সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করুন

শাহবাগে সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমিতে গতকাল আইন ও প্রশাসন কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে সনদ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ছবি : পিআইডি

সরকার

সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করুন

সরকারি কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রী

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮

সমাজকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতিমুক্ত করে গড়ে তুলতে প্রশাসন ক্যাডারের নবীন কর্মকর্তাদের সততা, নিষ্ঠা এবং আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির হাত থেকে সমাজকে মুক্ত রাখতে হবে। যখন যেখানে দায়িত্ব পালন করবেন এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।’

এগুলো একটি সমাজ ও পরিবারকে ধ্বংস করে দেয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এটুকু বলতে পারি বাংলাদেশ যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে তা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে। কিন্তু এই অভিযান অব্যাহত রেখে দেশকে সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত করতে হবে।’ বাসস।

শেখ হাসিনা গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর শাহবাগে সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমিতে ১০৭, ১০৮ ও ১০৯তম আইন ও প্রশাসন কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমি এমন জায়গায় দেশকে রেখে যাচ্ছি যেন বাংলাদেশকে আর পেছন ফিরে তাকাতে না হয়। সামনের দিকে যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে সে অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে।’ কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করাই তার সরকারের লক্ষ্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বর্তমান সরকারের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘এই যে দিকনির্দেশনাগুলো দিয়ে গেলাম সেগুলো অন্তত যদি অনুসরণ করা হয় তাহলে যারা দায়িত্ব পালন করবেন তাদের জন্য যেমন সুযোগ সৃষ্টি হবে তেমনি দেশের মানুষের আরো উন্নত জীবন নিশ্চিত হবে।’

এ সময় সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা এবং সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির প্রসঙ্গও তোলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এটা আমরা এজন্যই করেছি যেন দেশের সেবাটা আপনারা ভালোভাবে করতে পারেন।’ শেখ হাসিনা এই বেতন-ভাতা বৃদ্ধিকে পৃথিবীতে নজিরবিহীন উল্লেখ করে বলেন, তার দেশের অর্থনীতিটা একটা শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়েছে বলেই এগুলো করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি হলুদ সাংবাদিকতার সমালোচনা করে বলেন, পত্রিকায় এটা-ওটা লেখা হয়, আর আমাদের অনেকেই সেটা দেখে ঘাবড়ে যায়। আমি অন্তত এটুকু বলতে পারি, রাষ্ট্রপরিচলনায় পত্রিকার লেখা পড়ে গাইডলাইন গ্রহণ করি না। আমি গ্রহণ করি আমাদের নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা এবং নিজস্ব পরিকল্পনা। কে কী বলল সেটা শুনে রিঅ্যাক্ট করার চিন্তাতেই আমি বিশ্বাস করি না।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক এবং জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহমেদ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন। সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর মোশাররফ হোসেন অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন। ১০৭, ১০৮ ও ১০৯তম আইন ও প্রশাসন কোর্সের রেক্টর পদক বিজয়ী শ ম আজহারুল ইসলাম সনেট, শরিফ আসিফ রহমান এবং মো. মোশাররফ হোসেন অনুষ্ঠানে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী কোর্স সম্পন্নকারীদের মধ্যে সনদ বিতরণ ছাড়াও তাদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন এবং তিনটি ব্যাচের স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন।

প্রধানমন্ত্রী পরে সিভিল প্রশাসনের নবীন কর্মকর্তাদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন এবং বিসিএস প্রশিক্ষণ একাডেমির নবনির্মিত প্রশাসনিক ভবন উদ্বোধন করেন।

সরকারপ্রধান সিভিল প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের মানুষকে ভালোবেসে সবাইকে দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হবে। সততাই শক্তি। আর দেশের মানুষের প্রতি কর্তব্যবোধ এবং দায়িত্ববোধ নিয়েই কাজ করতে হবে। কারণ এ দেশটি আমাদের এবং লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা এটা অর্জন করেছি। এ স্বাধীনতাকে আমরা ব্যর্থ হতে দিতে পারি না। তিনি বলেন, আমার নতুন প্রজন্মের কর্মকর্তা যারা, যারা ২০৪১-এর সৈনিক তাদের জীবনটা সুন্দর ও সফল হোক এবং তারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাক সেটাই আমরা চাই।

শেখ হাসিনা তার সরকারের উদ্যোগে বাংলাদেশের ডিজিটাইজেশনের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, এখন তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। যোগাযোগ খুবই সহজ হয়ে গেছে, জানা সহজ হয়েছে এবং কাজের সুযোগও অনেক বেড়ে গেছে। কাজেই আমি চাইব এই ধারাটাকে অব্যাহত রেখে আমাদের সবাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় গৃহীত তার সরকারের শতবর্ষমেয়াদি ডেল্টা পরিকল্পনার উল্লেখ করে বলেন, প্রজন্মের পর প্রজন্ম যারা আসবে এবং যারা রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেবে তারাই এগুলো বাস্তবায়ন করবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads