ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের তিতাস নদীর তীরে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ঐতিহ্যবাহী হরিপুর জমিদার বাড়ি। বাড়িটিকে কেউ বলে রাজবাড়ি, কেউ বলে জমিদার বাড়ি আবার কেউ এটিকে বড় বাড়ি বলে ডাকে। প্রয়াত নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ‘ঘেটুপুত্র কমলা’সহ অসংখ্য চলচ্চিত্র ও নাটকের শুটিং হয়েছে এ বাড়িতে। কিন্তু বর্তমানে সংস্কারের ছোঁয়া না লাগায় হারাতে বসেছে বাড়িটি। বেদখল হয়ে গেছে বাড়িটির আশপাশের অনেক জমি। বর্তমানে বাড়িটি অর্পিত সম্পত্তি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস করছেন অনেক পরিবার। নাসিরনগরের হরিপুর এলাকার হরিণবেড়ের এই বাড়িটির আয়তন ও আড়ম্বরপূর্ণ স্থাপত্য ঐতিহাসিক যুগের শৈল্পিক নৈপুণ্যের স্বাক্ষর বহন করে।
প্রায় ১৭৫ বছর আগে জমিদার গৌরীপ্রসাদ রায়চৌধুরী ও কৃষ্ণপ্রসাদ রায়চৌধুরী বাড়িটি নির্মাণ করেন। ব্রিটিশ আমলে নির্মাণ করা হলেও বাড়িটির নির্মাণশৈলী বড়ই মনোরম। ১৩৪৩ বাংলার ১২ চৈত্র (দোল পূর্ণিমা) তারিখে কৃষ্ণপ্রসাদ রায়চৌধুরীর মৃত্যুর পর পর্যায়ক্রমে বাড়িটির উত্তরাধিকার হন হরিপদ রায়চৌধুরী ও শান্তি রায়চৌধুরী। তাদের কাছ থেকে বাড়ির মালিকানা ও জমিদারি আসে উপেন্দ রায়চৌধুরী ও হরেন্দ রায়চৌধুরীর হাতে। কালক্রমে ১৯৪৭ সালে দেশ বিভক্ত হওয়ার পর জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ হলে তারা বাড়িটি ফেলে কলকাতায় চলে যায়। জমিদাররা বাড়িটি ফেলে যাওয়ার সময় পুরোহিতদের রেখে যান। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর দ্রুত বাড়িটি সংরক্ষণ ও সংস্কার করে জমি দখলমুক্ত করলে দর্শনীয় স্থান হিসেবে আরো প্রসার ঘটবে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও দর্শনার্থীরা।