আব্দুস সালাম, দামুড়হুদা ( চুয়াডাঙ্গা)
আকাশ ছুঁই ছুঁই সারি সারি তালগাছের এমন দৃশ্য আজও চোখে পড়ে উপজেলার পিরপুরকুল্লা গ্রামের কাঁচা রাস্তায়। একসময় গ্রাম-বাংলার শোভা বৃদ্ধিতে তালগাছের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। এখন উপজেলা কৃষি বিভাগ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও বজ্রপাত ঠেকাতে তালবীজ রোপণ করছে রাস্তার আশপাশে।
জানা গেছে, পিরপুরকুল্লা গ্রামের মৃত রিয়াজতুল্লা মন্ডলের ছেলে পিরপুরকুল্লা হাইস্কুলের অফিস সহায়ক আব্দুল খালেক ও একই গ্রামের মোহাম্মদ আলী খোকনের প্রচেষ্টায় ৯০ দশকের দিকে রাস্তার আবর্জনা ও জঙ্গল সাফ করে পিরপুরকুল্লা গ্রামের গ্রামীণ রাস্তার দুপাশে তালগাছ রোপণ করেছিলো। সারি সারি তালগাছকে ঘিরে এ গ্রামের পরিচিতি যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে রাস্তার সৌন্দর্য।
আব্দুল খালেকের ভাই আব্দুর কাদের বলেন, আমার ভাই নিজ হাতে রাস্তার দুধারে প্রায় ছয়শত তালের আঁঁটি লাগিয়েছিল। সেই আঁঁটি থেকে আজকের এই গাছ। সে সময় আমাদের বাড়িতে ৩০টি তালের আঁঁটি লাগানো হয়েছিলো। সেই গাছ বড় হলে গাছে তাল হয়। পরে সেই গাছের আঁঁটি সংগ্রহ করে ১০ ফুট দূরত্বে রাস্তার দুধারে লাগানো হয়েছিলো। সেই আঁঁটি থেকে আজ তালগাছের এই সারি। কালের বিবর্তনে অনেক স্থানে তালগাছ হারিয়ে গেলেও এখনো এই রাস্তার ধারে সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তালগাছের সারি। রাস্তার দুধারে সৌন্দর্য বর্ধন করে যাচ্ছে। আমি নিজেও উপজেলার গালকাটি থেকে খ্রিস্টান কবরস্থান পর্যন্ত রাস্তার দুধারে তালের আঁঁটি লাগিয়েছিলাম সেই তালগাছগুলো প্রায় বড় হতে চলেছে। আমাদের গ্রামের কাঁচা রাস্তার দুপাশে সারি সারি তালগাছ নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, পরিবেশ রক্ষায় ও বজ্রপাত ঠেকাতে তাল গাছের জুড়ি নেই। উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে বজ্রপাত ঠেকাতে রাস্তার দুপাশে অনেক তালবীজ রোপণ করা হয়েছে। অনেক স্থানে চারা বের হয়েছে। সেগুলো রক্ষণবেক্ষণ করা আমাদের দায়িত্ব। এই উদ্যোগকে এলাকাবাসী সাধুবাদ জানিয়ে মাঠ পর্যায়ে সার্বিক সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেছে। বজ্রপাত ঠেকাতে সবাই নিজ নিজ অবস্থানে থেকে তালবীজ রোপণ করলে তালগাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাসহ বজ্রপাত রোধে কাজ করবে। কাঁচা রাস্তা, নদী ও পুকুরপাড় ভাঙন রোধ করে। সেই সঙ্গে পানির স্তর ধরে রাখে।