শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অর্থায়নের পরিমাণ নয়, বরং সঠিক স্থানে সঠিক মানুষের কাছে অর্থটা পৌঁছানোই বড় কথা। কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই আমাদের বর্তমান আর্থিক ব্যবস্থা দরিদ্র মানুষদের আর্থিক সেবা থেকে বঞ্চিত করছে।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, অর্থায়ন বড় কথা নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান তৈরির মাধ্যমে টেকসই উপায়ে অর্থের প্রবাহটা দরিদ্রদের দিকে চালিত করা। দানশীলতা শেষ পর্যন্ত দরিদ্রদের কোনো উপকারে আসে না এবং টাকার ব্যবহারটা গুরুত্বপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। জাতিসংঘের চলমান সাধারণ অধিবেশনে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বিষয়ে একটি প্যানেলে গত ২৪ সেপ্টেম্বর দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত ‘এসডিজি কস্টিং অ্যান্ড ম্যাক্রো ইকোনমিকস : স্পেন্ডিং নিডস ফর অ্যাচিভিং সিলেকটেড এসডিজিস’ শীর্ষক সভায় মূল বক্তা ছিলেন নোবেলজয়ী এই বাংলাদেশি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিশ্বনেতারা জাতিসংঘের ৭৩তম অধিবেশনে যোগ দিতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। সংস্থার আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ড. ইউনূসও ওই অধিবেশনে অংশ নেন।
ইউনূস সেন্টারের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাসটেইন্যাবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশন্স নেটওয়ার্কের পরিচালক জেফরি সাচের আয়োজনে অনুষ্ঠানটি স্পন্সর করেন জাতিসংঘের উপমহাসচিব মিস আমিনা জে. মোহামেদ।
অনুষ্ঠানটির উদ্দেশ্য ছিল কীভাবে বিশেষ করে অল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ অর্জনে তহবিল ঘাটতি দূর করার লক্ষ্যে নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক সংগঠন, শিক্ষক সমাজ, সিভিল সোসাইটি ও বেসরকারি খাতকে একটি কাঠামোয় নিয়ে আসা যায়। অংশগ্রহণকারীরা এসব লক্ষ্য অর্জনে অর্থায়নের উদ্দেশ্যে মাল্টি-সেক্টর পদ্ধতিতে তহবিল গঠনে তাদের বিভিন্ন সুপারিশ উপস্থাপন করেন।
বৈষম্য কমিয়ে আনা টেকসই উন্নয়নের একটি অন্যতম লক্ষ্য উল্লেখ করে প্রফেসর ইউনূস তার ভাষণে বলেন, অথচ পৃথিবীজুড়ে বৈষম্য প্রতিনিয়ত যেভাবে বেড়ে চলেছে সে বিষয়ে আমরা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছি না। দরিদ্র মানুষদের জন্য পৃথক অর্থায়ন ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং বেকার তরুণদের উদ্যোক্তায় রূপান্তরিত করতে সোশ্যাল ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড সৃষ্টিরও পরামর্শ দেন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা।
জেফরি সাচ ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনে তহবিল ঘাটতি দূর করার উপায় নিয়ে বক্তব্য দেন।