বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সমস্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আমরা অংশ নেব। এ সিদ্ধান্ত আগেই হয়েছে। উপনির্বাচনগুলোতেও আমরা অংশ নিচ্ছি। সেই সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন হয়নি। নির্বাচনে অংশ নেওয়া সব থেকে বড় গণতান্ত্রিক আন্দোলন। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রামের বিএনপির নেতাদের ভোটের প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই যে নির্বাচনে যাবেন, সংগঠন যদি শক্ত না থাকে তাহলে কেন্দ্রে দাঁড়াতে পারবেন না। দ্বিধা-বিভেদ-দ্বন্দ্ব না রেখে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলুন, যাতে এই দানবকে পরাজিত করতে পারি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও দেশ এখনো পরাধীনতার শিকলে বন্দি। মানুষের ভোটাধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার ও মতপ্রকাশের অধিকার আজ আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে। দেশের মানুষকে ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বিএনপি একটি যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে। এ যুদ্ধে আমাদের জয়ী হতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আজ মানুষ ভোট কেন্দ্রে যেতে অনীহা প্রকাশ করছে, কারণ সরকার দেশের মতামতকে উপেক্ষা করে রাতের আঁধারে ব্যালট বাক্স ভরে জনগণের অধিকার হরণ করেছে। সীমান্তে আজ নিরীহ বাংলাদেশিদের হত্যা করলেও সরকার নীরব ভূমিকা পালন করছে। সীমান্তে আর কত মানুষ হত্যা করলে এ হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হবে তা জানতে চান তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, পুরো দেশের জনগণ বিএনপির সাপোর্টার। বিএনপি ইজ দ্য পার্টি অব পিপল। যখনই বিএনপিকে ধ্বংস করতে চেয়েছে বিএনপি ফিনিক্স পাখির মতো আবারো জেগে উঠেছে। কারণ জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে। খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। বিছানা থেকে তিনি উঠতে পারেন না, দাঁড়াতেও পারেন না। ডায়াবেটিস বেড়ে গিয়েছে। তাকে সরকার পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ চৌধুরীর দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় এই মন্ত্রীর জন্মও হয়নি। অথচ তিনি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বলেন। বেফাঁস কথা বলেন। বিএনপি কোনো দল নয়, বিএনপির জনসমর্থন নেই-এ রকম বলে বেড়ানো মন্ত্রীরা প্রতিদিনই বিএনপির কথা বলেন। আমরা জনপ্রিয় না হলে, আপনারা প্রতিদিন আমাদের নিয়ে কথা বলেন কেন প্রশ্ন করেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় প্রধান বক্তা বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবের রহমান শামীম বলেন, রাজপথে সব আন্দোলনে নগর বিএনপির অবদান রয়েছে। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনের কর্মসূচিতে চট্টগ্রামের জনগণ ঝাঁপিয়ে পড়বেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের আহ্বান জানাই, আপনারা আন্দোলনের কর্মসূচির ঘোষণা দেন। চট্টগ্রাম আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত আছে। এ সরকারের পতন ঘটাতে হবে আন্দোলনের মাধ্যমে। সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দীন, নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান প্রমুখ।