সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে নৌকাতেই ভরসা করতে চাইছে জনগণ

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের পরিচালক ডা. আব্দুল আজিজ

সংগৃহীত ছবি

নির্বাচন

সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে নৌকাতেই ভরসা করতে চাইছে জনগণ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনে নৌকা প্রতীকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের পরিচালক ডা. আব্দুল আজিজ। চিকিৎসক হিসেবে তার পরিচিতি থাকলেও রাজনীতির মাঠে তার অবাধ চলাফেরা আগে থেকেই ছিল। রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়ে ওঠা ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেন তিনি। তারাষ ও রায়গঞ্জ এলাকায় চিকিৎসক হওয়ার পর তিনি ব্যাপকভাবে মানুষের সেবা করেছেন। ব্যক্তি উদ্যোগে নানা উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন তিনি।

সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মান্নান তালুকদারকে হারিয়ে এই আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন ইসহাক হোসেন তালুকদার। দশম জাতীয় নির্বাচনে তিনি জয়ী হয়েছিলেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। তবে তার মৃত্যুর পর ম ম আমজাদ হোসেন মিলন উপনির্বাচনে জয়ী হন। এই আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন বর্তমান এই সংসদ সদস্য। পাশাপাশি ইসহাক হোসেন তালুকদারের ছেলে ইমন তালুকদারও ছিলেন মনোনয়নের দৌড়ে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডা. আব্দুল আজিজকে নৌকার কান্ডারির দায়িত্ব দেন এই আসনে।

স্থানীয়রা বলছেন, চিকিৎসাক্ষেত্রে অবদানের জন্য দেশে-বিদেশে সুনাম রয়েছে ডা. আজিজের। তরাজনীতির মাঠে পদচারণাও  ছিল ব্যাপক। ভোটের মাঠে তিনি অতিপরিচিত মুখ।  দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, এই আসনে নতুন মুখ হলে হবে কি। তার যোগ্যতা রয়েছে। আমরা তাকে জয়ী করতে সবধরণের পদক্ষেপ নিয়েছি। ভোটারদের কাছে যাচ্ছি। ভোট চাচ্ছি। নৌকাই এ আসনে জয়ী হবে।

সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন তালুকদার বলেন, নেত্রী আমাকে ডেকে ডা. আব্দুল আজিজকে জয়ী করার জন্য সবকিছু করতে বলেছে। নেত্রীর কথায় এখানকার আওয়ামী লীগে কোনো বিভক্ত নেই। সবাই এক সঙ্গে মিলে নৌকাকে জেতাতে কাজ করছে।

সলঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফনি ভূষন পোদ্দার, জননেত্রী শেখ হাসিনা ডা. আজিজকে মনোনয়ন দিয়েছেন, আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করব নৌকার প্রার্থীকেই বিজয়ী করতে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য ম ম আমজাদ হোসেন মিলন মনোনয়ন না পেলেও সবাইকে নৌকার পক্ষে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী আমরা ডা. আজিজের পক্ষে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিয়েছি। ডা. আজিজ এলাকায় এসেছেন। বিভিন্ন জায়গায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন, নেতাকর্মীদের সঙ্গে পরিচয় হচ্ছে। তিনি খুব ভালো মানুষ। আমরা তাকে নিয়ে আশাবাদী।

স্থানীয়রা বলছেন, এই আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভোট প্রায় সমান সমান। এর বাইরে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ভাসমান ভোট আছে। এই ভোটগুলোই নির্ধারক হয়ে দাঁড়ায়। ফনি ভূষন পোদ্দার বলেন, নতুন মুখ নিয়ে ভাসমান ভোটারদের ভোট পাওয়া কষ্টকর। তবে তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী, এটাই তার বড় পরিচয়। আমরা দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে চেষ্টার কোনো ঘাটতি রাখব না।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. আব্দুল আজিজ বলেন, আমি এলাকায় খুব বেশি না গেলেও বিভিন্ন সময় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের খোঁজ-খবর নিয়েছি। নৌকা বিজয়ী করবে। ইনশাল্লাহ এই আসনে নৌকার বিজয় হবে।

দলের মধ্যে কোনো ধরনের কোন্দল রয়েছে কি না— সে বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. আজিজ বলেন, দলের ভেতরে কোন্দল ছিল। আমি মনোনয়ন পাওয়ার পর কোন্দল ভুলে সবাই আমার সঙ্গেই কাজ করছেন। দলের সবার কাছ থেকেই সহযোগিতা পাচ্ছি। আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে উন্নত করছে। সবদিকে বিবেচনা করে সাধারণ ভোটাররা এবার নৌকায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন বলে আমি আশাবাদী।

উল্লেখ্য, সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ-সলঙ্গা) আসনটি ১৯৯১ সাল থেকেই ছিল বিএনপির দখলে। ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে টানা তিনবার এই আসন থেকে জয়ী হন বিএনপির আব্দুল মান্নান তালুকদার। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তাকে হারিয়ে জয় পান আওয়ামী লীগের ইসহাক হোসেন তালুকদার। ২০১৪ সালেও তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। পরে তিনি মারা গেলে উপনির্বাচনে বিজয়ী হন গাজী ম ম আমজাদ হোসেন মিলন। আসনটিতে মোট ভোটার ৩ লাখ ৬৭  হাজার ৫৩৩ জন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads