ফিচার

আশা জাগাচ্ছে চা শিল্প

  • এস এম মুকুল
  • প্রকাশিত ২ জানুয়ারি, ২০১৯

চা এদেশের মানুষের ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে। এখানে ছোট থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষ চা পান করেন। গ্রাম-শহর সবখানেই সমান চাহিদা পণ্যটির। কোল্ড ড্রিংকস কিংবা কফির মতো পানীয়ের চাহিদা শহরে বেশি হলেও তা এখনো চায়ের মতো আপন করে নিতে পারেনি মানুষ। চা চাষের জন্য প্রয়োজন অধিক বৃষ্টিপাত সমৃদ্ধ ঢালু অঞ্চল, অধিক পরিমাণে বৃষ্টিপাত ও তাপের প্রয়োজন হয় বলে বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলই চা চাষের জন্য অধিক উপযুক্ত। বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলের মাটি উন্নত মানের চা উৎপাদনের জন্য বেশ উপযোগী। বাংলাদেশে চা উৎপাদনের বিপরীতে ভোগ বৃদ্ধির হার অন্য দেশগুলোর তুলনায় বেশি। ফলে উৎপাদন বাড়লেও চা আমদানি কমছে না। দেশীয় চাহিদার শতভাগ মিটিয়ে রফতানি বাড়াতে হলে ভালো চা উৎপাদনেও এগিয়ে আসতে হবে।

আমরা সবাই জানি, পানির পর চা হলো বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহূত পানীয়। প্রতিদিন সারা বিশ্বে গড়ে দুই বিলিয়ন কাপ চা পান করা হয়। সজীবতা, স্নিগ্ধতা, প্রশান্তি আর কর্মচাঞ্চল্যের জন্য বিশ্বজুড়ে চায়ের ব্যাপক প্রসার ও জনপ্রিয়তা। ইংরজিতে ঞঊঅ, গ্রিকদেবী থিয়া (ঞযবরধ)-এর নামানুসারে এই নামকরণ করা হয়। বাংলাদেশের চা প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এবং সম্ভাবনাময় একটি শিল্প। চা গাছের বৈজ্ঞানিক নাম ক্যামেলিয়া সিনেনসিস। চা পাতা কার্যত চা গাছের পাতা, পর্ব ও মুকুলের একটি কৃষিজাত পণ্য যা বিভিন্ন উপায়ে প্রস্তুত করা হয়।

 

চায়ের আদি ভূমি

১৬৫০ সালে চীনে বাণিজ্যিকভাবে চায়ের উৎপাদন শুরু হয়। আর ভারতবর্ষে এর চাষ শুরু হয় ১৮১৮ সালে। ১৮৪০ সালে চট্টগ্রামে দেশে প্রথম চা চাষের প্রথা শুরু হয়। সিলেটের চাঁদখানি টিলায় ১৮৫৬ সালের ৪ জানুয়ারি দেশীয় জাতের চা গাছের সন্ধান মেলে। একই সময়ে খাসি ও জৈন্তা পাহাড়েও ‘বন্য প্রজাতির’ চা গাছের সন্ধান পাওয়া যায়। ১৮৫৭ সালে সিলেটের মালনীছড়ায় শুরু হয় বাণিজ্যিক চা-চাষ।

 

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান ও জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা

জাতীয় অর্থনীতিতে চা শিল্পের গুরুত্ব অপরিসীম ও সুদূরপ্রসারী। দারিদ্র্যপীড়িত বাংলাদেশে প্রায় ৭ লাখ লোক চা শিল্পের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। যার মধ্যে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার শ্রমিকই আদিবাসী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। জিডিপিতে চা খাতের অবদান ০.৮১ শতাংশ। আমাদের দেশে বর্তমানে চায়ের প্রায় সোয়া ২ হাজার কোটি টাকার বাজার রয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৫ লাখ লোক চাশিল্পের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। যার মধ্যে প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার শ্রমিকই আদিবাসী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। চা জাতীয় অর্থনীতিতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে প্রতি বছর বাংলাদেশে চা উৎপাদন এক দশমিক ৩৯ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নগরায়ণ এবং মানুষের চা পানের প্রবণতা বৃদ্ধি ও অভ্যাস পরিবর্তনের কারণে অভ্যন্তরীণ ভোগ প্রায় ৪ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

চাহিদার তুলনায় উৎপাদন অপ্রতুল

পাঁচ শতাংশ হারে চায়ের চাহিদা বাড়ছে বলা হলেও প্রকৃত অর্থে মাথাপিছু প্রতি বছর ৯ থেকে ১০ শতাংশ হারে চাহিদা বাড়ছে। এই হিসাবে আগামী পাঁচ বছর পর দেশের চায়ের চাহিদা দাঁড়াবে ১২ কোটি কেজি। দেশে এখনো ১ কোটি ২০ লাখ কেজি চায়ের ঘাটতি আছে। বর্তমানে জনপ্রতি চা পানের পরিমাণ ৫৫০ গ্রাম। আর চাহিদা ৮ কোটি ৮০ লাখ কেজি। ৭ কোটি ৬০ লাখ উৎপাদন হয়। ফলে চাহিদা পূরণে আমাদের চা আমদানি করতে হয়। এসব চা আসে ভারত, কেনিয়া ও চীন থেকে। উৎপাদন রেকর্ড অনুযায়ী, ২০১৬ সালে দেশে ৮ কোটি ৫০ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়েছে যা ২০১৫ সালের চেয়ে ১ কোটি ৭৮ লাখ ১০ হাজার কেজি বেশি। আশা করা হচ্ছে, ভিশন-২০২১ বাস্তবায়ন হলে দেশে চা উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ১০ কোটি কেজি। আর ভিশন-২০২১ বাস্তবায়িত হলে ২ কোটি কেজি চা রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। অবশিষ্ট ৮ কোটি কেজি চা দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে পারবে।

দেশে চা আবাদের এলাকা বাড়লেও উৎপাদনশীলতা সে হারে বাড়েনি। ১৯৭০ সালে দেশে ৪২ হাজার ৬৩৭ হেক্টর জমিতে ৩ কোটি ১৩ লাখ ৮০ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়। ২০১৩ সালে এসে দেখা যায়, মোট ৫৮ হাজার ৭১৯ হেক্টর জমিতে চা উৎপাদন হয়েছে ৬ কোটি ৬২ লাখ ৬০ হাজার কেজি। ২০১৭ সালে বাংলাদেশে ১৬৬টি চা বাগানের প্রায় ৬১ হাজার হেক্টর জমিতে ৭ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়।

বাংলাদেশে চা আবাদের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করে রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, জামালপুর, ময়মনসিংহ, শেরপুর, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইলের মধুপুর, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার মোট ১ লাখ ১ হাজার ৭২৪ হেক্টর ক্ষুদ্রায়তনে চাষযোগ্য জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। চায়ের আদর্শ ছাঁটাই চক্র নির্ধারণ করা হয়েছে। চায়ের উৎপাদন ও গুণগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপযুক্ত টিপিং পদ্ধতি ও চয়ন পালা নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

শিল্পের বিকাশে মহাপরিকল্পনা-২০২৫

দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ এবং রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশের চা শিল্পের উন্নয়নের জন্য কৌশলগত কর্মপরিকল্পনা ‘ভিশন ২০২৫’-এর বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এর আওতায় ২০২৫ সালের মধ্যে বার্ষিক ১০ কোটি কেজি চা উৎপাদনের মাইলফলক অতিক্রমের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্য পূরণের জন্য বৃহদায়তনের বাগানের পাশাপাশি ক্ষুদ্রায়তনের জমিতে চায়ের আবাদ বৃদ্ধিতে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। দেশের সাতটি জেলায় প্রায় এক লাখ হেক্টর জমিতে চা আবাদের লক্ষ্য হাতে নেওয়া হয়েছে। এখানকার আরো ৪ হাজার ৬৯৮ হেক্টর অনাবাদি জমিতে ১ কোটি ২০ লাখ কেজি চা উৎপাদন করা সম্ভব।

চা উৎপাদন এবং রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের ব্যাপক পরিকল্পনা রয়েছে। সরকারের রূপকল্প-২০২১ বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশ চা বোর্ড ৯৬ হাজার ৭৩৫ দশমিক ৭০ লাখ টাকা ব্যয়সাপেক্ষে ১২ বছর মেয়াদি একটি কৌশলগত উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। সরকারের নীতি এবং ভিশন-২০২১-কে সামনে রেখে পরিকল্পনাটি তিন পর্যায়ে ১০টি প্রকল্প প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দেশের চা শিল্পের উৎপাদন বাড়াতে ‘উন্নয়নের পথ নকশা : বাংলাদেশ চা শিল্প’ নামে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে চা বোর্ড। ২০২৫ সালে দেশে চা উৎপাদন বেড়ে দাঁড়াবে ১৪০ মিলিয়ন কেজি। চা বোর্ডের তথ্যে জানা যায়, প্রকল্পটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন লাভ করেছে। প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, বাগান সম্প্রসারণ, নতুন যন্ত্রপাতি ক্রয়, গভীর ও হস্তচালিত নলকূপ স্থাপন, বাগান এলাকায় কূপ খনন, চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ ও সড়ক উন্নয়ন ইত্যাদি। প্রকল্পের আওতায় উন্নত জাতের চা চারা রোপণ করা হবে। ১০ হাজার হেক্টরে চা বাগান সম্প্রসারণ করা হবে। ১৫ হাজার চা শ্রমিকের গৃহ নির্মাণ ও ১৫ হাজার টয়লেট নির্মাণ করা হবে। প্রকল্প এলাকায় ৪৭ কিলোমিটার রাস্তা উন্নয়ন, ৫০টি কালভার্ট ও ৪টি সেতু নির্মাণ করা হবে। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য ‘মাদার ক্লাব’ করা হবে। চায়ের চাষযোগ্য জমির পরিমাণ ১ লাখ ১৫ হাজার ৬২৯ দমমিক ৭৬ হেক্টর থেকে বর্ধিত করারও প্রচেষ্টা চলছে। আশা করা হচ্ছে চা শিল্প উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে চা শিল্পে বিপ্লব ঘটবে। দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রচুর চা রফতানি করা সম্ভব হবে।

উৎপাদনে রেকর্ড সৃষ্টির পথে

চা বোর্ডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে গুণগত মান বাড়িয়ে এ পর্যন্ত ১৮টি উচ্চফলনশীল ক্লোন অবমুক্ত করেছে, যাদের গড় উৎপাদন হেক্টরপ্রতি ৩ হাজার কেজির বেশি। এছাড়া বিটিআরআই থেকে আরো চারটি বাই ক্লোনাল এবং একটি পলি ক্লোনাল বীজ অবমুক্ত করা হয়েছে। চা উৎপাদন ও রফতানিতে একসময় সারা বিশ্বে শীর্ষ পাঁচ দেশের অন্যতম ছিল বাংলাদেশের নামটি। দেশে চা পান করার ব্যাপকতা দ্রুত বাড়লেও উৎপাদনের গতি বাড়েনি। আশার কথা হলো, গত দুই বছরে চা উৎপাদনে বড় অগ্রগতি দেখিয়েছে বাংলাদেশ। এক বছরের ব্যবধানে দেশে চায়ের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ কেজি। জানা গেছে, ভারত ও চীনে হেক্টরপ্রতি চা উৎপাদন দুই হাজার কেজির বেশি। শ্রীলংকা, ভিয়েতনামসহ বিশ্বের বেশকিছু দেশ এক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে এগিয়ে। দেশীয় বাগানগুলোয় হেক্টরপ্রতি চা উৎপাদন দীর্ঘদিন ১ হাজার ২০০ কেজির ঘরে থাকলেও গত বছর তা দেড় হাজার কেজি ছাড়ায়। ২০১৫ সালেও চায়ের হেক্টরপ্রতি গড় উৎপাদন ছিল ১ হাজার ২৭০ কেজি। ২০১৬ সালে এ পরিমাণ বেড়ে রেকর্ড ১ হাজার ৫৮৭ কেজিতে দাঁড়ায়। চা বোর্ডের বার্ষিক চা উৎপাদন প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালের জুন-অক্টোবর সময়ে দেশের ১৬২টি বাগান থেকে গড়ে ১০ মিলিয়ন কেজিরও বেশি চা উৎপাদন হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশে চা উৎপাদন অচিরেই ১০০ মিলিয়ন কেজি ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন চা বোর্ডের কর্মকর্তারা।

 

চা শিল্প বিকাশে নতুন সম্ভাবনা

জাতীয় অর্থনীতিতে শ্রমনিবিড় চা শিল্পখাতটি ব্যাপক অবদান রাখবে এমনটি প্রত্যাশা শিল্পোদ্যোক্তাদের। এই আশা জাগার কারণ স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে চায়ের চাহিদা ও দাম দুই-ই বেড়ে চলেছে। দেশের উত্তরাঞ্চল ও পার্বত্য চট্টগ্রামে বিস্তৃত হচ্ছে চায়ের আবাদ। এমনকি চট্টগ্রামের মিরসাইয়ের পাহাড়-টিলাভূমিতেও চা চাষের সম্ভাবনা  জেগে উঠেছে। বড় কথা হচ্ছে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে চা আবাদ ও উৎপাদন প্রক্রিয়ায়। বাংলাদেশ চা বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তাদের বিবৃতি অনুযায়ী, পরিমিত হারে বৃষ্টিপাত, উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক পদক্ষেপ, নতুন নতুন চা আবাদের এলাকা সম্প্রসারণ, উন্নততর ক্লোন চায়ের চারা লাগানোর হার বৃদ্ধি, সীমিত আকারে হলেও শ্রমিকদের প্রণোদনা প্রদানের ফলে চা উৎপাদন ক্রমেই বাড়ছে। আশার খবরটি হলো গত ১০ বছরে দেশের উত্তরাঞ্চল ও পার্বত্য এলাকায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিসরে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে চায়ের বাড়তি আবাদ ও উৎপাদন করা হয়েছে। সেখানে উন্নততর ক্লোন জাতের চায়ের চারাগাছ লাগানো হয়েছে, ফলনও দিচ্ছে ভালো। আরো আশার খবর, চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের চেষ্টায় বর্তমানে চায়ের ১৮টি উচ্চফলনশীল ক্লোন, চারটি বাই ক্লোনাল ও একটি পলি ক্লোনাল বীজ উদ্ভাবিত হয়েছে, যা অধিক চা উৎপাদনে ভূমিকা রাখছে। পঞ্চগড় জেলাসহ দেশের উত্তরাঞ্চলে যেখানে তামাকের চাষ হতো সেসব এলাকায় এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে বাণিজ্যিকভিত্তিতে চায়ের আবাদ বিস্তৃত হচ্ছে। চায়ের আবাদ বিস্তৃতির ফলে চা শিল্প বিকাশে নতুন সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে। নতুন নতুন এলাকায় গড়ে উঠছে চা বাগান। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশে উৎপাদিত চা দু’দশক আগেও বিশ্বের ২০-২২টি দেশে রফতানি করা হতো। বর্তমানে বিশ্বের ১৭টি চা রফতানিকারক দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৫।

 

সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে

সরকার চা উৎপাদনকারীদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। এসব সহযোগিতা ও সম্ভাবনাকে সঠিকভাবে কাজে লাগালে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করে বিপুল পরিমাণ চা বিদেশে রফতানি করা সম্ভব হবে। চায়ের বাজার ধরে রাখতে হলে আমাদের উচ্চফলনশীল জাতের চা চাষ বাড়াতে হবে। এ খাতের উন্নয়নে ব্যাংক সুদের হার কমানো, আমদানিকে নিরুৎসাহিত, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ, শ্রম অসন্তুষ্টি কমাতে আরো সুবিধা বাড়ানো ও জমি ইজারা নিয়ে বিরোধগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। চা শিল্প শ্রমিকদের উন্নয়নেও নানা কর্মসূচি নিতে হবে। বাড়তি চাহিদা মেটাতে দেশের উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও লালমনিরহাট জেলায় উন্নত মানের চা উৎপাদন বেগবান করতে হবে।

 

 লেখক : অর্থনীতি বিশ্লেষক ও উন্নয়ন গবেষক

 writetomukul36@gmail.com

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads