কদম ফল গ্রাম অঞ্চলে সুপরিচিত একটি ফল। এই ফল দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি মনোমুগ্ধকর। কিন্তু কদম ফলেও যে পুষ্টিগুণ আছে তা জানেন না অনেকেই। কদম ফুলের পাপড়ি ঝরে যাওয়ার পর গোলাকার সবুজ যে অংশ দেখা যায় তাই হচ্ছে কদম ফল। পাকলে ফলটি হলুদ হয়ে যায়। ফলগুলোর স্বাদ মাটি ভেদে কোনটি অনেক সুস্বাদু আবার কোনটি হালকা টক হয়ে থাকে। কদম ফলেও যে পুষ্টিমান রয়েছে এবং মানুষের শরীরের জন্য উপকারী তা সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মারজান সরকার প্রমাণ করেছেন।
ইতিমধ্যে তার গবেষণা কর্মটি আন্তর্জাতিক একটি জার্নালে(সায়েন্স পাবলিকেশন) প্রকাশিত হয়েছে। তার গবেষণায় পাওয়া কদম ফলের পুষ্টিমান- প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা ফ্রেশ কদম ফলে প্রোটিন : ৮৫২ মিলি গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট : ২৬ গ্রাম, লিপিড : ৩.৫ গ্রাম, ডায়াটারি ফাইবার : ১.৫ গ্রাম, সোডিয়াম : ২৮৬ মিলি গ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম : ৯৭ মিলি গ্রাম, পটাশিয়াম : ৩১৭ মিলি গ্রাম, আয়রন : ৮.৮ মিলি গ্রাম, বিটা কেরোটিন (ভিটামিন এ এর উপাদান) : ৮.৮ মিলি গ্রাম এবং ভিটামিন সি : ৯৫ মাইক্রো গ্রাম। এছাড়াও রয়েছে লোহিত রক্ত কণিকার ভাঙন রোধ এবং বয়স ধরে রাখার মত অনেক উপাদান। এতে কোনো ক্ষতিকর উপাদান নেই।
গবেষণার বিষয়ে মো. মারজান সরকার বলেন, কদম ফলকে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ফল হিসাবে সারা দেশে প্রচলিত করতে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা শুরু করি। গবেষণায় অন্যান্য ফলের মতো পুষ্টিগুণ খুঁজে পেয়েছি কদম ফলে। আমার গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল এই পুষ্টিকর ফলকে আমাদের দেশের জনগণের কছে জনপ্রিয় করে তোলা।
গবেষণা কাজ করতে গিয়ে যারা সহায়তা করেছেন তাদের মধ্যে দেশবরেণ্য গবেষক অধ্যাপক ড. মো শাহাদাত হোসাইন এবং জার্মানিতে পিএইচডি রত সিনিয়র গবেষক সুজন ভৌমিক অন্যতম।
উল্লেখ্য, এর আগে মারজান স্নাতকোত্তরে একটি থিসিস কর্ম এভালুয়েশন অব অ্যান্টি লিপিডেমিক, অ্যান্টি অক্সিডেটিভ অ্যান্ড অ্যান্টি ইনফ্লামাটরি ইফেক্টস অব প্রিজার্মিনেটেড রাইস ইন হাইপার কোলেস্টেরলেমিক র্যাটস (Evaluation of anti-lipidemic, antioxidative and anti-inflammatory effects of pregerminated rice in hypercholesterolemic rats) জাপানের একটি কনফারেন্স রাইস রিসার্চ ইন গ্লোবাল হেলথ (Rice Research In Global Health) এ কাজ করেছেন।





