সাতক্ষীরায় আম বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত ১৩ হাজার চাষি

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

কৃষি অর্থনীতি

সাতক্ষীরায় আম বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত ১৩ হাজার চাষি

  • কে এম আনিছুর রহমান, সাতক্ষীরা
  • প্রকাশিত ৫ মার্চ, ২০২১

সাতক্ষীরার বাতাসে এখন আমের মুকুলের ম-ম ঘ্রাণ। গাছে গাছে দুলছে মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে সেই মুকুলের পাগলকরা ঘ্রাণ। শহর কিংবা গ্রামে সর্বত্র আমগাছ তার মুকুল নিয়ে হলদে রঙ ধারণ করে সেজেছে এক অপরূপ সাজে। তবে গত বছর প্রথম থেকেই বৈরী আবহাওয়ায় উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন আমচাষিরা। এরপর করোনা পরিস্থিতিতে যানবাহনের অভাবে পাইকারি ক্রেতা না থাকায় আমের বিপণন নিয়েও যথেষ্ট চিন্তিত ছিলেন তারা। মে মাসের শেষে আম পাড়ার মৌসুম শুরু হওয়ার আগে আমের বিপণনে সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপে আমচাষিরা যখন আবার আশাবাদী হয়ে উঠছিলেন, সেই মুহূর্তে তাদের আম বাগানগুলো ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কবলে পড়ে। করোনার লকডাউনের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে ঝরে পড়া আম বিক্রি করার কোনো জায়গা না থাকায় আম ব্যবসায়ীদের শেষ আশাটুকুও ম্লান হয়ে যায়। তার ওপর ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে জেলার দুই হাজার ২৭ হেক্টর জমির ১৬ হাজার ২৯৬ টন আম নষ্ট হয়ে যায়। আর্থিকভাবে সে সময় আমচাষিরা ৬৫ কোটি ১৮ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হন। তবে গত মৌসুমের তুলনায় এ বছর জেলার আম বাগানগুলোতে দ্বিগুণ মুকুল এসেছে। আমের এই মুকুলে আমচাষিদের সোনালি স্বপ্ন দোল খাচ্ছে। তাই নতুন করে আম বাগান পরিচর্যায় কাজে ব্যস্ত জেলার ১৩ হাজার ১০০ আমচাষি। এছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে রয়েছে আরো কয়েক হাজার আমচাষি। তবে গত বছরের চেয়ে এ বছর পাঁচ হেক্টর জমিতে আম চাষ কম হয়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ। এবার জেলায় ৪ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে ৪০ হাজার টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। গড় ৬০ টাকা কেজি ধরে ৪০ হাজার টন আমের বাজারমূল্য ২৪০ কোটি টাকা।

জেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠ পর্যায়ের আমচাষিরা জানান, তাদের আম বাগানগুলোতে মুকুল শোভা ছড়াচ্ছে নিজস্ব মহিমায়। মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে বাগানগুলো। প্রায় জেলার ৯৫ শতাংশ আমগাছ মুকুলে শোভা পাচ্ছে। এর মধ্যে ল্যাংড়া, গোপালভোগ, হিমসাগর, ফজলি, আশ্বিনা, লক্ষণভোগ, কালীভোগ, আম্রপালিসহ বিভিন্ন জাতের আম রয়েছে।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (খামারবাড়ি) উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সব্যসাচি বলেন, গত বছর ঘূর্ণিঝড় আম্পানে জেলার আশাশুনি, শ্যামনগর, কালিগঞ্জ, সদর উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় অবস্থিত আম বাগানগুলোর প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল। এ কারণে গত মৌসুমের চেয়ে চলতি মৌসুমে পাঁচ হেক্টর জমিতে আম চাষ কম হয়েছে বলে দাবি করে তিনি আরো জানান, এবার সাতক্ষীরা জেলার ৪ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ হচ্ছে, যা থেকে ৪০ হাজার টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। ইতোমধ্যেই আমের মুকুল আসছে, এ সময়ে সাধারণত হুপার পোকার আক্রমণ করে। যার কারণে আমের মুকুল নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া বিচিং পদ্ধতিতে সেচ না দেওয়ার কারণে মুকুল শুকিয়ে ঝড়ে পড়ে। এগুলো থেকে রক্ষা পেতে ও ফলন ভালো পেতে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে আমচাষিদের সবধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads