এক কর্মীকে চাকরিচ্যুত করার ঘটনায় অস্থিরতা দেখা দিয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনে (জিপি)। মঙ্গলবার দিনভর সহকর্মীকে চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে প্রধান কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছেন গ্রামীণফোনের কর্মীরা।
জানা গেছে, জিপির গুলশান লাউঞ্জের ব্যবস্থাপক ও গ্রামীণফোন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের গঠন করা সংগঠন গ্রামীণফোন পিপলস কাউন্সিলের (জিপিপিসি) সাধারণ সম্পাদক বিএম জাহিদুর রহমানকে যৌন হয়রানির অভিযোগে চাকরিচ্যুত করেছে জিপি।
এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অপারেটরটির কার্যালয়ের লেভেল-২-এ প্রায় দু’শ’ কর্মী জড়ো হন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি শেষে খাবারের বিরতিতে যান তারা। এরপর বিকাল ৪টায় কার্যালয়ের টাউন হলে সমাবেশ করেন তারা। জিপিপিসির চেয়ারম্যান ও এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মিয়া মো. শফিকুর রহমান মাসুদ জানান, কর্মীদের ইনক্রিমেন্ট আন্দোলনকে দমিয়ে দিতে এই ষড়যন্ত্র। এই অভিযোগ মিথ্যা, এটি চেষ্টা করেও প্রমাণ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
তিনি জানান, ২০১৬ সালে বিএম জাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে এমন একটা অভিযোগ এনে তার বিচার শুরু করে কমপ্লায়েন্স টিম। কিন্তু অভিযোগের কোনো প্রমাণ না থাকায় তারা আর এগোয়নি। তখন আইনগতভাবে বিচার শেষ হয়ে যায়।
তবে সম্প্রতি জিপিপিসি গ্রামীণফোনের হেড অব কমপ্লায়েন্সের বিরুদ্ধে কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগসহ অনাস্থা আনে। আর এ কারণেই এই চাকরিচ্যুতির ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, আইনগতভাবে একই অভিযোগে দু’বার বিচার করার সুযোগ নেই। ২০১৬ সালে অভিযোগ প্রমাণ করতে না পেরে হাইকোর্টের ২০০৯ সালের একটি গাইডলাইন ব্যবহার করে পুনরায় বিচার শুরু করে তারা।
তবে এটির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হলে আদালত কমপ্লায়েন্স কার্যক্রম স্থগিত করে। পরে গ্রামীণফোন আদালতকে জানায়, কোম্পানি যেহেতু কার্যক্রম স্থগিত করেছে তাই আর নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন নেই।
এরপর আবার জাহিদুর রহমানকে হাজির হওয়ার নোটিশ দিলে তিনি বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন। এতে উভয়পক্ষের শুনানি হয়। কিন্তু আদেশের কপি আসার আগেই সোমবার রাতে তাকে বরখাস্ত করা হয়।
তবে গ্রামীণফোনের তরফে এই বিষয়ে বাংলাদেশের খবরকে বলা হয়েছে, গ্রামীণফোন তার নিজস্ব কোড অফ কন্ডাক্ট এবং যেকোনো আইনের লঙ্ঘনকে গুরুতর হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। আইন অনুযায়ী, এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো গ্রামীণফোনের কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ওম্যান লইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএনডব্লিউএলএ) ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত একটি স্বাধীন কমিটি তদন্ত করে। বেশ কয়েকজন অভিযোগকারীর দায়ের করা অভিযোগের সত্যতা এই কমিটি পেয়েছে। ঘটনা এবং তদন্তের ফলাফলের স্পর্শকাতরতা বিবেচনায় কোম্পানি এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।