সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। পাশাপাশি ধানের চড়া মূল্যও পাচ্ছেন কৃষকেরা। তাই কৃষকের মুখে ফুটেছে সোনালী হাসি। আগামী দিনগুলোতে বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে কৃষকের মুখে এই হাসি অটুট থাকবে। গত বছর দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। কিন্তু এ বছর এখনও তেমন কোনো প্রাকৃতিক দূর্যোগ আঘাত না করায় কৃষকের মুখে সোনালী হাসি অটুট থাকার সম্ভাবনা মিলছে। তবে মাঠের সব ধান উঠে এলে গত বছরের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে জানালেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর আমন ধান চাষ করা হয়েছে ৮ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো ৩২ হাজার ৮৫৬ মেট্টিক টন। তবে আত্মবিশ্বাস জেগেছে আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। আমনের এমন ভালো ফলনে খুশি উপজেলার কৃষকরাসহ কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব মতে এরই মধ্যে ৮০ শতাংশ জমির আমন ধান কাটা হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে এবার ধানের উৎপাদন গড়ে ৫ দশমিক ৭ মেট্টিক টন টন। কৃষকের ক্ষেতে এখনও ২০ শতাংশ আমন ধান রয়েছে বলে জানিয়েছেন।
তালা উপজেলার নলতা, খলিলনগর, মহান্দী, আগোলঝাড়া, মাগুরা ও দোহার গ্রামের কৃষকরা জানান, বৈরি আবওহাওয়ার কারনে এবারের আমন ফসল ভালো হয়েছে দামও ভালো। প্রতিমণ আমন ধান বিক্রি হচ্ছে চিকনটা ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ৮০ টাকা এবং মোটা ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ৩০ টাকা। এ বছর এক বিঘা জমিতে ১৫ থেকে ১৬ মণ ধান উৎপাদন হয়েছে। ফসল পুরোপুরি ওঠেনি, এখনও মাঠে রয়েছে। কাটতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তাছাড়া প্রতিমন ধান বাজারে সুলভ মুল্যে বিক্রি হচ্ছে বলেও কৃষকেরা জানান।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা গোপাল চন্দ্র দাস জানান, ১৯ নভেম্বর উপজেলার মিটিং সম্পন্ন হয়েছে এবং একটি খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে যেটি উপজেলা কৃষি অফিসে আছে ওটা পেলেই আমরা সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ধান ক্রয় শুরু করবো। এবার সরকারি ভাবে প্রতি মন আমন ধান ১ হাজার ৪০ টাকা দরে ক্রয় করা হবে। ইতিমধ্যে মাইকিং করে ধান চাষীদের ধান ক্রয়ের ব্যাপারে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া চিঠি দিয়ে কৃষি উপ-সহকারি কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাজিরা খাতুন জানা, কৃষকের আগ্রহ, সরকারের নজরদারি, পৃষ্ঠপোষকতা এবং সরকারের দেওয়া ভর্তুকিসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার ফলেই এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা এবার ধানের ভালো দাম পাবে।
তিনি আশা করছেন, ফলন ভালো হওয়ায় আমনের লক্ষ্যমাত্র ছাড়িয়ে যাবে। এছাড়া আমনের পর এবছরের বোরোর উৎপাদনও ভালো হবে। এই মুহুর্ত্বে অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা সঠিক নির্ধারন করা সম্ভব না কারন ৮০ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। উপজেলার সর্বত্র আমন ধান কাটা শেষ হয়নি কৃষকের ক্ষেতে এখনও ২০ শতাংশ আমন ধান রয়েছে।