হিজল-করচ হাওরের রক্ষাকবচ

হিজল-করচ গাছ

সংগৃহীত ছবি

জীব ও পরিবেশ

হিজল-করচ হাওরের রক্ষাকবচ

  • এস এম মুকুল
  • প্রকাশিত ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

হিজল-করচ গাছ হাওরের আফাল মোকাবেলায় প্রাকৃতিক ঢালস্বরূপ। হাওরের পানিতে ভেসে থাকা দ্বীপসম ছোট ছোট গ্রাম বর্ষায় উত্তাল ঢেউ বা আফালের তাণ্ডবে ভেঙে পানিতে বিলীন হয়ে যায়। প্রকৃতির এই নির্মম লীলাখেলায় হাওরবাসীর জীবনযুদ্ধ যেন চিরকালের। গ্রামের ভিটেমাটি রক্ষায় গ্রামবাসী গ্রামের সামনে পেছনে পাশে যেদিক থেকে ঢেউ আঘাত হানে সেদিকজুড়ে প্রাকৃতিক ঢাল হিসেবে হিজল-করচের গাছ লাগান যাতে ঢেউ বাধাগ্রস্ত হয়ে দুর্বল হয়ে ভিটেমাটিতে কম জোরে আঘাত হানতে পারে। এ ছাড়া গ্রামরক্ষায় প্রয়োজনীয় বাঁধ তো দিতেই হয়। জনশ্রুতি আছে, ‘হিজল-করচ-আড়াং বন, হাকালুকির মূলধন’। টাঙ্গুয়া, হাকালুকিসহ দেশের উত্তর-পূর্বাংশের সমগ্র হাওরাঞ্চলে হিজল-করচ গাছ অতি সুপরিচিত। জানা যায়, এক সময় হাওর এলাকার প্লাবনভূমি, খাল-বিল-নদীর পাশে এবং বসতবাড়ির আশেপাশে প্রচুর পরিমাণে করচের গাছ ছিল। দিন দিন করচ গাছ কেটে উজাড় করা হয়েছে। তবে লোকালয়ের আশেপাশে এখনো অনেক করচ গাছ রয়েছে। সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলার বিভিন্ন এলাকায় এ প্রজাতিটির আধিক্য এখনো লক্ষণীয়।

হিজল-করচ সখাসখি : বর্ষা-হেমন্তে হিজল-করচের ছায়া হাওরের জলে মায়াবী ছায়া ফেলে। সুন্দরবনের পর দেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট এলাকা টাঙ্গুয়ার হাওর। টাঙ্গুয়ার হাওরের হিজল-করচ হলো জোড়া বাঁধন বা সখাসখি। অতিথি পাখির পরেই টাঙ্গুয়ার হাওরের অন্যতম আকর্ষণ হিজল-করচ। টাঙ্গুয়ার হাওরে আছে দেশের অন্যতম বড় হিজল-করচের বাগান। নয় কুড়ি কান্দার ছয় কুড়ি বিলখ্যাত এ হাওরের জঙ্গল কান্দায় সারি সারি লাখো হিজল বৃক্ষ। জানা গেছে, হাকালুকি হাওরের পূর্বের পরিবেশ ফিরিয়ে আনা, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব রোধ করা। মিঠাপানির মৎস্য প্রজননকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হাকালুকিতে মাছের নিরাপদ বিচরণক্ষেত্র ও প্রজননক্ষেত্র  তৈরি করার লক্ষ্যে হাকালুকি হাওরে হিজল-করচের বাগান সৃজনের লক্ষ্যে লক্ষাধিক গাছ লাগানো হয়েছে। এর ফলে হাওর এলাকার মানুষ এবং প্রকৃতি ফিরে পাবে অতীত ঐতিহ্য। সৃষ্টি হবে অতিথি পাখি, মাছ আর বন্যপ্রাণীর অভয়াশ্রম। এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে গেলে নতুন সৃজিত হিজল-করচের গাছগুলো দ্রুত বেড়ে ওঠার দৃশ্য চোখে পড়বে। হিজল-করচের বাগানে অতিথি পাখি আরো বেশি আসবে। বর্ষাকালে হাওর আর অরক্ষিত থাকবে না। কেউ এই হিজল-করচের বাগানে ক্ষতিকর জাল টেনে মাছ শিকার করতে পারবে না। ফলে আবার হাওরে বড় বড় মাছ হবে। নিজেদের স্বার্থে হিজল-করচ গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে হাওরবাসীর মাঝে সচেতনতা বাড়লেও বিভিন্ন স্থানে নতুন গাছ না লাগানো, নির্বিচারে গাছ কাটার কারণে হিজল-করচের বাগান সঙ্কুচিত হয়েছে। অযত্ন আর অবহেলায় হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির বিপর্যয়ের ঢাল এই বৃক্ষরাজি। স্থানীয়দের মতে, নার্সারিতে চারা উৎপাদন করে পরিকল্পিতভাবে রোপণ করলে হাওরে হিজল গাছ বনায়ন তৈরিতে সহায়ক হবে। হাওরের চিরচেনা সবুজ রূপ ও জীববৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনতে হিজল গাছ এখন থেকেই পরিকল্পিতভাবে লাগাতে হবে।

 

হিজল গাছ : হাওরের পানির অন্যতম আকর্ষণ হিজল গাছ। বিভিন্ন হাওরে হিজল গাছ বা হিজল গাছের বাগান দেখা যায়। হাওরে হিজল গাছ প্রাকৃতিকভাবেই জন্ম নেয়। এই গাছ নানাভাবে হাওরের জীববৈচিত্র্যের সমৃদ্ধি ও উপকার করে। হিজল গাছের প্রাণশক্তি প্রবল। বন্যার পানি কিংবা তীব্র খরাতেও টিকে থাকে। এমনকি পানির নিচে কয়েক মাস নিমজ্জিত থাকলেও হিজল গাছ বেঁচে থাকে। তাই হাওর অঞ্চলে এ গাছের ডাল মাছের অভয়রাণ্য তৈরিতে ব্যবহূত হয়। হিজল ফুল শেষ হলে গাছে ফল আসে। ফল তিতা ও বিষাক্ত, দেখতে অনেকটা হরীতকীর মতো। হিজলের বিষাক্ত অংশ হলো ফল, যা মারাত্মক বমনকারক। হিজলের কাঠ নরম, সাদা বর্ণের, উজ্জ্বল, মসৃণ ও টেকসই। পানিতে নষ্ট হয় না বলে নৌযান তৈরিতে ব্যবহূত হয়। জ্বালানি হিসেবেও এর ব্যবহার ব্যাপক। এর বাকল থেকে ট্যানিন পাওয়া যায়। হিজল ফুল ফোটে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে। হালকা গোলাপি রঙে হিজল ফুল দেখতে খুবই সুন্দর। গভীর রাতে ফুল ফোটে, সকালে ঝরে যায়। ফুলে এক ধরনের মিষ্টি মাদকতাময় গন্ধ আছে। হিজলতলায় সকালে গেলে মনে হবে গোলাপি বিছানা পাতা। হাওরের পানির ওপর পড়া হিজল ফুলের অপূর্ব শোভা নয়নাভিরাম বটে।

অনেক সাহিত্যিকই হিজলের ঘ্রাণে বিভোর হয়েছেন। প্রেমিক কবি কাজী নজরুল ইসলামের হিজলের গান- ‘হিজল বিছানো বন পথ দিয়া/রাঙায়ে চরণ আসিবে গো প্রিয়া।’ এমন সৌন্দর্য ও ফুলের ঘ্রাণ পাওয়া যায় সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে দেশের সবচেয়ে বড় হিজল-করচের বাগ। টাঙ্গুয়ার হাওরে নদীর তীর, জাঙ্গাল ও কান্দায় রয়েছে অসংখ্য হিজল গাছ। সংস্কৃত নাম নিচুল, বাংলায় ‘নদী ক্রান্ত’, ‘জলন্ত’, ‘কার্ম্মক’ ও ‘দীর্ঘ পত্রক’। প্রাকৃতিকভাবে বীজ থেকে হিজল গাছের জন্ম হয়। ১০ থেকে ১৫ মিটার উচ্চতার জলসহিষ্ণু বৃক্ষ বাঁচে বহুদিন। হিজলের ডালপালা মাছের অভয়ারণ্য তৈরিতে ব্যবহূত হয়। হিজল গাছের রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ। বাংলাদেশ ছাড়া এই গাছ মালয়েশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ায় জন্মে। টাঙ্গুয়ার নদীর তীর, জাঙ্গাল ও কান্দায় রয়েছে অসংখ্য হিজল গাছ। এখানে দেশ-বিদেশ থেকে পরিযায়ী পাখিরা আসে। শীতে কয়েক মাইলজুড়ে শোনা যায় পাখির কলতান। হিজলের ঝুলন্ত ডাঁটায় ঝুলে থাকা ফুল প্রকৃতির শোভা বাড়ায়। সকালে ফুল ছড়ানো হিজলতলায় হাঁটে অনেক পাখি। শীত মৌসুমসহ বারো মাস পাখি থাকে হিজল গাছে। হিজলের ডালপাতা মাছের অভয়ারণ্য তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। হিজলের পাতা বা ডাল মাছের উত্তম খাদ্য।

করচ গাছ : চিরসবুজ বৃক্ষ করচ। ইংরেজি নাম গরষষবঃঃরধ ঢ়রহহধঃধ; বৈজ্ঞানিক নাম চড়হমধসরধ ঢ়রহহধঃধ। করচ ঘন ডালপালাবিশিষ্ট বহুবর্ষজীবী বৃক্ষ। বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার ও নেপালে জন্মে। করচের তেল বায়োডিজেল হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে বলে বিস্তর গবেষণা চলছে। এপ্রিলে করচের ফুল ফোটে। সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে দেশের সবচেয়ে বড় হিজল-করচের বাগ। শুধু টাঙ্গুয়া নয়, জেলার ১৩৩টি ছোটবড় হাওরে কমবেশি প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া হিজল-করচের গাছ রয়েছে। জলের গাছ করচও সাহিত্যে জায়গা করে নিয়েছে। করচের তেল বায়োডিজেল হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব বলে জানা গেছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও এ তেল কেরোসিনের পরিবর্তে কুপি জ্বালানো, রান্নাবান্না, পাম্প মেশিন চালানো, পাওয়ার ট্রিলার ও ট্রাক্টর চালানো; বাস, ট্রাক ও জেনারেটর চালানো ইত্যাদি কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। করচের তেল থেকে বায়ো-ডিজেল উৎপাদন হতে পারে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। করচের তেল জ্বালানি, লুব্রিক্যান্ট, সাবান কারখানা, চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং পেইন্টিংয়ের কাজে ব্যবহূত হয়। বাতের ব্যথা, চর্মরোগের ওষুধ হিসেবে এর তেল ব্যবহার হয়ে থাকে। করচের তেল এবং শুকনো পাতা পোকামাকড় দমনের জন্য ব্যবহূত হয়। করচের খৈল পোল্ট্রি ফিড হিসেবে ব্যবহার হয়। এ ছাড়া খৈল মাটিতে প্রয়োগ করলে মাটির উর্বরতা বাড়ে এবং নেমাটোডের বিরুদ্ধে কাজ করে। এ ছাড়া বায়োগ্যাস উৎপাদনের জন্য খৈল গোবরের চেয়ে উত্তম উপাদান বলে অনেকের অভিমত।

পথ দেখালেন আবদুল হাফিজ : আফালের তাণ্ডব থেকে গ্রামরক্ষায় এই হিজল-করচের ঢাল তৈরির ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়ে অনুস্মরণীয় হয়ে আছেন হাওরাঞ্চলেরই একজন মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাফিজ। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা শহর থেকে নৌকায় নলুয়ার হাওর পেরিয়ে ভুরাখালী গ্রামের বাসিন্দা তিনি। জানা যায়, এই গ্রামেই জন্মেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক প্রয়াত আবদুস সামাদ আজাদ। তারই ভাতিজা আবদুল হাফিজ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৪০ বছর আগে আফালকে প্রাকৃতিকভাবে মোকাবেলার চেষ্টায় মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাফিজ গ্রামের চারদিকে হাওরকে বেষ্টনী করে দুই শতাধিক হিজল-করচ গাছ লাগান। সময় পরিক্রমায় ভুরাখালী গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাফিজের সেই হিজল-করচ গাছ বর্ষায় তীব্র আফালের  (ঢেউ) কবল থেকে রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করেছে। জানা যায়, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ শেষে বাড়ি ফেরেন আবদুল হাফিজ। পরের বছর সুনামগঞ্জে প্রবল বন্যায় হাওরে আফালের তাণ্ডবে ভিটেমাটি রক্ষা করাই কঠিন হয়ে পড়ে। সেই থেকে তার আফাল বধের ভাবনা শুরু। অনেক ভেবেচিন্তে পরবর্তী বর্ষা আসার আগেই তিনি কিছু হিজল-করচের চারা লাগিয়ে দেন হাওরপাড়ে। পাশাপাশি অন্যদের কেউ উৎসাহ দিতে থাকেন গ্রামরক্ষায় হিজল-করচ রোপণ আন্দোলনে শরিক হতে। এভাবে প্রায় ১০ বছর হিজল-করচ লাগিয়ে প্রকৃতির বিপর্যয় ঠেকাতে অবিস্মরণীয় প্রাকৃতিক ঢাল তৈরি করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। মুক্তিযোদ্ধা হাফিজের এই চেষ্ট বৃথা যায়নি। এর প্রতিফলন শুধু তার গ্রামে নয় উপজেলা জগন্নাথপুরের বেতাউকা, গাদিয়ালা, নোয়াগাঁও, নলুয়া নোয়াকান্দা, হরিনাকান্দি, রাসনাগাঁও গ্রামসহ দিরাই উপজেলার কদমতলী, রাজনগর গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে। তার দেখানো পথে অন্য গ্রামগুলো রক্ষায় হিজল-করচের বেষ্টনী ঢাল তৈরি করেছেন গ্রামবাসীরা। দূর থেকে চোখে পড়বে সারি সারি হিজল-করচ গাছগাছালি। গ্রামগুলোতে লাগানো সারি সারি হিজল-করচ যেন তারই  সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

হিজল প্রেমিক জয়নাল আবেদীন : হাওরের সবুজ বিপ্লবের নায়ক জয়নাল আবেদীন। গাছপালার প্রতি ছিল তার অপরিসীম মমতা। গাছ লাগাতেই তিনি বেশি পছন্দ করতেন। হাওরাঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছিলেন কয়েকটি গুরুতর সমস্যায়। বর্ষা এলেই আমূল বদলে যায় এখানকার দৃশ্যপট। ঢেউয়ের তাণ্ডবে প্রতিনিয়ত ভাঙতে থাকে বাড়িঘর। এটি ছিল প্রতিবছরের নিয়মিত ঘটনা। প্রকৃতিপ্রেমী মানবদরদি জয়নাল আবেদীন গ্রামবাসীকে নিয়ে বের করলেন ঢেউয়ের তাণ্ডব থেকে স্থায়ীভাবে বাড়িঘর বাঁচানোর সূত্রসন্ধান। শক্ত শিকড় বাকড়ের জলসহিষ্ণু গাছপালাই এর একমাত্র সমাধান। অভিজ্ঞতা বিনিময়ে তাদের সামনে একটি সমাধান বের হয়ে আসে। সমাধানের নাম হিজল-করচ। কিছু দিন পর স্থানীয়দের এই ভাবনার সঙ্গে যুক্ত হলো আরেকটি নতুন মাত্রা। এসব গাছের একাধিক উপযোগিতার মধ্যে তারা জ্বালানি সংগ্রহের গুরুত্বও উপলব্ধি করতে পারলেন। শুধু হিজল ও করচ লাগালেই একসঙ্গে অনেক সমস্যার সমাধান মিলবে। বাদাঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন। স্থানীয়ভাবে চারাগুলো সংগ্রহ করে তিনি ১৯৮৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ১৩ বছর টাঙ্গুয়ার হাওর এলাকায় ৯০ হাজার করচ গাছ লাগান। বেশকিছু হিজল গাছও লাগান। গাছ লাগিয়ে গাছের পুরো যত্ন-আত্তির দায়িত্বও নিজের কাঁধে নেন। শুকনো মৌসুমে নিজেই গাছে পানি দিতেন। একটানা ১৩ বছর তিনি সত্যিকার অর্থেই অসাধ্য সাধন করেছেন। প্রাকৃতি সুরক্ষার জন্য হিজল-করচ বাগের সেই নায়ক বেঁচে নেই তবে রয়ে গেছে তার প্রকৃতিবান্ধব অমর কীর্তি।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads