ডলার শেয়ার মূল্যে টেসলাকে প্রাইভেট করা হচ্ছে এবং এ জন্য তহবিল সংগ্রহ হয়েছে। এসইসির দাবি এই টুইটের কোনো ভিত্তি নেই এবং এতে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলায় বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয়েছে।
কমিশন বলেছে, একজন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান ও দুজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিতে হবে টেসলাকে। এ ছাড়া মাস্কের যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ করতে একটি বোর্ড কমিটিও গঠন করতে বলা হয়েছে।
মাস্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার সময় তাকে প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদ থেকে সরানোর দাবি করেছিল এসইসি। অনেক বিনিয়োগকারী এই সিদ্ধান্তকে প্রতিষ্ঠানের জন্য ধ্বংসাত্মক হবে মনে করায় পরে এই দাবি থেকে সরে আসে সংস্থাটি।
টাইগ্রেস ফিনান্সিয়াল পার্টনার্সের ইভান ফেইনসেথ বলেন, আমি মনে করি সংশ্লিষ্ট সবার জন্য এটিই সম্ভাব্য সবচেয়ে ভালো সমাধান। এসইসির এই শাস্তিকে মাস্কের জন্য ‘কব্জিতে হালকা চড় দেওয়ার’ মতো মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, বিষয়টা হচ্ছে তিনি প্রধান নির্বাহী থাকতে পারবেন, যা প্রতিষ্ঠানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
টেসলার বিরুদ্ধে তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণ আর মাস্কের টুইট প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ এনেছে এসইসি। এসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়, মাস্কের টুইটে যেসব তথ্য দেওয়া হবে তা প্রাতিষ্ঠানিকে নথিতে অবশ্যই থাকবে কি না বা এই টুইটগুলোতে সম্পূর্ণ ও সঠিক তথ্য থাকে কি না তা যাচাই করার কোনো পথ প্রতিষ্ঠানটির হাতে নেই।
শুক্রবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়, এর আগে এসইসির সঙ্গে একটি মীমাংসার শেষ মুহূর্তে মাস্ক সরে আসেন। ওই মীমাংসায় তাকে দুই বছর প্রতিষ্ঠানটির বিশেষ কিছু দায়িত্ব থেকে সরে যেতে ও নামমাত্র জরিমানা পরিশোধ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি আদালতে লড়াইয়ের জন্য তৈরি ছিলেন।
এই পদে কাকে আনা হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। আর এই সম্পর্কে টেসলা বা মাস্ক কারো পক্ষ থেকেই কোনো বক্তব্য আসেনি।