রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান মামলার আট আসামিকে ঢাকার আদালতে আনা হয়েছে। তাদেরকে রাখা হয়েছে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায়। আজ বুধবার সকাল ১০ টা ২৩ মিনিটে তাদেরকে আদালতে আনা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার ওসি মঈনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান দুপুর ১২টার দিকে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার রায় ঘোষণা করবেন।
রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আদালত চত্বরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। র্যাব ও পুলিশের সমন্বয়ে কয়েক স্তরের নিরাপত্তায় ঢাকা আদালত এলাকা।
এছাড়া আদালতের আশপাশের এলাকায়ও সতর্ক অবস্থানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। রায়সাহেব বাজার মোড় থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পুরো সড়কে বাড়তি নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে পুলিশ। সাদা পোশাকেও তৎপর রয়েছেন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এর আগে ৮ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয়। একই বছরের ২৩ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের জিআর শাখায় মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে ২৬ জুলাই সিএমএম আদালত মামলাটি ট্রাইব্যুনালে বদলির আদেশ দেন। অভিযোগপত্রে নাম থাকা ২১ আসামির মধ্যে ১৩ জন মারা যাওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। নিহত ১৩ জনের মধ্যে ৮ জন বিভিন্ন অভিযানে এবং ৫ জন ঘটনাস্থলে নিহত হয়। অভিযোগপত্রের ৮ আসামি হলো- হামলার মূল সমন্বয়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা, অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আবদুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ। তারা সবাই কারাগারে।
ঘটনাস্থলে নিহত ৫ আসামি হলো- রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাস ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল। আর বিভিন্ন জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের সময় নিহত ৮ আসামি হলো- তামিম চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মারজান, তানভীর কাদেরী, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ, রায়হান কবির তারেক, সারোয়ার জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২১ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। এ সময় তাদের গুলিতে দুই পুলিশ সদস্য নিহত হন। পরে অভিযানে ৫ জঙ্গি নিহত হয়।