ই-কমার্সকে মূল্য সংযোজন কর থেকে অব্যাহতির সুপারিশ ই-ক্যাবের

জাতীয় প্রেস ক্লাবে শনিবার ই-ক্যাব সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে

সংগৃহীত ছবি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ই-কমার্সকে মূল্য সংযোজন কর থেকে অব্যাহতির সুপারিশ ই-ক্যাবের

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১০ জুন, ২০১৮

ই-কমার্স খাতকে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করেছে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)। গতকাল শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাজেট-পরবর্তী প্রতিক্রিয়ার সংবাদ সম্মেলন করে ই-ক্যাব এই সুপারিশের দাবি জানায়। এ সময় ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ই-কমার্সকে পুনরায় সংজ্ঞায়িত করাসহ আরো কিছু দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা।

সম্মেলনে বক্তারা বলেন, আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ই-কমার্সের মধ্যে ভার্চুয়াল বিজনেস ও অনলাইন পণ্য বিক্রয় বিষয় দুটিকে আলাদাভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। সেখানে ভার্চুয়াল বিজনেসকে ইন্টারনেটে বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়কে বোঝানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ হারে মূসক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। আর অনলাইনে পণ্য বিক্রয় বলতে ওইসব প্রতিষ্ঠানকে বোঝায়, যাদের নির্দিষ্ট কোনো বিক্রয়কেন্দ্র নেই। অনলাইনই তাদের ব্যবসাকেন্দ্র।

বাজেটে দেওয়া এসব সংজ্ঞার বিপরীতে ই-ক্যাব প্রস্তাবিত সংজ্ঞাটি হলো- যাদের নিজস্ব কোনো বিক্রয়কেন্দ্র নেই তারা ইলেকট্রনিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় ও আর্থিক লেনদেনের জন্য ক্যাশ অন ডেলিভারি পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে। আর যারা নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র থেকেও অনলাইনে ক্রয়-বিক্রয় ও আর্থিক লেনদেন করে তারা বা ওইসব প্রতিষ্ঠান ই-কমার্সের অন্তর্গত থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে অনলাইন কেনাকাটাকে নতুন সংজ্ঞায়ন করে ভার্চুয়াল কমার্স নাম দিয়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের কথা বলা হয়েছিল। পরে আবার শোনা যাচ্ছে সেটি ই-কমার্সে আরোপ করা হচ্ছে না। কিন্তু তারপরও আমরা এখনো বিষয়টি নিয়ে সংশয়ে আছি। এমন অবস্থায় অনলাইন কেনাকাটায় বিশেষ করে ই-কমার্সে ভ্যাট থাকছে কি না সেটা নিয়ে পরিষ্কার বক্তব্য প্রত্যাশা করছে ই-ক্যাব।

এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি যে এই খাতে ভ্যাট থাকছে না। তবে নতুন যে সংজ্ঞায়ন করা হয়েছে ভার্চুয়াল কমার্স, সেটা নিয়ে এখনো সংশয় থেকেই যাচ্ছে। এটিও স্পষ্ট করা দরকার বলে জানান তিনি।

ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এর ব্যবসাকে অনলাইনভিত্তিক করে ফেলা, যেটার কাজ করে চলেছে ই-ক্যাব। আমরা চাই সরকারের সঙ্গে মিলে কাজ করতে। তাই এই খাতে যদি ভ্যাট আরোপ করে অঙ্কুরেই দমিয়ে দেওয়া হয় তবে ব্যবসা খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

তিনি বলেন, আমরা গত তিন বছর থেকে ই-কমার্সকে আইটিইএসে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছি। আশা করছি সামনে এটি আইটিইএসে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

বেসিস ই-কমার্স স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ কামাল বলেন, এভাবে প্রতিবার বাজেটের পর আমাদের শোরগোল তুলতে হয়। তখন আবার ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়। আমরা চাই সরকার একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ই-কমার্সে ট্যাক্স হলিডে ঘোষণা করুক। এটা আমাদের অন্যতম একটা দাবি থাকছে সরকারের কাছে।

ই-ক্যাবের নেতারা আরো বলেন, এদেশে অনলাইন ব্যবসার প্রসার যতটুকু হয়েছে তার জন্য সরকারের সহায়তার অবদানই বেশি। কিন্তু সম্পূর্ণভাবে এই খাতটিকে দাঁড় করাতে ও জনপ্রিয় করতে ব্যবসায়ীদের উৎসাহ দেওয়ার লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদি বা কমপক্ষে আগামী ১০ বছর ই-কমার্সের ওপর মূসক পুরোপুরি অব্যাহতি দিতে হবে। কেননা এখনো অনলাইনে ব্যবসা শুধু শহরকেন্দ্রিক হয়ে আছে। এটাকে দেশব্যপী ছড়িয়ে না দিলে ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সহসভাপতি রেজওয়ানুল হক জামি, জয়েন্ট সেক্রেটারি নাসিমা আক্তার নিশা, ফাইন্যান্স সেক্রেটারি  মোহাম্মদ আবদুল হক অনু ও করপোরেট অ্যাফেয়ার্স ডিরেক্টর আশিষ চক্রবর্তী।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads