ভাগ্যের অপার সহায়, নাহলে কী মর্মান্তিক ঘটনার শিকার হতো বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা। ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে যখন গোলাগুলি চলছে, তখন বাংলাদেশ দলের বাস মসজিদ থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে। মিনিট পাঁচেক আগে মসজিদে পৌঁছালে ঘটত নির্মম ঘটনা। হামলার পর ইতোমধ্যে বাতিল করা হয়েছে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজের শেষ টেস্ট। ফ্লাইট সূচি ও টিকেট মিলিয়ে যত দ্রুত সম্ভব দল দেশে ফিরবে, নিশ্চিত করেছেন দলের ম্যানেজার খালেদ মাসুদ পাইলট।
ঘটনার বিবরণ পাইলট দিয়েছেন এক ভিডিও বার্তায়। যেখানে তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই সৌভাগ্যবান, আমরা বাসে ১৭ জনের মতো ছিলাম। দুজন ক্রিকেটার শুধু হোটেলে ছিল, বাকি সবাই নামাজ পড়তে যাচ্ছিলাম। আমরা খুবই কাছে ছিলাম। মসজিদ দেখতে পাচ্ছিলাম কাছ থেকে, খুব বেশি হলে ৫০ গজের মতো দূরে ছিলাম। খুবই ভাগ্য ভালো যে, ৩-৪ মিনিট আগে চলে এলেও হয়তো মসজিদের ভেতরে থাকতাম। বিশাল কিছু, ভয়ানক ঘটনা ঘটে যেতে পারত।’
তিনি আরো বলেন, ‘শুকরিয়া আদায় করব যে আমরা ওই জায়গায় ছিলাম না। আমরা ভিডিওর মতো দেখছিলাম, সিনেমায় যেমন দেখা যায়, বাসের ভেতর থেকে দেখছিলাম বেশকিছু মানুষ রক্তাক্ত অবস্থায় বেরিয়ে আসছে। প্রায় ৮-১০ মিনিট আমরা বাসের ভেতরই ছিলাম। মাথা নিচু করে ছিল সবাই, যাতে কোনো গুলি এসে না লাগে।’
ঘটনার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ক্রিকেটাররা। যেসব ছবি সংবাদমাধ্যমে আসছে, দেখা যাচ্ছে ক্রিকেটারদের চেহারায় আতঙ্কের ছাপ। ম্যানেজার জানান, ক্রিকেটারদের মানসিকতায় গভীর ছাপ ফেলেছে এই ঘটনা। তিনি বলেন, ‘এটা খুবই স্বাভাবিক, সামনে যখন এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে, সরাসরি দেখছেন রক্তাক্ত মানুষ বেরিয়ে আসছে, এসব দেখে যে কারো ভেঙে পড়ার কথা। নিজের গায়েও লাগবে কি না, কেউ নিশ্চিত ছিল না ওই মুহূর্তে। ক্রিকেটাররা বাসের ভেতর অনেকেই কান্নাকাটি করেছে, কী করলে বেরিয়ে আসতে পারি, এসব কথা হয়েছে। খুবই কঠিন ছিল। এসব তো মানসিকতার ওপর প্রভাব ফেলে। ম্যানেজার হিসেবে চেষ্টা করেছি সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে ড্রেসিং রুমে ফিরিয়ে আনতে।’