ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় কলেজ শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজীবের আকস্মিক মৃত্যুতে ঢাকাসহ সারা দেশে শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলন অবসানে সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ৯ দফা দাবি মেনে নিয়েছে সরকার। দাবি মানার আশ্বাসের পরও আন্দোলনকারীদের ক্ষোভ পুরোপুরি প্রশমিত হয়েছে বলে দেখা যায়নি। গতকাল শুক্রবার বন্ধের দিনে ঢাকার কয়েকটি পয়েন্টে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে। তারা দাবি মানার লিখিত কাগজ চায় সরকারের কাছে। গত কয়েক দিন ধরে পুলিশের সংযত
আচরণে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরকার হার্ডলাইন যেতে চায়নি। শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনে সরকারের ধৈর্যের এ কৌশলকে দুর্বলতা হিসেবে দেখছেন অনেকে। সপ্তাহ ধরে টানা এ ঘটনায় সরকারও আর চুপ না থেকে কৌশলী হওয়ার পথ নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সঙ্কট তীব্র হওয়ার আশঙ্কায় সরকার আন্দোলন থামানোর চেষ্টা নিচ্ছে। দায়িত্বশীল সূত্র থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
সূত্র মতে, আজ শনিবার অথবা কাল রোববার মাঠে দেখা যেতে পারে পুলিশ-র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের।
গোয়েন্দা সংস্থা সূত্র বলছে, শিক্ষক ও অভিভাবকদের প্রতি সরকারের অনুরোধ ছিল, তারা সব দাবি মেনে নিয়েছে, এখন শিক্ষার্থীদের ঘরে ফেরাতে হবে। সরকার ধরেই নিয়েছিল মঙ্গল অথবা বুধবারের মধ্যে শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরবে। কিন্তু ঘটনা ঘটে উল্টো। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার রাজধানীর পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা শহরে ছড়িয়ে পড়ে এ আন্দোলন।
পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা গতকাল মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, আসলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পেছনে অশুভ মহলের উসকানি রয়েছে। কারণ, এসব উদীয়মান তরুণ ছাত্রদের পুলিশ ও সরকারকে প্রতিপক্ষ মনে করার কথা নয়। কিন্তু বাস্তবে তাই ঘটছে। এর পেছনে নিশ্চয়ই কোনো অশুভ শক্তির ইন্ধন রয়েছে। এদিকে পরিবহন শ্রমিকরাও মাঠে নেমেছে। এতে করে শিক্ষার্থী আর পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও আছে। এতে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। যা সরকারের জন্য কল্যাণকর হবে না। ফলে পুলিশকে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাঠে থেকে নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার জন্য ইতোমধ্যে শীর্ষ পর্যায় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গত ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী আবদুল করিম রাজীব ও দিয়া খানম মিম নিহত হয়। এ ঘটনায় দিয়া খানম মিমের বাবা বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন। তাদের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ৯ দফা দাবিতে ৩০ জুলাই থেকে মাঠে নামে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
                                
                                
                                        
                                        
                                        
                                        




