রোজা ও যাত্রীদের নিরাপত্তাজনিত কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে চলাচলকারী ফেরিতে হকারদের পণ্যদ্রব্য বেচাকেনা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। এ হকারীর উপর নির্ভরশীল উভয় পারের শত শত পরিবার। এ অবস্থায় ঈদের আগে চরম বিপাকে পড়েছেন হকাররা।
দৌলতদিয়া হকার ঐক্য কল্যাণ সমিতির কোষাধ্যক্ষ হাবিব মোল্লা জানান, চারদিন আগে পাটুরিয়া ঘাটে ফেরি হতে তাদের বেশ কয়েকজন হকারকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে ২ হাজার টাকা করে জরিমানা আদায় করে তাদের ছেড়ে দেয় এবং ফেরিতে আর বেচাকেনা না করতে বলে দেয়। এরপর থেকে উভয় পারের কোন হকারই ফেরিতে উঠছে না।
তিনি জানান, দৌলতদিয়ায় শুধু তাদের সংগঠনেই ৩৪৬ জন সদস্য রয়েছে। এ ছাড়া দৌলতদিয়া হকার সমবায় সমিতির সদস্য সংখ্যাও প্রায় ৩০০। একইভাবে পাটুরিয়া ঘাটেও কয়েকশ হকার রয়েছে। তারা পালাক্রমে ফেরিতে বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বিক্রি করে তারা সারা বছর কোনভাবে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। ঈদের আগে এভাবে ফেরিতে বেচাকেনা বন্ধ করে দেয়ায় হকার পরিবারগুলোতে ঈদের আনন্দ হারিয়ে গেল।
সরেজমিন রোববার দুপুরে দৌলতদিয়া ৫নং ফেরিঘাটে কথা হয় কলা বিক্রেতা শাহজাহান শেখ, লিচু বিক্রেতা আলম শেখ, খই বিক্রেতা নাজিম প্রামানিক, আম বিক্রেতা আ. রব, ছোন পাপড়ি বিক্রেতা সাইদুর রহমান সহ অনেকের সঙ্গে।
তারা জানান, ফেরিতে যাওয়া ও আসার পথে তারা পণ্যদ্রব্য বিক্রির জন্য অনেকটা সময় পান। যাত্রীরাও ধীরস্থির ভাবে তাদের প্রয়োজন মতো জিনিস কেনেন। কিন্তু এখন আমরা গাদাগাদি করে ফেরিঘাট, লঞ্চঘাট ও টার্মিনালে পণ্যদ্রব্য বিক্রির চেষ্টা করছি। কিন্তু এভাবে বেচাকেনা একেবারেই কমে গেছে। যাত্রীরা ফেরি থেকে নামার পর আর কোনো কিছুই কিনতে চায় না। এ অবস্থায় আমরা খুবই কষ্টে আছি। সংসার চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। এবার হয়তো আমাদের ঈদ করা হবে না।
এ বিষয়ে দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাড়ির ওসি মো. লাবু মিয়া জানান, রোজার পবিত্রতা ও যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে মানিকগঞ্জ ও রাজবাড়ীর প্রশাসন ফেরিতে হকারদের বেচাকেনা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারপরও অনেকেই লুকিয়ে বেচাকেনা করছে। ইতিপূর্বে ফেরিতে জুয়া খেলার ফাদে ফেলে সাধারণ যাত্রীদের সর্বস্ব লুটের একাধিক ঘটনা ঘটে। ওই জুয়ারুর বেশধারী ছিনতাইকারীদের সঙ্গে কোন কোন হকারের যোগসাজস আছে বলে অভিযোগ আছে।