কাঁঠালের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এ পর্যন্ত তিনটি উন্নত কাঁঠালের জাত উদ্ভাবন করেছে

সংরক্ষিত ছবি

ফিচার

কাঁঠালের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা

  • এস এম মুকুল
  • প্রকাশিত ১১ জুলাই, ২০১৮

কাঁঠালগাছের পাতা থেকে শুরু করে কাঁঠালের প্রতিটি অংশ ব্যবহার করা যায় বলে অন্যান্য ফলের তুলনায় এটি লাভজনক। ফলটি বাংলাদেশে কাঁঠাল নামে পরিচিত হলেও থাইল্যান্ডে কানুন, মালয়েশিয়ায় নাংকা, চীনে পো লো মি, ভারতে কানঠাল/কাঁঠাল/ পেনাসা এবং ভিয়েতনামে মিট নামে পরিচিত। বাংলাদেশে সব স্থানে কম-বেশি কাঁঠাল উৎপাদন হলেও নওগাঁ, দিনাজপুর, সাভার, ভালুকা, মধুপুর ও সিলেট কাঁঠালপ্রধান এলাকা হিসেবে পরিচিত।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে কমবেশি ১০ লাখ টন কাঁঠাল উৎপাদন হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দেশে প্রায় ২৬ হাজার হেক্টর জমিতে কাঁঠাল আবাদ হয়। উৎপাদন হয় কমবেশি ২ লাখ ৬০ হাজার টন।

আশার খবর হলো, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এ পর্যন্ত তিনটি উন্নত কাঁঠালের জাত উদ্ভাবন করেছে। রামগড়ের পাহাড় অঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা দীর্ঘ প্রায় তিন বছর সফল গবেষণার পর বারি কাঁঠাল-৩ নামের বারোমাসি কাঁঠালের নতুন জাত উদ্ভাবন করে। ভারতীয় উপমহাদেশ ও আশপাশের অঞ্চলের সীমানা ছাড়িয়ে ফলটিকে পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষে গবেষণা চলছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোয় কাঁঠাল জনপ্রিয় করার বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আরো আশার খবর হলো- প্রবাসী বাঙালিদের পছন্দের কারণে হবিগঞ্জের কাঁঠাল ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত সদস্য দেশ, সৌদি আরব, দুবাই, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে।  বিভিন্ন বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, মৌসুমের সময় আমাদের দেশে যে পরিমাণ কাঁঠাল উৎপাদিত হয় তা যদি সংরক্ষণ করা যেত, তা হলে গোটা বছরের খাদ্যাভাবও দূর হতো। রফতানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করাও সম্ভব হবে।

কৃষিবিদদের মতানুযায়ী, দেশে কাঁঠাল প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্ট এবং জ্যাম, জেলি, জুস তৈরির প্ল্যান্ট মেশিনারিজ বসালে জাতীয় ফল কাঁঠাল সত্যিকার অর্থেই জাতির জন্য সমৃদ্ধির স্বর্ণদ্বার উন্মোচন করতে পারবে।

পাহাড়ের কাঁঠাল : ভালো খবর হলো, কাঁঠালের আবাদসমতল থেকে পাহাড়ে বিস্তৃত হচ্ছে। হবিগঞ্জের পাহাড়ি এলাকায় রয়েছে অনেক কাঁঠালের বাগান। হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলার ১২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল উৎপাদন হয় কমবেশি ১০ হাজার টন। এছাড়া খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার বেতছড়ি, মধ্যবেতছড়ি, মেরুং, ছোট মেরুং, পোমাং পাড়া, জাম্বুড়া পাড়া, রশিকনগর এলাকায় কাঁঠাল বাগান রয়েছে।

কাঁঠাল পাতার হাট : দিনাজপুর শহরের টিঅ্যান্ডটি মোড় এবং বাহাদুর বাজার টিঅ্যান্ডটি মোড় দিয়ে হেঁটে গেলে কানে ভেসে আসবে ‘পাতা লাগে পাতা’। ছাগলের উৎকৃষ্ট ও প্রিয় খাবার কাঁঠাল পাতা। শহরে ছাগল পালনকারীরা এ কাঁঠাল পাতা কিনে নিয়ে যান। ক্রেতারাই নাম দিয়েছেন কাঁঠাল পাতার হাট। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে পাতার হাট।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads