দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ। হ্যাঁ, বিশ্বকাপ ফুটবলের কথা বলছি। রাশিয়ায় চলছে বিশ্বকাপ। কিন্তু উত্তাপ ছড়াচ্ছে আমাদের দেশেও। দেশের আনাচে কানাচে সব জায়গা ছেয়ে গেছে প্রতিটি প্রিয় দলের পতাকায়। পাড়ার গলি থেকে শুরু করে অফিস, আড্ডা, চায়ের দোকানেও উপস্থিত বিশ্বকাপ; তেমনি উপস্থিত তারুণ্যের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাগুলোতে। সব জায়গায় নান্দনিক ফুটবলের ছোঁয়ায় গা ভাসাচ্ছে মানুষ। উচ্ছ্বাস, উত্তেজনা, প্রত্যাশা বা হতাশায় পার হচ্ছে একেকটি দিন। বাংলাদেশ বিশ্বকাপে খেলছে না, তাতে কী! ফুটবলের জোয়ারে গা ভাসাতে দোষ কোথায়? তাই আমরা বিভক্ত ব্রাজিল-আর্জেন্টিনায়। কেউবা উরুগুয়ে-স্পেন-জার্মানিতে। মেসি-নেইমার-ইনিয়েস্তা নাকি রোনালদো কে সেরা খেলোয়াড় তা নিয়ে চলছে বিতর্ক। এই আনন্দ-উত্তেজনা চলবে ১৫ জুলাই পর্যন্ত।
বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে সব সময়ই আলাদা একটা উন্মাদনা কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে।
রাত জেগে খেলা, প্রিয় দলের পতাকা টানানো, প্রিয় খেলোয়াড়ের জার্সি গায়ে পরা কোনো কিছু বাদ যাচ্ছে না। ক্যাম্পাসগুলোতে বিশ্বকাপ যেন তারুণ্যের দুর্বার গতি আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। হলের টিভি রুমগুলো যেন হয়ে উঠেছে রাশিয়ার একেকটি ফুটবল স্টেডিয়াম। সেসব স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে প্রিয় দলের জার্সি পরে পতাকা হাতে খেলা উপভোগ করছেন শিক্ষার্থীরা। ব্রাজিলের খেলা থাকলে সেদিন আর্জেন্টিনার সমর্থকরাও উপস্থিত হন। না, ব্রাজিলকে সমর্থন করতে নয়। প্রতিপক্ষ দলকে সমর্থন করতে। ব্রাজিলের রক্ষণভাগে বল এলেই চিৎকার-চেঁচামেচি বাহবা-হাততালিতে টিভি রুম কাঁপিয়ে তুলছেন তারা, আর গোল হলে তো কথাই নেই। আর্জেন্টিনা বা অন্য কোনো দলের খেলার সময়ও ঘটছে একই কাহিনী। প্রিয় দল ভালো খেললে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ছেন সমর্থকরা। খেলা শেষে চলছে আবার চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
তারুণ্যের ফ্যাশনেও পড়েছে বিশ্বকাপের প্রভাব। মেসি-নেইমারের চুলের স্টাইল করছেন অনেকেই। পোশাকেও এসেছে বিশ্বকাপের ছোঁয়া। প্রিয় দলের জার্সি তো রয়েছেই; সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নানা রঙের টি-শার্ট, যেগুলো প্রিয় দলের বার্তা বহন করছে। ক্যাম্পাসের চায়ের দোকানগুলো হয়ে উঠেছে বিতর্কের মঞ্চ। সবাই নিজ নিজ প্রিয় দলের গুণগান গাইছেন। একজনের সঙ্গে আরেকজনের মতের অমিল হলেই শুরু হয়ে যাচ্ছে তুমুল বিতর্ক। তাতে যোগ দিচ্ছেন অন্যরাও। তবে বিতর্ক যতই হোক; একটি বিষয়ে সবাই একমত, তা হলো বাংলাদেশকে একদিন বিশ্বকাপের মাঠে দেখতে চান সবাই। তরুণদের এই স্বপ্ন দুঃসাধ্য হলেও কঠিন নয়। এই তরুণদের হাতেই আগামীর বাংলাদেশ। তাদের মধ্য থেকেই হয়তো একদিন জন্ম হবে মেসি বা নেইমারের মতো খেলোয়াড়ের। এ জন্য প্রয়োজন নিষ্ঠা, সততা, নিরলস পরিশ্রম ও দেশপ্রেম।