সৌদির প্রথম সংবাদ পাঠিকা উইম আল দাখিল

প্রথম সংবাদ পাঠিকা উইম আল দাখিল

ছবি : ইন্টারনেট

মধ্যপ্রাচ্য

সৌদির প্রথম সংবাদ পাঠিকা উইম আল দাখিল

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

ভাঙছে গোঁড়ামির বেড়াজাল। ধর্মের ‘পর্দা’ সরিয়ে মুসলিম রক্ষণশীল দেশেও পুরুষদের সঙ্গে পাল্লা দিতে এগিয়ে আসছেন মহিলারা। বোরখার আড়াল ছেড়ে সৌদি আরবে আত্মপ্রকাশ করলেন প্রথম মহিলা পেশাদার সংবাদ পাঠিকা। তাও আবার সরকারি টিভি চ্যানেলে। সৌদি টিভিতে সন্ধ্যার নিউজ বুলেটিন পড়ে ইতিহাসে ঢুকে পড়লেন উইম আল দাখিল নামে ওই মহিলা।

এই যাত্রাপথ অবশ্য কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। কয়েকশো বছরের ইতিহাসে গোঁড়া ইসলামী অনুঃশাসন কার্যত নাগপাশের মতো জড়িয়ে ছিল সৌদিতে। সেই রাশ এতটাই শক্ত যে গত বছর পর্যন্ত সৌদি আরবই ছিল বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে মহিলাদের গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ ছিল। মাঝে মধ্যে যে প্রতিবাদী মহিলারা উঠে আসেননি তা নয়, কিন্তু ধর্মের রক্তচক্ষুর কাছে হার মানতে হয়েছে বারবার। রাষ্ট্রীয় মদতেই ইসলামের ধ্বজাধারীরা মহিলাদের করে রেখেছেন পর্দানসীন।

আবার নারী বিপ্লবের শুরুটাও কার্যত সেই রাষ্ট্র তথা সরকারের হাত ধরেই। এ বছরেই সৌদির রাজকুমার মোহম্মদ বিন সালমন ঘোষণা করেছিলেন ভিশন ২০৩০। সেই ঘোষণাই ছিল কার্যত যুগান্তকারী। বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের নিয়োগের উপর শতাব্দী প্রাচীন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা জানান যুবরাজ। অর্থনীতিকে শুধু খনিজ তেলের উপর নির্ভরশীল না রেখে সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মহিলাদের জন্য খুলে যায় এক দরাজ বিশ্ব। বোরখার আড়াল থেকে বেরিয়ে মহিলারা খুঁজে পেতে শুরু করেন নিজস্ব সত্ত্বা।

তাদেরই অন্যতম অগ্রদূত উইম আল দাখিল। রবিবার সন্ধ্যায় সরকারি টিভি চ্যানেল সৌদি টিভি ওয়ান-এ সবাইকে চমকে দিয়ে খবর উপস্থাপন করেন উইম আল দাখিল। অন্যান্য সব ক্ষেত্রের মতোই তিনিও যেকোনো পুরুষের চেয়ে কম কিছু যান না, প্রথম দিনই তার ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন উইম। সৌদি টিভিও গর্বের সঙ্গে উইম আল দাখিলের নিয়োগের কথা টুইট করে জানিয়েছে।

যুবরাজের ওই ঘোষণার পর থেকেই বেসরকারি শিল্পক্ষেত্রে মহিলাদের নিয়োগ শুরু হয়েছে। এ মাসেই রিয়াধের বিমান সংস্থা ফ্লাইনাস বিমানে কো-পাইলট এবং ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্ট হিসাবে মহিলাদের নিয়োগ করবে তারা। তার আগে জুনেই মহিলাদের গাড়ি চালানোর উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। তার পর থেকে রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বেরোচ্ছেন মহিলারা। তারও আগে মার্চে সৌদিতে প্রথম আয়োজন করা হয় মহিলাদের দৌড়। তাতেও বিপুল সাড়া পড়ে। আর তারপর নতুন ইতিহাস গড়লেন উইম।

এর আগে ২০১৬ সালে অবশ্য চেষ্টা হয়েছিল। একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে সকালের দিকে খবর পড়তে দেখা গিয়েছিল জুমানা আল শামি-কে। সে দিক থেকে প্রথম টিভি অ্যাঙ্কর হিসাবে জুমানার নাম থাকলেও উইমই প্রথম সরকারি টিভি চ্যানেলের পেশাদার মহিলা অ্যাঙ্কর। তার হাত ধরেই সৌদিতে নারী বিপ্লবের এক নবযুগের সূচনা হল বলেই মনে করছে বিশ্ববাসী।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads