খালেদার জামিন বাড়ল এক সপ্তাহ

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া

সংরক্ষিত ছবি

অপরাধ

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা

খালেদার জামিন বাড়ল এক সপ্তাহ

* আপিলের শুনানি রোববার * রিভিউ আবেদন স্ট্যান্ডওভার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৩ জুলাই, ২০১৮

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আগামী ১৯ জুলাই পর্যন্ত খালেদা জিয়ার জামিন বাড়িয়েছেন হাইকোর্ট। আগের চার মাসের জামিনের মেয়াদ গতকাল শেষ হওয়ায় নতুন করে তা বাড়ানো হয়। বিচারিক আদালতের দণ্ডাদেশ থেকে খালাস চেয়ে খালেদা জিয়া ও অপর দুই আসামির খালাস চেয়ে করা আপিলেরও শুনানি শুরু হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে এ শুনানি হয়। শুনানিতে খালেদার আইনজীবী আবদুর রেজ্জাক খান আপিলের পেপারবুক থেকে এজাহার ও অভিযোগপত্রের অংশ পড়েছেন। এ অবস্থায় আদালত আগামী রোববার দুপুর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।

গতকাল সকালে এ মামলায় বিএনপিপ্রধানের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে করা আপিল নিষ্পত্তির সময় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ফলে আবেদনটি যেমন আছে তেমন অবস্থায়ই থাকবে।

আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের বলেছেন, শুনানি শুরু করুন। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি সম্ভব না হলে সময় বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করবে সর্বোচ্চ আদালত। সে পর্যন্ত রিভিউ আবেদনটি স্ট্যান্ডওভার থাকবে। সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

আপিল বিভাগে খালেদার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এ জে মোহাম্মদ আলী, মওদুদ আহমদ, জয়নুল আবেদীন ও মাহবুব উদ্দিন খোকন। সরকারপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।

এদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনে গণমাধ্যমকে বলেছেন, সরকার তাড়াহুড়া করে আপিল নিষ্পত্তি করতে চায়। উদ্দেশ্য এ মামলা শেষ করে খালেদা জিয়ার সাজা যেকোনো উপায়ে যাতে বহাল রাখা যায়। কিন্তু, আমরা চাই আইনগত প্রক্রিয়ায় স্বাভাবিকভাবে মামলা শেষ করতে। আমরা প্রত্যেকটা বিষয় উচ্চ আদালতের সামনে তুলে ধরতে চাই।

হাইকোর্টে আপিলের শুনানিতে খালেদার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘পেপারবুকে অনেক তথ্যই আছে। গুরুত্বপূর্ণ কিছু নথি ও কাগজ পেপারবুকে সরবরাহ করা হয়নি। তাই ওইসব নথি ও কাগজ যুক্ত করে একটি সম্পূরক পেপারবুক সরবরাহের আবেদন করছি। আগে এ আবেদনের নিষ্পত্তি করুন।’

আদালত বলেন, ‘আবেদনটি পরবর্তী কার্যদিবসে (রোববার) আসবে। শুনানি শুরু করুন।’

এ সময় দুদকের কৌঁসুলি খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘আপিল বিভাগ বলেছেন শুনানি শুরু করতে। সুতরাং আজই শুনানি শুরু হোক।’

আদালত খালেদার আইনজীবীদের শুনানি শুরু করতে বলেন। পরে খালেদা জিয়ার পক্ষে আবদুর রেজ্জাক খান মামলার এজাহার ও অভিযোগপত্র পড়া শুরু করেন। একপর্যায়ে আদালত আগামী রোববার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। একই সঙ্গে ১৯ জুলাই পর্যন্ত জামিনের মেয়াদ বাড়ান।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরোদ্দোজা বাদল, কায়সার কামাল, মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, একেএম এহসানুর রহমান প্রমুখ।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে গত ২০ ফেব্রুয়ারি আপিল করেন খালেদা জিয়া। দুই দিন পর আপিল গ্রহণ করে বিচারিক আদালতের দেওয়া জরিমানার রায় স্থগিত করেন হাইকোর্ট।

কুমিল্লার দুই মামলার রুলে শুনানি ১৬ জুলাই : এদিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানায় বাসে পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা ও নাশকতার অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে জারি করা রুলের শুনানির দিন আগামী ১৬ জুলাই ধার্য করেছেন হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ।

বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এসএম মজিবুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এই দিন ধার্য করেন।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। সঙ্গে ছিলেন মাসুদ রানা। সরকারপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশির উল্লাহ।

গত ২ জুলাই এই দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে মামলা দুটিতে তাকে কেন জামিন দেওয়া হবে না জানতে চেয়ে জারি করা রুল চার সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী হাইকোর্টে রুল শুনানির জন্য ১০ জুলাই দিন ঠিক করেন। পরে তা পিছিয়ে ১২ জুলাই দিন ধার্য করেন। গতকাল তা আবার পিছিয়ে ১৬ জুলাই করা হলো।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads