কক্সবাজারের টেকনাফে এসএসসি পরীক্ষায় প্রথম দিনে (৩ ফেব্রুয়ারি) বাংলা বিষয়ে ২০১৮ সালের পুরাতন প্রশ্ন দিয়ে সরকারি এজাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২০ পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার খবর চাউর হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্টরা ধামাচাপা দিয়ে রাখলেও ৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় কয়েকজন পরীক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেন।
এই ঘটনার সত্যতা মেলায় কেন্দ্রসচিব উপজেলা একাডেমি সুপারভাইজার নুরুল আবছার, হল সুপার ছব্বির আহমদ ও হল পর্যবেক্ষক আবদুল আজিজকে বহিস্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
ইউএনও বলেন, গতকাল রাতে বিষয়টি শুনে, কেন্দ্র সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের কারন দর্শনোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং তিন জনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২০ জন পরীক্ষার্থীর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা বোর্ডে পত্র প্রেরন করা হয়েছে।
জানা যায়, এসএসসি পরিক্ষার টেকনাফ এজাহার সরকারী গার্লস হাইস্কুল কেন্দ্রে (কেন্দ্র নং-২) ১৪ নম্বর কক্ষে পরিক্ষার প্রথম দিন ৩ ফেব্রুয়ারী নিয়মিত ২০ পরিক্ষার্থী ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্র নিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাদের ২০১৯-২০ সালের সিলেবাসে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। তার মধ্যে সাবরাং হাইস্কুলের ১৬ জন এবং নয়াবাজার হাইস্কুলের ৪ জন। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে জানাজানি হয়নি। পরে পরিক্ষার্থীদের আলোচনায় বিষয়টি প্রকাশ পায়। পরের দিন বুধবার এ ব্যাপারে বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থীর অভিবাবক বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করে। এই কেন্দ্রে মোট ৫১৬ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক বলেন, একটি কেন্দ্রের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিতরণে তিনটি স্তর থাকে। এরমধ্যে আছে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পরীক্ষা কমিটি এবং কক্ষ পরিদর্শক। এই তিন স্তরে দায়িত্বে অবহেলার কারনে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এদিকে বিষয়টি জানার পর পরীক্ষার্থীদের মনোবল ভেঙে পড়েছেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে খুবই চিন্তিত। তবে বিষয়টি ইউএনওকে জানানো হলে, তিনি এ বিষয়ে উৎকন্ঠায় না থেকে বাকি পরীক্ষাগুলো টিকমত দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে বলেছেন।
সাবরাং স্কুলের মফজল আহমদ নামক এক অভিবাবক বলেন, আমি খুব গরীব মানুষ। খেয়ে না খেয়ে চার সন্তানদের লেখা পড়া করাচ্ছি। তার মধ্যে এক মেয়ে চলতি এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। কিন্তু প্রথম দিনের পরীক্ষায় ভুল প্রশ্নপত্রে দেওয়ায় এখন খুব কান্নাকাটি করছে। জানিনা সামনে পরীক্ষায় কি হয় ওর। এ ধরনের ভুল মানুষের স্বপ্নকে ভেঙে চুরমার করে দেওয়ার মতো।
এ প্রসঙ্গে অব্যাহতি প্রাপ্ত হল সুপার নুরুল আবছার বলেন, ভুলবসত পুরাতন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানার পরপর সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।