পোল্ট্রি : বর্তমানে পোল্ট্রি শিল্প বেশ জমজমাট। গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের কেন্দ্রস্থল পর্যন্ত কোথাও এর সমাদরের কমতি নেই। দেশের পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা পূরণের জন্য খামারে চাই সুস্থ এবং উৎপাদনশীল মুরগি। বেশি ডিম দেওয়া মুরগির মাথা হবে ছোট, হালকা এবং মাংসল অংশ থাকবে কম। মাথার ঝুঁটি ও গলার ফুল হবে উজ্জ্বল লাল রঙ কিংবা গোলাপি বর্ণের। তবে এগুলো অবশ্য নরম, সুগঠিত ও প্রস্ফুটিত হবে। চোখের বর্ণ হবে উজ্জ্বল। নাক ও মুখ থাকবে শ্লেষ্মাহীন পরিষ্কার। নাক দিয়ে সর্দি ঝরা কিংবা গলার ভেতর ঘড় ঘড় শব্দ হবে না। মুরগির দেহ সুগঠিত হবে। পেটে ডিম অনুভব হলে অবশ্যই ওজনে ভারি হবে। এ ধরনের মুরগির পিঠ হয় লম্বা ও প্রশস্ত। শরীরের কোনো অংশে খুঁত, অপূর্ণতা অথবা বিকলাঙ্গ হবে না। সুস্থ অবস্থায় মুরগির পালক উজ্জ্বল ও সুবিন্যস্ত থাকে। স্বাস্থ্যবান মুরগি সব সময় চঞ্চল থাকে এবং খাবার খুঁজতে ব্যস্ত মনে হয়। হঠাৎ কোনো শব্দ হলে অথবা শত্রুর উপস্থিতি বুঝতে পারলে মুখে এক ধরনের শব্দ করে স্বজাতিকে সতর্ক করে। ধরতে গেলে দৌড়ে পালায়। সুস্থ মুরগির পা থাকবে সুন্দর ও সুগঠিত। সুস্থ এবং বেশি ডিম দেওয়া মুরগি চিহ্নিত করে তবেই পালন করা উচিত। এর ফলে রোগবালাইয়ের সম্ভাবনা কম থাকে এবং খামারিও হবেন লাভবান।
মৎস্য : এখন বর্ষাকাল। অতিবৃষ্টি ও পানির চাপে পুকুরের পাড় ভেঙে যেতে পারে। পুকুরের পাড়সম পানি হতে পারে। এ সময়ে পুকুরের মাছ বের হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই বন্যা কিংবা জোয়ারের পানি পুকুরে যেন না ঢুকতে পারে, মাছ যেন বের হয়ে যেতে না পারে, সেজন্য পুকুরের পাড় মেরামত করা দরকার। প্রয়োজনে জাল দিয়ে পুকুরের চারপাশ আবৃত্ত করে রাখতে হবে। চাষকৃত পুকুরে রাক্ষুসে মাছ যেন না থাকে, সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখা প্রয়োজন।
আউশ ধান : যারা সময়মতো আউশ ধান রোপণ করেছেন, তাদের ফসল এখন পরিপক্ব হয়েছে। শতকরা আশি ভাগ পাকলে ধান কাটতে হবে।
পাট : পাট গাছে ফুল আসতে শুরু করলেই কাটার জন্য উপযুক্ত হয়েছে বলে মনে করা হয়। পাট কাটার পর মোটা ও চিকন পাট আলাদাভাবে আঁটি বাঁধলে ভালো হয়। গাছের পাতা ঝরার জন্য জমিতে ৩-৪ দিন ফেলে রাখতে হবে।
আমন ধানের বীজতলা : সুস্থ চারা পেতে বীজতলার বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। আগাছা দমন, সেচ দেওয়া, পানি নিষ্কাশন- এসব ব্যবস্থা সময়মতো নিতে হয়। চারাগাছে হলদে ভাব দেখা দিলে প্রতি বর্গমিটারের জন্য ৭ গ্রাম হারে ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। দেশের কোনো কোনো এলাকায় মূল জমিতে আমনের চারা রোপণের কাজ চলছে।
ফল সংগ্রহ : আজকাল বাজারে আমের ছড়াছড়ি। ভালো দাম পেতে সময়মতো ফল সংগ্রহের বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ঝাঁকুনি দিয়ে আম সংগ্রহ করা সঠিক নয়। এতে ফল আঘাতপ্রাপ্ত হয়। গুণগতমান হ্রাস পায়। পচে যায় দ্রুত। তাই ঠুসি ব্যবহার করতে হবে। বাঁশের মাথায় নেটের ব্যাগ দিয়ে ঠুসি তৈরি করা যায়। বর্তমানে একটি বিশেষ পদ্ধতি উদ্ভাবন হয়েছে। ১০-১২ ইঞ্চি প্লাস্টিকের পাইপের মাথার কিছু অংশ কেটে বাঁশের অগ্রভাগে বাঁধা হয়। পাইপাকৃতি বানানো কাপড় এর সঙ্গে যুক্ত থাকে মাটি বরাবর। এর সুবিধা হচ্ছে, ফল বোঁটা থেকে অপসারণের সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে রাখা চটের বস্তায় এসে জমা হয় দ্রুত। এতে আঘাতের আশঙ্কা নেই।
নাহিদ বিন রফিক : টেকনিক্যাল পার্টিসিপেন্ট, কৃষি তথ্য সার্ভিস ও পরিচালক, কৃষিবিষয়ক আঞ্চলিক অনুষ্ঠান, বাংলাদেশ বেতার, বরিশাল।