বাংলাদেশে শাপলার বিলের অভাব নেই। তবে যারা এই শীতে ঘুরতে পছন্দ করেন আবার শাপলাও দেখতে চান তারা সিলেটের জৈন্তাপুর ঘুরে আসতে পারেন।
এমনিতেই সিলেটের বিলগুলো বেশ নামকরা। জৈন্তাপুর সেরকমই একটি জায়গা। জৈন্তারাজ্যের রাজা রাম সিংহের স্মৃতিবিজড়িত ডিবির হাওর, ইয়াম, হরফকাটা কেন্দ্রী বিলসহ রয়েছে চারটি বিল। বিলগুলোকে কেন্দ্র করেই নাম করা হয়েছে ডিবির হাওর।
রাম সিংহের বিলগুলো এখন রূপ নিয়েছে শাপলার রাজ্যে। বিলে ফুটে থাকে অজস্র লাল শাপলা। প্রকৃতি যেন নিজ হাতে লাল শাপলার হাসিতে মাতিয়ে রেখেছে বিলগুলোকে। শাপলার রাজ্যে বিলগুলো যেন স্বাগত জানাচ্ছে আগত অতিথিদের।
সিলেট থেকে এখানে পৌঁছানো যায় ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই। সিলেট-তামাবিল সড়ক ধরে জৈন্তাপুর বাজার পেরিয়ে একটু এগোলেই হাতের ডানে একটা সাইনবোর্ড চোখে পড়ে যেখানে লেখা ডিবির হাওড় বিশেষ বিজিবি ক্যাম্প।
সেই রাস্তা ধরে এক কি.মি. গেলেই চোখে পড়বে লাখ লাখ শাপলায় ছেয়ে থাকা ডিবির হাওর। জায়গাটা ঠিক বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে। তাই মেঘালয়ের পাহাড়গুলো জায়গাটার সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে বহু গুণ।
ডিবির হাওরে শাপলা থাকে মোটামুটি ৩-৪ মাস। নভেম্বর-জানুয়ারি গেলেই দেখা মিলবে এই অপরূপ সৌন্দর্যের। তবে এজন্য যেতে হবে একদম সকালে। সূর্যের আলো যখন শাপলার গায়ে পড়ে তখন আস্তে আস্তে ফুলগুলোর পাপড়ি বন্ধ হয়ে যায়। লাল শাপলার বিলে এই সময়ে আসতে শুরু করে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি। পাখির কলতানে মুখর থাকে বিলগুলো। হাওরে নৌকায় ঘুরতে পারবেন। গেলে তো অবশ্যই নৌকায় উঠবেনই। ভাড়া নিবে ঘণ্টায় ৩০০ টাকা। এই ভাড়া উপজেলা প্রশাসন থেকে নির্ধারণ করে দেওয়া। মাঝারি সাইজের এক নৌকায় ৭-৮ জন উঠা যায় অনায়াসেই।
বিলের পাশে মেঘালয়, পাহাড়ের নিচে খাসিয়া সম্প্রদায়ের বসবাস। দূর পাহাড়ে দেখা মিলবে খাসিয়াদের পান-সুপারির বাগান।
যেভাবে যাবেন-
সিলেট থেকে সিলেট-তামাবিল রুটে চলাচলকারী বাস/লেগুনায় করে জৈন্তাপুরের একটু পরেই ডিবির হাওর লেখা ফলকের কাছে নামবেন। ভাড়া নেবে জনপ্রতি ৪০-৫০ টাকা। সময় লাগে ১ ঘণ্টার মতো। সিলেট থেকে সিএনজি রিজার্ভ করে নিলে আসা-যাওয়া ভাড়া নেবে ১০০০ টাকার মতো। সারা দিনের জন্য সিএনজি ১৫০০ টাকায় পাওয়া যায়।
তাই আর দেরি কেন? ঘুরে আসুন শাপলার রাজ্যে।