রাজধানীতে দুই বাসের রেষারেষির শিকার হয়ে হাত হারানোর পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনায় রাজীব হাসানের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল আবেদনের ওপর গতকাল সোমবার অধিকতর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার এ সম্পর্কে আদেশ দেওয়ার দিন ধার্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের চার সদস্যের বেঞ্চ। এর আগে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে গতকাল এ বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য ছিল।
শুনানিতে বিআরটিসির আইনজীবী এবিএম বায়েজিদ বলেন, আমরা তো ওইদিন কোনো অপরাধ করিনি। আমাদের বাসটি সিগন্যালে দাঁড়ানো ছিল। ধাবমান যাত্রীবাহী স্বজন পরিবহনের বাসটি বাঁ দিক থেকে ঢুকে ধাক্কা মেরে দুর্ঘটনা ঘটায়।
শুনানিতে স্বজন পরিবহনের পক্ষে সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু বলেন, ঘটনাটি হূদয়বিদারক। আমরা কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের বদলে পাঁচ লাখ টাকা দিতে চাই।
এই বক্তব্যের ঘোর আপত্তি জানিয়ে জনস্বার্থ-বিষয়ক রিট আবেদনকারী রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, হাইকোর্টের আদেশে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা রয়েছে। নিহত রাজীবের পরিবারের জন্য ওই টাকা জমা রাখতে একটি যৌথ ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে।
এ সময় আদালত বলেন, কারো ওপর অবিচার হোক আমরা তা চাই না। হাইকোর্টের আদেশ সংশোধন করতে হবে।
গত ৮ মে রাজীবের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ। ক্ষতিপূরণের এই টাকার অর্ধেক পঞ্চাশ লাখ টাকা আগামী এক মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে বলা হয় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) ও বেসরকারি পরিবহন প্রতিষ্ঠান স্বজন পরিবহনের মালিককে। এর মধ্যে দুটি পরিবহন প্রতিষ্ঠানকে ২৫ লাখ টাকা করে দিতে হবে।
গত ৩ এপ্রিল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিআরটিসির বাসে আরোহী হয়ে ক্লাসে যাচ্ছিলেন রাজীব। দাঁড়িয়ে থাকা বিআরটিসির বাসটিকে বাঁ দিক থেকে ওভারটেক করে স্বজন পরিবহনের বাসটি। এ সময় দুই বাসের প্রবল চাপে রাজীবের হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৬ এপ্রিল মারা যান রাজীব।