চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ত্রিপুরা পল্লীর চার শিশুর মৃত্যু হয়েছে হাম ভাইরাসে। গত রোববার আক্রান্ত ছয় শিশু থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানোর পর গতকাল সোমবার দুপুরে প্রতিবেদন দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। সেখানে চারজনের দেহে প্রমাণ মেলে এ ভাইরাসের। বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান বলেন, ওই চার শিশু অজ্ঞাত রোগে নয়, ভাইরাসজনিত হাম রোগে মারা গেছে।
এদিকে আক্রান্ত ২১ শিশুর মধ্যে তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজে (বিআইটিআইডি) ভর্তি করা হয়েছে। গত রোববার সকালে তাদের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাটে অবস্থিত এ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গতকাল সোমবার হাটহাজারীতে এসেছে ঢাকা রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) চার সদস্যের গবেষক দল।
সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান বলেন, রোববার রাতে জরুরি ভিত্তিতে আক্রান্ত ছয় শিশু থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য। পরে গতকাল দুপুরে প্রতিবেদন পাই আমরা। সেখানে ছয় শিশুর মধ্যে চারজনের দেহে মিলেছে হাম ভাইরাস।
হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবু সৈয়দ মো. ইমতিয়াজ হোসেন জানান, হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ত্রিপুরা পল্লীর বাকি শিশুদের অবস্থা এখন ভালোর দিকে। তাদের শরীরে জ্বরের পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট এবং র্যাশের চিহ্ন দেখা গেছে। পুষ্টিহীনতায়ও ভুগছে তারা।
হাটহাজারীর ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের সোনাইরকূল ত্রিপুরা পল্লীর সর্দার ধন কুমার ত্রিপুরা জানান, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ৫২টি পরিবার এ পাড়ায় বসবাস করে। এদের কেউই তেমন লেখাপড়া জানে না। তারা পাহাড় থেকে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহের পর বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। পাহাড়ি ঝিরির পানি দিয়ে চলে রান্না ও গোসলের কাজ। তিনি আরো জানান, অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে চার শিশু মারা যাওয়ার পরও কোনো জনপ্রতিনিধি তাদের খোঁজ নিতে আসেনি।