গৃহিণী থেকে পার্লার ব্যবসায়ী ফেরদৌসী আনোয়ার হীরা

পার্লার ব্যবসায়ী ফেরদৌসী আনোয়ার হীরা

সংগৃহীত ছবি

ফিচার

তৃণমূলে নারী উদ্যোক্তা

গৃহিণী থেকে পার্লার ব্যবসায়ী ফেরদৌসী আনোয়ার হীরা

  • প্রকাশিত ২১ অক্টোবর, ২০১৮

এস এম হালিম মন্টু, নড়াইল

ফেরদৌসী আনোয়ার হীরা। গৃহিণী থেকে সফল পার্লার ব্যবসায়ী। ১৯৯৯ সালে সাত্র ১৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে নড়াইলে নিজ বাসায় ছোট পরিসরের পার্লার ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে তিনি নড়াইলের সবচেয়ে বড় পার্লার ব্যবসায়ী। রূপচর্চার সব পণ্য, বুটিকের শাড়ি, থ্রিপিস, নকশিকাঁথা, চাদর বিক্রয়ের পাশাপাশি নিজস্ব বিউটিশিয়ান দিয়ে নড়াইলের সর্ববৃহৎ পার্লার প্রতিষ্ঠান চালিয়ে আসছেন তিনি। শুধু তাই নয়, নারীদের শরীর সুস্থ ও মানানসই শারীরিক গঠন ধরে রাখতে তার রূপকথা বিউটি পার্লারে রয়েছে আধুনিক ব্যামাগারের সব সুযোগসুবিধা।

১৯৮৬ সালে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে শিক্ষাজীবন শেষ করেন ফেরদৌসী আনোয়ার হীরা। নড়াইল চিত্রাবাণী সিনেমা হল মালিক আনোয়ারুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। স্বামী, এক পুত্র ও দুই কন্যা সন্তান নিয়ে পরিপূর্ণভাবে ছিলেন গৃহিণী। ছেলেমেয়ে নিয়ে চলত তার সংসার। ১৯৯৯ সালের দিক তিনি হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেন কিছু করার। কী করবেন-এমনটি ভাবনার এক পর্যায়ে নড়াইল থানা এলাকার নিজ বাসায় মাত্র ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ছোট পরিসরে প্রবর্তনা নামে একটি বিউটি পার্লার খোলেন। নিজে মালিক নিজেই বিউটিশিয়ান হিসেবে কাজ করতেন। আস্তে আস্তে তিনি পরিচিত হতে থাকেন। পরিচিত হতে থাকে তার পার্লারের ব্যবসা।

দেখতে দেখতে ১৮ বছর পেরিয়ে গেছে ফেরদৌসী আনোয়ার হীরার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অভিজ্ঞতার। এ সময় বিউটি পার্লারের কদর বাড়তে থাকে নড়াইলের নারীদের কাছে। তার পার্লারের ব্যবসার সফলতা দিন দিন বাড়তে থাকে। ২০১৩ সালে নড়াইলের বাণিজ্যিক বাজার রূপগঞ্জের ২নং পৌর সুপার মার্কেটের দোতলায় একটি পার্লারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এখানে তিনি চারজন বিউটিশিয়ান নিয়ে বড় পরিসরে নতুন আঙ্গিকে কাজ শুরু করেন। সঙ্গে সংযোজন করেন ব্যামাগারের ব্যবস্থা। এর কিছুদিন পর ভুঁইয়া শপিংমলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে ছয়জন বিউটিশিয়ান নিয়ে ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘রূপকথা বিউটি পার্লার’ গড়ে তোলেন। যেখানে রূপ চর্চার সামগ্রী, নারীদের জন্য বুটিকের শাড়ি, থ্রিপিস, নকশিকাঁথা, চাদর বিক্রির ব্যবস্থাও রয়েছে। তার ব্যবসায় অনুপ্রাণিত হয়ে বর্তমানে নড়াইল জেলা ও উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থানে অনেকে পার্লারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।

ফেরদৌসী আনোয়ার হীরা বলেছেন, লেখাপড়া শিখে বাড়িতে বসে থাকাটা ভালো লাগত না। তাই ভাবছিলাম কিছু করা দরকার। কী করি, ভাবতে গিয়ে পার্লারের ব্যবসার প্রস্তুতি নিই। ১৯৯৯ সালে নিজের বাসাতেই ঘরোয়াভাবে শুরু করি পার্লারের ব্যবসা। নিজেই বিউটিশিয়ানের কাজ করতাম। মাসে এক-দুটি কাজ পেতাম। তখন নড়াইলে আর কোনো পার্লারও ছিল না।

ধীরে ধীরে ব্যবসার পরিচিতি ও পরিধি বাড়তে থাকে। একসময় একা কাজ করে পারতাম না। তাই সহযোগী নিয়ে কাজ করতে থাকি। সেই থেকে আমাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি এখন নড়াইল জেলার সর্ববৃহৎ।

তিনি শিক্ষিত বেকার নারীদের উদ্দেশে বলেন, চাকরি নামের সোনার হরিণের পেছনে ছুটে লাভ নেই। ব্যবসা একটি স্বাধীন পেশা। এ পেশায় নিজেকে স্বাবলম্বী করাসহ আর্থিক সচ্ছলতা আনা সম্ভব। ব্যবসার মাধ্যমে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি সমাজেরও উপকার করা যায়।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads