এক দশকের মধ্যেই চাঁদে বসতি স্থাপন!

এমন এক দিন আসবে যখন মানুষ চাঁদে বাস করতে শুরু করবে

ছবি : ইন্টারনেট

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

এক দশকের মধ্যেই চাঁদে বসতি স্থাপন!

  • প্রকাশিত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি বা জাক্সা চাঁদে মানুষের কলোনি স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সহায়তায় আগামী দশকের মধ্যে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা জানিয়েছে সংস্থাটির বিজ্ঞানীরা। শুধু তাই নয়, আগামী দিনে এক্সোপ্লানেটে যাত্রা বিরতির স্থান হিসেবে চাঁদকে ব্যবহারের পাশাপাশি সেখান থেকে প্রয়োজনীয় খনিজ আহরণের গবেষণাও শুরু হবে আলোচ্য সময়ের মধ্যে।

জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে জাপানি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান শিমিজু করপোরেশনের বরাতে জানানো হয়েছে, ২০১৩ সালে চীনের জেড র্যাবিট লোনার রোভারের সাফল্যে উজ্জ্বীবিত হয়েই এই পথে আগাচ্ছে জাপান। শিমিজু করপোরেশনের মুখপাত্র হিদেও ইমামুরার দাবি, সেই ১৯৮৭ সাল থেকে চাঁদে বসতি স্থাপনের চিন্তা করছেন তারা। তখন থেকেই তাদের বিশ্বাস, এমন এক দিন আসবে যখন মানুষ চাঁদে বাস করতে শুরু করবে। তবে পর্যাপ্ত সম্পদের অভাবে সেখানে মানুষ বাস করতে পারবে কি না সেই সংশয়ে এই বিষয়ে এতদিন কেউ উদ্যোগ নেয়নি। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ যন্ত্র এম-৩ তিনটি রাসায়নিক চিহ্ন বের করে নিশ্চিত করেছে চাঁদে পানি থাকার বিষয়টি। আর ২০০৯ সালে জাপানের মহাকাশযান কাগুইয়া চাঁদে গিয়ে ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সিলিকন, ক্যালসিয়াম, টাইটেনিয়াম ও আয়রনের উপস্থিতি শনাক্ত করে। এর পাশাপাশি গেল বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৗরজগৎ সম্পর্কে আরো গবেষণা চালাতে চাঁদে আবার মহাকাশচারী পাঠানোর এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। এসব কারণেই জাপান চাঁদে বসতি স্থাপনের বিষয়ে এতটা আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।

এদিকে শিমিজুর ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, সীমিত সম্পদের ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার চেয়ে কীভাবে অফুরন্ত ক্লিন এনার্জি উৎপাদন করা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সেই সন্ধান চালিয়ে আসছেন বিজ্ঞানীরা। উদ্ভাবনী ভাবনা ও অগ্রসর প্রযুক্তি লুনা রিং, মানুষের এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে। পৃথিবীর ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে চঁোদর ৪০০ কিলোমিটার সোলার প্যানেল দিয়ে ঘিরে ফেলতে চায় শিমিজু। এই প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন বিদ্যুৎ সংগ্রহ করা হবে পৃথিবীতে। এই পরিকল্পনার নাম দেওয়া হয়েছে ‘লুনা রিং’। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চাঁদে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে জমাট বাঁধা পানি এবং পর্যাপ্ত লৌহ রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে হিলিয়াম-৩ গ্যাসের উপস্থিতি, যা কেবল চাঁদেই পাওয়া যায়। এই গ্যাসকে সহজেই নিউক্লিয়ার ফিউশন প্রযুক্তির মাধ্যমে জ্বালানি হিসেবে কাজে লাগানো সম্ভব বলেও মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

এ দিকে নির্মাণকাজে দূরনিয়ন্ত্রিত ট্রাক ও বুলডোজার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানটি কাজিমা পৃথিবী থেকে নিয়ন্ত্রণযোগ কিছু নির্মাণ যন্ত্র ইতোমধ্যে চাঁদে পাঠানোর প্রস্তুতি শুরুর করেছে। প্রতিষ্ঠানটির গবেষকদের বিশ্বাস, তাদের এই প্রযুক্তি পৌনে চার লাখ কিলোমিটার দূরেও কাজ করবে।

শিমিজুর হিদেও ইমামুরা জানান, এই মুহূর্তে চাঁদে লঞ্চ প্যাড এবং সংশ্লিষ্ট অন্যসব অবকাঠামো নির্মাণ, স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া আবহাওয়া ও টেলিকমিউনিকেশন সংক্রান্ত তথ্য সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে চন্দ্রপৃষ্ঠ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া এবং চাঁদের পৃৃষ্ঠে সঠিকভাবে কাজ করবে এমন প্রযুক্তি ও যন্ত্র নির্মাণ নিয়ে ব্যস্ত আছে তাদের প্রতিষ্ঠান। আর সব ঠিক থাকলে পরিকল্পিত সময়ে মধ্যেই চাঁদে মানুষের কলোনি স্থাপনের কাজ শুরু হয়ে যাবে।

ডয়েচে ভেলে ও শিমিজুর ওয়েবসাইট অবলম্বনে আসিফ খান

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads