ঈমান আরবি শব্দ। যার বাংলা অর্থ- বিশ্বাস করা, স্বীকার করা, ভরসা ও আস্থা স্থাপন করা। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় ঈমান হলো আল্লাহতায়ালা ও তাঁর গুণাবলিকে এবং রসুল (সা.) আনীত বিষয়াবলির প্রতি অন্তরে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকার করা এবং তদানুযায়ী আমল করা। অন্য কথায়, ঈমান হলো আল্লাহ মহানকে এক অদ্বিতীয় জানা ও তাঁর আদেশ-নিষেধ মানা এবং নবীজীকে (সা.) তাঁর প্রেরিত রসুল হিসেবে বিশ্বাস করা ও তাঁকে অনুসরণ করা। ঈমানের রোকন বা স্তম্ভ ছয়টি। আল্লাহর প্রতি, ফেরেশতাদের প্রতি, আল্লাহ প্রেরিত আসমানী কিতাবসমূহের প্রতি ও নবী-রসুলদের প্রতি, আখেরাতের প্রতি এবং তকদিরের ভালো-মন্দের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। কোরআন ও হাদিসের ভাষ্য মতে, ঈমান পূর্ণ হওয়ার শর্ত হলো উল্লিখিত ছয়টি রোকনের প্রত্যেকটির প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। যদি কেউ এর কোনো একটি বা একাধিক স্তম্ভকে অস্বীকার করে, তাহলে তার ঈমান থাকবে না।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, সত্তরের অধিক ঈমানের শাখা রয়েছে। এর সর্বোত্তম শাখা হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা এবং সর্বনিম্ন শাখা হলো রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়া দেওয়া। এ ছাড়া লজ্জাও ঈমানের শাখা। (মুসলিম)। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত ঈমানের শাখাগুলো জানা। কারণ এর মাধ্যমে নিজের ঈমানকে যাচাই করা বা ঈমানের মান পরিমাপ করা সম্ভব হয়।
ঈমান মুসলমানের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত সেরা এক নিয়ামত। মুসলমানদের মহান আল্লাহ যত নিয়ামত দান করেছেন তার মধ্যে ঈমান হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত। আমাদের উচিত ঈমানের নিয়ামত লাভের জন্য মহান প্রভুর শুকরিয়া জ্ঞাপন করা এবং ঈমানে দাবি পূরণ করা। ঈমানের দাবি হলো- একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করা যাবে না, তিনি ছাড়া অন্য কারো কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা যাবে না। আল্লাহ ছাড়া কারো সামনে মাথানত না করা এবং অন্য কাউকে বা ভিন্ন কোনো শক্তিকে স্রষ্টা জ্ঞান না করা। এ ছাড়া জীবনের প্রতিটি বিষয় ও ক্ষেত্রে একমাত্র আল্লাহর নির্দেশনা মান্য করা ও রসুলের (সা.) আনুগত্য করাই ঈমানের বিশেষ দাবি। মনে রাখতে হবে, ঈমান হলো বান্দার সঙ্গে স্রষ্টার এক ধরনের চুক্তি, অঙ্গীকার। কোনোভাবেই এ চুক্তি বা অঙ্গীকার ভঙ্গ করা যাবে না।
লেখক : সাংবাদিক