কুড়িগ্রামে টার্কি মুরগি পালন বাড়ছে। খামারের পাশাপাশি বাড়ির উঠানেও এই মুরগি পালনের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। রোগবালাইয়ের প্রার্দুভাব থাকলেও শঙ্কায় নেই খামারিরা। সাফল্য নিশ্চয়তায় টার্কিতেই ঝুঁকছে বেকার যুবকরা। টার্কিতেই স্বপ্ন দেখছে উত্তরাঞ্চলের দরিদ্রখ্যাত জেলা কুড়িগ্রামের হাজারো বেকার যুবক। টার্কির রোগ, খাদ্য, বাসস্থানের জন্য বেশি অর্থ খাটানোর প্রয়োজন হয় না। সহজ শর্তে ঋণ, কারিগরি সহযোগিতা আর উন্নত প্রশিক্ষণ পেলে পোল্ট্রির মতো টার্কি উৎপাদনে কুড়িগ্রাম বিপ্লব ঘটাতে পারে। উৎপাদন ক্ষমতা যেমন বেশি, তেমনি টার্কির মাংস খেতেও সুস্বাদু। টার্কি পালনে ব্যাপক বাণিজ্যিক সম্ভাবনা রয়েছে, এমনটাই জানালেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
কুড়িগ্রাম জেলায় টার্কি পালন খামারিদের মধ্যে সফল উদ্যোক্তা কৃষ্ণপুর এলাকার মো. রিপন সরকার। তিনি পেশায় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। তিনি ইন্টারনেট ঘেঁটে গত বছর ৪০০টি টার্কির বাচ্চা নিয়ে শুরু করেন খামার। বর্তমানে তার খামারে ছোট-বড় ৮০০ টার্কি রয়েছে। এর মধ্যে ২০০টি ডিম দিচ্ছে। প্রতি হালি ডিম বিক্রি করছেন গড়ে ১ হাজার টাকায়, বাচ্চা বিক্রি করছেন প্রায় দেড় হাজার টাকা জোড়া। তিনি বলেন, টার্কি পালনের মাধ্যমে কুড়িগ্রামের বেকার সমস্যা নিরসন এবং অর্থনৈতিক চিত্র পাল্টানো সম্ভব। কারণ টার্কিতে রোগবালাইয়ের প্রার্দুভাব নেই বললেই চলে। যা ইনভেস্ট তার দ্বিগুণ লাভ। কুড়িগ্রাম শহরের বেকার যুবক খামারি কুদ্দুস আলম বলেন, প্রতি মাসে তিনি কমপক্ষে ১ লাখ টাকার টার্কি বিক্রি করেন। এতে লাভ থাকে ৫০-৬০ হাজার টাকা। কারণ টার্কিকে কেনা খাদ্য দিতে হয় না। সাধারণ ঘাস, লতাপাতা, সবজি দিয়েই চলে।
খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অন্যান্য মুরগির মাংসের তুলনায় টার্কির মাংস সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। গরু ও খাসির মাংসের তুলনায় চর্বির পরিমাণ অনেক কম। তা ছাড়া এ জাতের মুরগি পালনে ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই। দেশি জাতের মুরগির মতোই খোলামেলাভাবে পালন করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা জানান, অন্যান্য মুরগির খামারের তুলনায় টার্কি পালনে খাবারে ৫০ শতাংশ, বিদ্যুতে ৯০ শতাংশ খরচ কম। টার্কি খামারে স্বল্প বিনিয়োগ, কম ঝুঁকিতে দ্রুত সময়ে ভালো মুনাফা অর্জন করা যায়। টার্কি পালনে হতদরিদ্র কুড়িগ্রামের বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে মাংসের চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে।