খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে ৮০ ভাগ হৃদরোগ কমানো সম্ভব

মানসিক চাপ ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের (খাদ্যাভ্যাস) ফলে সৃষ্টি হয় হৃদরোগ

ছবি : ইন্টারনেট

ফিচার

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে ৮০ ভাগ হৃদরোগ কমানো সম্ভব

  • প্রকাশিত ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

Dr. ayesha siddika

পুষ্টিবিদ আয়শা সিদ্দিকা

প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় সাড়ে ১৭ মিলিয়ন মানুষ হূদরোগে মৃত্যুবরণ করে। অথচ খাদ্যাভ্যাস আর লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে হূদরোগ ৮০ ভাগ পর্যন্ত কমানো সম্ভব। জীবনের সব ধরনের অসুস্থতা মানসিক চাপ ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের (খাদ্যাভ্যাস) ফলে সৃষ্টি হয়। আপনার দৈনন্দিন স্বভাবের পরিবর্তনই আপনার সুস্থ ও প্রাণবন্ত থাকার নিশ্চয়তা দেয়। বিশ্বব্যাপী হূদরোগ সমস্যার জন্য প্রধানত দায়ী অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। জেনে অবাক হবেন, প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় সাড়ে ১৭ মিলিয়ন মানুষ হূদরোগে মৃত্যুবরণ করে। অথচ খাদ্যাভ্যাস আর লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে হূদরোগ শতকরা ৮০ ভাগ পর্যন্ত কমানো সম্ভব।

প্রক্রিয়াজাত করা খাবারের মতো ট্রান্সফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়, যেমন যেসব খাবার ডিম বা প্রাণিজ মাংস থেকে আসে। খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনেই স্বাস্থ্যের ওপর বেশ প্রভাব পড়ে।

আপনি জেনে অবাক হবেন, ফাস্টফুড খাওয়ার ফলে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রক্তের শিরা-উপশিরাগুলো প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয় এবং স্বাভাবিকভাবে শিথিল হওয়ার ক্ষমতা অর্ধেক কমে আসে। আবার উদ্ভিদভিত্তিক খাদ্যাভ্যাস রপ্ত করলে হূদরোগের ফলে যে ক্ষয় হয় তা সেরে ওঠে। যখন কেউ রক্তের শিরা-উপশিরা বন্ধ করে দেওয়ার মতো ক্ষমতাসম্পন্ন খাবার বা জাঙ্ক ফুড খাওয়া বন্ধ করে দেন, তখন তাদের দেহ আরোগ্য লাভ করতে শুরু করে এবং যে প্লাক জমেছিল, তা মিইয়ে যায়।

হূদরোগ প্রতিরোধে প্রতিদিনকার খাবার-শিম এবং মটরশুটিজাতীয় খাবার : প্রতিদিন তিনবার খেতে হবে। বেরি : প্রতিদিন বেশ ভালো পরিমাণে খেতে হবে। অন্যান্য ফল : প্রতিদিন অন্তত তিনবার খেতে হবে।

ক্রসিফেরাস পরিবারের সবজি : ক্রসিফেরাস পরিবারের সবজি বা ফুলকপি, ব্রুকলি, পাতাকপি ইত্যাদি দিনে একবার খেতে হবে। উদ্ভিদভিত্তিক খাদ্যাভ্যাস স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা ফ্রি রেডিক্যালসদের সঙ্গে যুদ্ধ করে। আর ফ্রি রেডিক্যালসরা দেহের ক্ষয় করে।

সবুজ সবজি : প্রতিদিন খেতে হবে দুবার। অন্যান্য সবজি : প্রতিদিন দুবার খেতে হবে। বিটরুটের মতো সবজি নাইট্রেটের বড় উৎস, যা রক্তচাপ কমায় এবং রক্তপ্রবাহ বাড়ায়। ফ্ল্যাক্সসিড/তিসি : এক চা চামচ। ছয় মাস ফ্ল্যাক্সসিড খাওয়ার পর রক্তচাপের রোগীদের রক্তচাপ ব্যাপকভাবে কমে আসতে দেখা গেছে। সালাদ বা স্যুপের সঙ্গেও খাওয়া যায় ফ্ল্যাক্সসিড। বাদাম এবং বীজ : প্রতিদিন অন্তত একমুঠো খান। ভেষজ এবং মশলা : এক চা চামচের চারভাগের একভাগ খেলেই চলবে। পূর্ণ শস্যজাতীয় খাবার : প্রতিদিন অন্তত তিনবার খেতে হবে। জানলে খুশি হবেন, যারা বেশি বেশি পূর্ণ শস্যজাতীয় খাবার খান, তারা অনেকদিন বাঁচেন। কেননা এ-জাতীয় খাবার হূদরোগ, টাইপ টু ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

শরীরচর্চা : প্রতিদিন অন্তত ৯০ মিনিট করতে হবে। আপনি কী খাবার খাচ্ছেন তা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি গুরুত্বপূর্ণ শরীরচর্চা করেছেন কি-না। শুনে হয়তো অদ্ভুত লাগতে পারে কিন্তু সত্যি হলো পুষ্টি এবং শরীরচর্চা হাত ধরাধরি করে চলে। শরীরচর্চা করলে পুষ্টি উপাদানগুলো আরো বেশি কার্যকর হয়।

লেখক : কনসালট্যান্ট, জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল, ঢাকা

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads