বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

এক সপ্তাহে ফেসবুকের ৫৮ বিলিয়ন ডলার হাওয়া

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৫ মার্চ, ২০১৮

সময় ভালো যাচ্ছে না সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের। ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা নামের একটি প্রতিষ্ঠান প্রায় পাঁচ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে- এমন খবর প্রকাশের পর থেকেই বহুমুখী চাপের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গও এক স্ট্যাটাসে তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ স্বীকার করেছেন।

এ ঘটনার প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারেও। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ফেসবুকের শেয়ারের দাম ১৭৬ ডলার থেকে কমে হয়েছে ১৫৯ ডলার। সব মিলিয়ে এ সময়ের মধ্যে ফেসবুকের বাজার মূলধন কমেছে ৫৮ বিলিয়ন ডলার।

চাপ এসেছে বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকেও। বড় বড় বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে ফেসবুকে চলমান ক্যাম্পেইনগুলো বন্ধ করতে শুরু করেছেন। বিজ্ঞাপন ফার্ম এমঅ্যান্ডসি সাচির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ডেভিড কার্শো জানান, তথ্য চুরির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর থেকে বিজ্ঞাপনদাতারা পিছু হটতে শুরু করেছেন।

মোজিলা ফাউন্ডেশন এবং কমার্জব্যাংকের মতো বড় দুই প্রতিষ্ঠান গত বুধবার তাদের ফেসবুকে থাকা সকল বিজ্ঞাপন স্থগিত করেছে।

আলোচিত উদ্যোক্তা এলোন মাস্কও তার প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন টেসলা এবং স্পেস এক্সের ফেসবুক পেজ বন্ধ করার মাধ্যমে।

ডেভিড কার্শোর মতে, বিজ্ঞাপনদাতাদের দিক থেকে চিন্তা করলে ফেসবুক বিজ্ঞাপনের জন্য অসাধারণ একটি মাধ্যম। এখানে খুব নিখুঁতভাবে মানুষকে টার্গেট করে পণ্যের প্রচারণা চালানো যায়। তবে এ ধরনের বড় বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো একটি বিষয়ে খুব চিন্তিত থাকে। আর তা হলো তাদের কোনো তথ্যের অপব্যবহার করা হচ্ছে কি না, বিশেষ করে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিজ্ঞাপনদাতা গ্রুপ আইএসবিএ এ ঘটনার পর ফেসবুকের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেছে। এ সময় ফেসবুক তাদের এই বলে আশ্বস্ত করেছে যে ব্যবহারকারী এবং বিজ্ঞাপনদাতাদের উদ্বেগের বিষয়ে দ্রুত বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে ফেসবুকের পক্ষ থেকে। এর মধ্যে আছে অ্যাপ অডিটও।

এদিকে মার্ক জাকারবার্গও সাধারণ ব্যবহারকারীদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলছেন, এ ধরনের ঘটনা যেন পুনরায় না ঘটে, সে ব্যবস্থা ফেসবুক আরো এক বছর আগেই গ্রহণ করেছে।

তবে প্যাশন ক্যাপিটালের বিনিয়োগকারী এইলিন বারবিজের মতে, ব্যবহারকারী এবং বিজ্ঞাপনদাতাদের আশ্বস্ত করতে অনেক বেশি সময় নিয়েছে ফেসবুক। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিতে পাঁচ দিন সময় লেগেছে তাদের। আমার মনে হয়েছে তারা অনেকদিন ধরেই কানে তালা দিয়ে ছিল।’

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গ্রাহকদের তথ্য ব্যবহারের পর যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, ফেসবুক সেটি অগ্রাহ্য করেছে বলেও মনে করেন এই বিনিয়োগকারী।

এদিকে ফেসবুকের এ ঘটনায় অবিশ্বাসের দোলাচলে আছেন সাধারণ ব্যবহারকারীরাও। টুইটারে বয়কট ফেসবুকসহ ফেসবুকবিরোধী বিভিন্ন হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে টুইট করতে দেখা গেছে অনেককেই।

প্রযুক্তিবিষয়ক লেখক কেট বেভান মনে করেন, এই এক সপ্তাহের ঘটনাবলি থেকে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। প্ল্যাটফর্মটিতে থাকা বিভিন্ন গেম, কুইজ কিংবা অ্যাপগুলো যে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে অন্যান্য গুরুতর কাজেও ব্যবহার করা হতে পারে, সেটি তারা বুঝতে শুরু করেছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads