ক্রিকেটে ‘আনসাং হিরো’ বলে একটা শব্দ আছে। হায়দরাবাদে সাকিবের অবস্থা তেমনই। ভালো খেলেও এখন পর্যন্ত ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেননি একটিও। সতীর্থ উদয় কৌল ও রশিদ খান বেশি উইকেট শিকার করেছেন। এ পর্যন্ত সাকিবের উইকেট ১২টি। ব্যাট হাতেও উজ্জ্বল বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। তাই বার বার সাকিবের প্রশংসায় মেতে উঠছেন দলের মেন্টর ভিভিএস লক্ষ্মণ। এবার জানালেন হায়দরাবাদের অধিনায়ক হওয়ার সামর্থ্য আছে বাংলাদেশের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলনেতার।
আইপিএলের চলতি মৌসুমে মাঠে নামার আগে বিপদে পড়েছিল হায়দরাবাদ। বল টেম্পারিংয়ের অভিযোগে নিয়মিত অধিনায়ক ওয়ার্নারকে বাদ দিতে হয় ফ্র্যাঞ্চাইজিটির। শুরুতে সাকিবের নাম শোনা গেলেও অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পরেন কেইন উইলিয়ামসন। তবে হায়দরাবাদকে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা আছে সাকিবের। এমনটাই জানালেন ভিভিএস লক্ষ্মণ, ‘চলতি মৌসুমে আমরা ডেভিড ওয়ার্নারকে পাব না তা আগে থেকে জানতাম না। তবে আমরা তার বিষয়টি বেশ ভালোভাবে সামলাতে সক্ষম হয়েছি। ভাগ্য ভালো আমাদের দলে উইলিয়ামসন, সাকিব ও ধাওয়ানের মতো নেতাসুলভ ক্রিকেটার রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ওয়ার্নার অধিনায়ক থাকাকালেও সবাই কেইনকে সম্মান করত। এমনকি সাকিবও। সে নিজেও একজন অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও অধিনায়ক। সুতরাং আমাদের হাতে অনেক অপশন ছিল’।
সাকিবকে পেয়ে বেশ ভালোমতোই ভারসাম্য ফিরে পেয়েছে হায়দরাবাদও। নিঃসন্দেহেই এবারের আইপিএলের সেরা বোলিং অ্যাটাক তাদের। কিন্তু বৃহস্পতিবার দলটি প্রমাণ করেছে তাদের ব্যাটিং সামর্থ্যও। ঘরের মাঠ ফিরোজ শাহ কোটলায় টস জিতে হায়দরাবাদের বিপক্ষে ব্যাট করতে নামে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। রিশব পান্তের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে ১৮৭ রান করে তারা। জবাবে ৭ বল ও ৯ উইকেট হাতে রেখে ম্যাচ জেতে সাকিব আল হাসানের দল।
অবশ্য দ্বিতীয় ওভারে দলীয় ১৫ রানে প্রথম উইকেট হারিয়েছিল হায়দরাবাদ। এরপরই শুরু হয় ধাওয়ান-উইলিয়ামসন ম্যাজিক। ৪ ওভার শেষে দলটির সংগ্রহ ছিল ১ উইকেটে ২৯ রান। সেখান থেকে ১১ ওভার শেষে তাদের স্কোর দাঁড়ায় ১০৫ রানে। দুই ব্যাটসম্যানই দিল্লির বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালান। তবে ধাওয়ানের গতি ছিল তুলনামূলক বেশি। তাদের অবিচ্ছিন্ন ১৭৬ রানের জুটিতে ১৮.৫ ওভারে ১ উইকেটে ১৯১ রান তুলে ম্যাচটি জেতে অরেঞ্জ আর্মি।
ধাওয়ান ৫০ বলে ৯টি চার ও ৪ ছয়ে ৯২ রানে অপরাজিত থাকেন। আর ৫৩ বলে ৮৩ রানে অপরাজিত ছিলেন উইলিয়ামসন। এবারের আসরে এটি কিউই অধিনায়কের ষষ্ঠ অর্ধশতক।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে সাকিবের ঘূর্ণিতে পড়ে দিল্লি। ইনিংসে চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে ডিয়ারডেভিলসের ওপেনার পৃথিবী শ’র সাজঘরে ফেরান তিনি।
পরের বলে ইংলিশ ব্যাটসম্যান জেসন রয়কে বোকা বানিয়ে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। শেষ পর্যন্ত চার ওভারে ২৭ রানে এই দুই উইকেটই ছিল তার ঝুলিতে। এরপর রিশব পান্তের ৬৩ বল ১৫ চার ও ৭ ছয়ে সাজানো ১২৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে ৫ উইকেটে ১৮৭ রান করে দিল্লি।
এই জয়ে প্রথম দল হিসেবে প্লে-অফ নিশ্চিত করে হায়দরাবাদ। ১১ ম্যাচে ৯ জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আছে দলটি।
 
                                 
                                 
                                         
                                         
                                         
                                        





