‘ঘরের ইঁদুর মাঠের ইঁদুর ধ্বংস করে অন্ন, সবাই মিলে ইঁদুর মারি ফসল রক্ষার জন্য’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারা দেশেই বছরব্যাপী চলেছে জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযান। এই ইঁদুর নিধন অভিযানের অংশ হিসেবে শেরপুরের সদরসহ জেলার নকলা, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদীর এই পাঁচ উপজেলায় চলছে এ কার্যক্রম। এরমধ্যে নকলার বানেশ্বরদী ইউনিয়নের ভূরদী খন্দকারপাড়া কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার সদস্যরা গত ১৬ মাসে ১৬ হাজার ৬৫৪টি ইঁদুর মেরে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন।
বানেশ্বরদী ইউনিয়নের ভূরদী খন্দকারপাড়া কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার কৃষকরা জানান, দিনের অন্তত দুই ঘন্টা ইঁদুর নিধনে সময় দেন তারা। গত বছরের (২০১৭ সালে) একটি দৈনিক পত্রিকা মারফত জানতে পারেন, কোন এক কৃষক সংগঠন সর্বোচ্চ সংখ্যক ইঁদুর মেরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কর্তৃক পুরস্কৃত হয়েছে। এটা দেখেই তারা উদ্বুদ্ধ হন। পরবর্তীতে তাদের সংস্থার সাপ্তাহিক সভায় ইঁদুর নিধনের জন্য সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় ইঁদুর নিধন কার্যক্রম। ইঁদুর নিধনে তারা জেলায় রেকর্ড গড়তে চান। সংস্থার রেজিস্ট্রার খাতার তথ্যসূত্রে জানা যায়, গত বছরের (২০১৭ সালের) আগষ্ট মাস থেকে ভূরদী খন্দকারপাড়া কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার সদস্যরা ইঁদুর নিধন কার্যক্রম শুরু করে। সে হিসাবে চলতি বছরের নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৬৫৪টি ইঁদুর মেরেছেন।
ওই সংস্থার সদস্য কৃষক হাসমত আলী, রেজাউল করিম, জরিনা আক্তার, কিসলু শেখ ও আহম্মদ মিয়া বলেন, তাদের ইঁদুর নিধন কার্যক্রম দেখে স্থানীয় অনেকেই নিজ থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে ইঁদুর নিধনের কাজে অংশ নিয়েছেন। ভুরদী খন্দকারপাড়া কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার সাবেক সভাপতি মোশারফ হোসেন জানান, এই বিপুল পরিমাণ ইঁদুর নিধন কার্যক্রম জনমনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ভুরদী খন্দকারপাড়া কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার বছরব্যাপী ইঁদুর নিধন অভিযানের উদ্যোগটি প্রশংসনীয় জানিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস বলেন, তাদের দেখাদেখি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিষ্ঠিত কৃষক সংগঠনের সদস্যরাও ইঁদুর নিধনের কাজ হাতে দিয়েছেন। তাই এই কাজটিকে আরো বেগবান করতে ইঁদুর নিধনের জন্য ওই কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার কৃষকদেরসহ উপজেলার অন্যান্য কৃষকদের মাঝে ইঁদুর মারার যন্ত্র ও বিষ টোপ বিতরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।