কসবার শহীদ সমাধিতে শায়িত ৫০ মুক্তিযোদ্ধা

কসবার শহীদ সমাধি

সংরক্ষিত ছবি

ফিচার

কসবার শহীদ সমাধিতে শায়িত ৫০ মুক্তিযোদ্ধা

  • প্রকাশিত ১০ জুলাই, ২০১৮

খান জাহান আলী চৌধুরী, নবীনগর

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে প্রাণ গেছে লাখো  দেশপ্রেমিক জনতার। মুক্তিযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের স্মরণে রাখার জন্য সীমান্তবর্তী এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার বায়েক ইউনিয়নের কোল্লাপাথর এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে ‘কোল্লাপাথর শহীদ সমাধি’। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে ও কসবা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। এখানে চিরনিদ্রায় শায়িত রয়েছেন ৫০ মুক্তিযোদ্ধা। সারিবদ্ধভাবে সাজানো মুক্তিযোদ্ধাদের ওই সমাধি দেখতে সারা বছরই পর্যটকদের ভিড় থাকে এখানে। সমাধিস্থলের চারপাশের বিস্তীর্ণ এলাকার উঁচু-নিচু টিলা, নানা প্রজাতির গাছ, সামাজিক বনায়ন আর সবুজের সমারোহ পর্যটকদের আকৃষ্ট করে।

জানা যায়, কসবা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী উপজেলা- যা মুক্তিযুদ্ধের সময় ২ নম্বর সেক্টরের আওতায় ছিল। পাশের দেশ ভারতের আগরতলা, যেখানে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছিল। প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থাকার কারণে এ অঞ্চলটি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অন্যতম লক্ষ্যে পরিণত হয়। ফলে অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে এ এলাকায় বেশি যুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং বিপুলসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত বরণ করেন। তাদের লাশ সংগ্রহ করে স্থানীয়দের উদ্যোগে এবং সহায়তায় একই এলাকার বাসিন্দা আবদুল করিমের পৈতৃক টিলায় সমাহিত করা হয়। এখানে ৫০ মুক্তিযোদ্ধাকে সমাহিত করা হয়, যার মধ্যে ৪৭ জনের পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে রাষ্ট্রীয় খেতাবপ্রাপ্ত বীর উত্তম তিনজন, বীর বিক্রম একজন এবং বীর প্রতীক রয়েছেন দুজন। বাকি তিনজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। প্রতিটি কবরই সারিবদ্ধভাবে সাজানো, ইট দিয়ে বাঁধানো এবং প্রতিটিরই নামফলক রয়েছে। কোল্লাপাথরের মূল আকর্ষণ হলো এই সমাধি। আশপাশের পাহাড়ঘেরা সীমান্ত এলাকা এবং উঁচু-নিচু পাহাড়ি রাস্তা। আছে সুন্দর ঘাট বাঁধানো পুকুর তার সঙ্গেই গেস্ট হাউজ। গেস্ট হাউজের পাশেই রয়েছে প্রস্তাবিত শেখ রাসেল পার্কের সাইনবোর্ড।

পাহাড়ে উঠে ঘুরে আসা যায় বাংলাদেশের শেষ সীমানার পিলার পর্যন্ত। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের প্রয়াত সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফুল হাই সাচ্চুর নেতৃত্বে তৎকালীন জেলা প্রশাসন কোল্লাপাথর শহীদদের স্মৃতিবিজড়িত কবর চিহ্নিত করে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়। গত এক দশকে সেখানে স্মৃতিসৌধ, মসজিদ, রেস্ট হাউজ, সীমানাপ্রাচীর ও পুকুরঘাট বানানো হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads