নিজস্ব প্রতিবেদক
হাসিনার সরকারের পতনের পর অস্থিরতা শুরু হয় দেশের বিভিন্ন সেক্টরে। বাদ যায়টি স্বাস্থ্যসেবা খাতেও। চিকিৎসকসহ খাত সংশ্লিষ্টদের নানা দাবিতে এক ধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় স্বাস্থ্যখাতে। স্বাস্থ্যখাত সংস্কার ও নানা দাবিতে সোচ্চার সংগঠনগুলোর মধ্যে অন্যতম স্বঘোষিত বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন।
অ্যাডহক, এনক্যাডারমেন্টসহ স্বাস্থ্যখাতের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছে সংগঠনটি। তবে সরকারি চাকরিজীবী চিকিৎসকদের এ সংগঠনটির বিরুদ্ধে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সমর্থক চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে। চিকিৎসকদের নানা মহল থেকে দাবি করা হচ্ছে, বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে সক্রিয় হয়েছে স্বাচিপপন্থী চিকিৎসকরা। সংগঠনটি নানা কর্মসূচির মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতে নৈরাজ্য ও দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠছে। সাধারণ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বাস্থ্যখাতে শহীদ মিনারে মানববন্ধন সহ গোপনে শাটডাউন ঘোষণা করতেও বিভিন্ন গ্রুপে সক্রিয় তারা।
অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার সময়ে স্বাস্থ্যখাতের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান দলীয়করণ করা হয়েছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদে স্বাচিপ নেতাকর্মীদের বাইরে কাউকে পদায়ন করা হয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৭ জুলাই ঘোষিত বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের নতুন আহ্বায়ক কমিটিতেও ঠাঁই পেয়েছে স্বাচিপপন্থী চিকিৎসক। অনুসন্ধানেও এ অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অন্যতম অপারেশন প্লান সিবিএইচসি'র প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা.হাবিবুর রহমান বিগত সরকারের আমলে কেরানীগঞ্জ, ডিজিএইচএস এর লোভনীয় পদে থেকে সারা বাংলাদেশে পরিভ্রমণ, পরিব্রজন করেছেন, অথচ এখন উনিও বঞ্চিত, শোষিত ও ক্ষতিগ্রস্ত!তার আগে এসিআর সেকশনে সহকারী পরিচালক ছিলেন, তার আগে কেরানীগঞ্জে দীর্ঘদিন আরএমও দায়িত্বে ছিলেন। কোথায় উনি বঞ্চিত??? একজন পলিটিকাল নেতাও তো এত লম্বা সময় ঢাকা বা তার নিকটবর্তী ক্রিম পোস্টে থাকতে পারে নাই!উনি এ্যডহক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ক্যাডার অফিসারদের উস্কানিদাতা হিসেবে এবং উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বিভিন্ন মহলের কাছে পোল্টিবাজ হিসেবে পরিচিত।
এছাড়াও ডাঃ আসিফ মাহমুদ সহ উনার দুর্নীতির সখ্যতা সিবিএইচসি তে আলোচিত।
আহ্বায়ক কমিটি ও স্বাচিপ সংশ্লিষ্টতা
অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ শীর্ষ ১৬ সদস্যের ১২ জনেরই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগ ও স্বাচিপের যোগসূত্র রয়েছে। স্বাস্থ্য ক্যাডারের এসব চিকিৎসকের স্বাচিপের বিভিন্ন ইউনিট কমিটি, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে সখ্যতা এবং ছাত্র আন্দোলন চলাকালে চিকিৎসা সেবা না দিয়ে শান্তি সমাবেশে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, সংগঠনটির আহ্বায়ক ডা. মোহাম্মদ নেয়ামত হোসেন আওয়ামী লীগের সভায় নেতাদের সঙ্গে অতিথির আসনে বসে খাওয়া দাওয়া ও খোশগল্প করছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতেন বলে জানা গেছে। ২৪ তম বিসিএসের এই কর্মকর্তা দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিওনেটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।আওয়ামী লীগের সভায় নেতাদের সঙ্গে বসে খাওয়া দাওয়া ও খোশগল্প করছেন ডা. মোহাম্মদ নেয়ামত হোসেন।এটা তার প্রমোশন পোস্ট। ইদানিং তিনি তার স্ত্রী উপসচিব (স্বাস্থ্য) এর ক্ষমতা নিয়ে সবাইকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। বিগত সরকারের সময় সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ছিলেন।
সদস্য সচিব ডা. উম্মে তানিয়া নাসরিন ২৮তম বিসিএসের একজন কর্মকর্তা,৯ম গ্রেডের একজন কর্মকর্তা হয়েও অনেকদিন যাবৎ ৬ষ্ঠ গ্রেডের পদ দখল করে আছেন। সরকারী অনুমতি না নিয়েই ঢাকা শহরের চিকিৎসকদের অন্যতম কোচিং সেন্টার জেনেসিস এর গাইনি এ্যন্ড অবস বিভাগের মডারেটর হয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি নিজেই জানান- ‘খুব গুটি কয়েক মানুষদের মধ্যে একজন-যার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কঠিন সময়ের তৃণমূল পর্যায়ের একজন দক্ষ সংগঠক ছিলেন। যখন পঁচাত্তর পরবর্তী এই দেশে কেউ আওয়ামী লীগের নাম উচ্চারণ করতে পারতো না, তখন আমার অকুতোভয় বাবা টানা ১৮ বছর বাংলাদেশের একটি থানার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।’
এছাড়া আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর সরকার দলীয় এডহক কর্মকর্তাদের চাপে বিভিন্ন পোস্টের মাধ্যমে নিজেকে আওয়ামী পরিবারের সন্তান প্রমাণে সোচ্চার ছিলেন ডা. উম্মে তানিয়া।
সংগঠনের ১ নম্বর সদস্য সুমন সেন বরিশাল মেডিকেল কলেজে (৯৯-০০ ব্যাচ) অধ্যায়নকালীন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন বলে জানা গেছে। পুলিশ হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট পদে কর্মরত এ চিকিৎসক আওয়ামী লীগের পক্ষে আয়োজিত শান্তি সমাবেশের অন্যতম আয়োজক ছিলেন। ওইদিন প্রকাশিত টিভি ফুটেজেও তার উপস্থিতি দেখা যায়।
দুই নম্বর সদস্য ডা. লোকমান হোসেন জুয়েল শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ স্বাচিপ ইউনিটে সক্রিয় বলে জানা গেছে। ছাত্র আন্দোলনকালে আহতদের চিকিৎসা দিতে অস্বীকৃতি ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ফলে ৫ আগস্টের পর তাকে হাসপাতালটির আবাসিক সার্জনের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
সুমন সেন,বরিশাল মেডিকেল কলেজে অধ্যায়নকালীন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন সুমন সেন।তিন নম্বর সদস্য নীতিশ কৃষ্ণ দাস সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক। ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ ও বর্তমানে স্বাচিপে সক্রিয় তিনি। সরকারের সমর্থনে শান্তি সমাবেশের দন্ত বিশেষজ্ঞদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।৬ নম্বর সদস্য আসিফ মাহমুদ সহযোগী পরিচালক হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদফতরে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার মামা ডা. তারেক মেহেদী পারভেজ স্বাচিপের কেন্দ্রীয় কমিটির ১৩তম সদস্য।তার বিরুদ্ধে গোয়ালন্দ কর্মরত থাকার সময় দুর্নীতির জন্য এলাকাবাসী মানববন্দন করেন।সিবিএইচসিতে আসিফ মাহমুদের কেনাকাটা নিয়ে স্টাফ এবং সহকর্মীদের মুখে দুর্নীতির তথ্য জানা গেছে।
৯ নম্বর সদস্য ডা. মাতুয়ারা শারমীনের স্বাচিপ সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে এবং মাঠ পর্যায়ে টাকা লেনদেন এর চিএ সকলের কাছে আছে।
১০ নম্বর সদস্য নিহার রঞ্জন রাজশাহী মেডিকেলের (০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষ) সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। একইসঙ্গে স্বাচিপ -এর সিরাজগঞ্জের শাখার কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন গত জুলাইয়ে ।তিনি সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আর্থিক কেলেঙ্কারি সহ সকল খারাপ কাজের সাথে জড়িত বিগত সরকারের সুবিধাভোগী একজন।
১১ নম্বর সদস্য ডা. আল মাহমুদ লেমনের সঙ্গে সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সুমনের বিশেষ সখ্যতা ছিল।সব সময় চেম্বার নিয়ে থাকেন।২৯ তম বিসিএস থেকে বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা বলে চাদাবাজির তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
১২ নম্বর সদস্য ডা. সাইদুর রহমান সোহাগও স্বাচিপের সক্রিয় কর্মী বলে জানা গেছে। ২০১৯ সালে তৎকালীন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা যায় তাকে।
১৩ নম্বর সদস্য ডা. উম্মন ইশরাত ওরফে ইসরাত জাহান উম্মন স্বাচিপ ও বরিশাল মেডিকেলে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।কলারোয়া পোস্টিং এর সময় এলাকাবাসি কর্তৃক অপমানিত হওয়া এবং হাসপাতালের রড চুরির অভিযোগ,স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পোস্টিং দিয়ে টাকা লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
১৪ সদস্য মাহমুদুর রহমান মাসুদ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের ঘনিষ্ঠজন। একইসঙ্গে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল স্বাচিপের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।ডাঃ নাজমুস সালেহীন বিগত সরকারের সুবিধাভোগী এবং বিএনসিসি তে এডি হিসেবে আর্থিক কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত থাকায় লোহজং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।সেখানে দুর্নীতির দায়ে বৈষম্ বিরোধী ছাএরা কান ধরে উঠবস করিয়ে বের করে দেয়।হাসপাতালের সামনে তার বিশাল দুর্নীতির পোস্টার আমাদের হাতে এসেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্বাস্থ্য ক্যাডার কর্মকর্তা জানান, স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক থেকে শুরু করে সদস্য সচিবসহ একাধিক সদস্য স্বাচিপ অনুসারী। যাদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তারা আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। এখন ভিন্ন ব্যানারে চিকিৎসাখাতে অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করছে। চিকিৎসকদের বিভিন্ন গ্রুপে তাদের নেতারা ছোট ইস্যুতেই হট্টগোল করে শৃঙ্খলা নষ্টের চেষ্টা করছে। সাধারণ চিকিৎসকদের বুঝাতে চায় আমরা তো চিকিৎসকদের জন্য আন্দোলন করছি। তবে এর ভেতরে তারা আদতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চিকিৎসক বলেন, চিকিৎসকদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে তারা দলীয় স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা করছে। অধিকারের কথা বললেও তাদের মূল লক্ষ্য ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করা। তারা অন্তবর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে চায়। চিকিৎসকদের বিভিন্ন গ্রুপে তারা উস্কানিমূলক কথা বলছে। একটি ক্যাডারভিত্তিক সংগঠন হলেও তারা ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি দিচ্ছে।
এদিকে সম্প্রতি লালমনিরহাট এর আদিতমারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহ, তাদের সাথে দুর্ব্যবহার, অনুমোদন না দিয়ে সরকারি গাছ কাটা, সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা সহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে সম্প্রতি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা অলিউজ্জামান অলির সভাপতিত্বে লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে দুই ঘন্টা ব্যাপী এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। পরে ভুক্তভোগীরা বিক্ষোভ করে। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা অবিলম্বে এই হাসপাতালে সকল অনিয়ম বন্ধের দাবি জানান এবং উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তৌফিক আহম্মেদের বদলির দাবি করেন। এরপরই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ, বয়কট হওয়া এবং বিভিন্ন অপকর্মে যুক্ত থাকার অভিযোগের পর বদলি করা হয়।
স্বাচিপের বি-টিম?
ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সিনিয়র যগ্ম-মহাসচিব ও ২৫তম বিসিএসের কর্মকর্তা বলেন, স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন এডহক নিয়োগকে সামনে এনে ক্যাডার-ননক্যাডার ইস্যু তৈরি করে ঝামেলা করছে। স্বাস্থ্য বিভাগে যথেষ্ট পদ আছে। এখানে বিসিএস ক্যাডারদের পদায়ন করতে সমস্যা হচ্ছে এমন নয়। তারা যতটা না স্বাস্থ্য ক্যাডারদের দাবি নিয়ে সোচ্চার তার থেকেও বেশি সোচ্চার অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরিতে। বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন নামক সংগঠনটি সে সময়ের স্বাচিপ ও ছাত্রলীগের যারা ছিল তাদের নিয়ে গঠিত হয়েছে। এখানে নিরপেক্ষ ভাবাপন্ন কাউকে স্থান দেওয়া হয়নি। এখানে স্বাপিচের বিপরীতে ড্যাব কিংবা এনডিএফ ভাবাপন্ন কোনো স্বাস্থ্য ক্যাডারের চিকিৎসক নেই। ফলে এটা সার্বজনীনভাবে চিকিৎসক বা বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারদের রিপ্রেজেন্ট করে না। এরা একটি দলীয় এজেন্ডা বাস্তাবায়নের সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এরা মাঠ পর্যায়ে এই আন্দোলনের কথা বলে বিকাশ এবং একাউন্টে কোটি কোটি টাকা উওোলন করেছে।সেই টাকার ভাগাভাগি নিয়ে মারামারিও করেছে।এদের সবার ঢাকা বাড়ি গাড়ি আছে।এখন মূলত টাকার বিষয় লুকানো এবং ঢাকায় পোস্টিং এর জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে অন্য ইসু্ তৈরি করে।এই বিসিএস কমিটি অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছে এই অভিযোগ করে বলেন, ‘স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর দেশের সবখাতে একটা ভঙ্গুর অবস্থা বিরাজ করছে। সেখানে স্বাস্থ্য বিভাগটাকে অস্থিতিশীল রাখার জন্যই তাদের বর্তমান কর্মকাণ্ড। তাদের বেশিরভাগের সঙ্গে স্বাচিপ ও আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পৃক্ততা আছে। অনেকে বিভিন্ন ইউনিটের সক্রিয় নেতাকর্মী।’
বিভিন্ন ইউনিট কমিটি প্রসঙ্গে ড্যাবের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘এমনটা পেশাগত ক্যাডার সংগঠনের আগে হতে দেখিনি। স্বাস্থ্য ছাড়া অন্যান্য ক্যাডারাভিত্তিক সংগঠনগুলোর এমন কমিটি দেওয়ার নজির নেই। এটা তাদের ভবিষ্যৎ দূরভিসন্ধির পরিকল্পনার ইঙ্গিত দেয়। এটা স্বাচিপের একটি বি-টিমে পরিণত হয়েছে। এখানে নিরপেক্ষ ও ভিন্নমতের কোনো বিসিএস চিকিৎসক নেই। স্বাস্থ্য ক্যাডারদের মধ্যে এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। ফলে খুব শিগগিরই সার্বজনীন একটি বিসিএস হেলথ ক্যাডার সংগঠন হবে বলে মনে করছি।’
ট্যাগের রাজনীতির অভিযোগ
তবে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে সংগঠনটির সদস্য সচিব ডা. উম্মে তানিয়া নাসরিন। ন্যায্য দাবির আন্দোলন রুখতে ট্যাগের রাজনীতির অভিযোগ করেন তিনি।ডা. উম্মে তানিয়া নাসরিন বলেন সব সঠিক না।তবে অফিসে সময় কম দেওয়া আর কোচিং বানিজ্যের কথা স্বীকার করেছেন।
সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে শুভেচ্ছা জানাতে যান ডা. সাইদুর রহমান সোহাগ।
অ্যাসোসিয়েশনের দাবির বিষয়ে তানিয়া নাসরিন বলেন, ‘এডহক নিয়োগ হয়েছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকারে স্ব-পুনর্বাসনের জন্য। তারা বিসিএসকে বাইপাস করে ছাত্রলীগ নেতা, বড় বড় ব্যাবসায়ী ও মন্ত্রী এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের নিয়োগ দিয়েছে। নিজের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সম্পৃক্তরার অভিযোগ প্রসঙ্গে ডা. তানিয়া বলেন, ‘আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আওয়ামী লীগ যখন বিরোধীদলে ছিল তখন তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন। এটা অস্বীকার করার তো কোনো কারণ নেই।কিন্তু একজন সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে আমাদের প্রকাশ্যে দল করার সুযোগ নেই।’