আবদুল করিম বিটু, পেকুয়া (কক্সবাজার)
দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় খাবার শুঁটকি। পাশাপাশি এই পণ্যটি রফতানির মাধ্যমে বছরে হাজার কোটি টাকা আয় হয়। বঙ্গোপসাগর থেকে আহরণ করে এটি প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে জড়িত রয়েছে প্রায় ২০ হাজার লোক। কক্সবাজারের নুনিয়ার ছড়া, খুরুশকুল, মহেশখালী, সোনাদিয়া, ধলঘাটা, মাতারবাড়ী, কুতুবদিয়া, টেকনাফ, সেন্ট মাটিন, চকরিয়া ও পেকুয়া উপকূলীয় এলাকায় প্রাকৃতিক উপায়ে তথা সূর্যের তাপে মাছ শুঁটকি করা হয়। এসব মাছের মধ্যে রয়েছে কামিলা, পোপা, রুপালি পোপা, চিংড়ি, লইট্যা, রুপচাঁদা, ছুরি, লাক্কা, ফাইস্যা, ইলিশ ও হাঙ্গর। বেশিরভাগ পচা ও নষ্ট হয়ে যাওয়া কাঁচা মাছ শুঁটকির কাজে ব্যবহার করা হয়। স্বাধীনতার পরে এসব মাছের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে পোপা, রুপালি পোপা ও লাল চোখা পোপা বেশি জনপ্রিয়। রফতানি করে দেশের অর্থনীতিতে এ খাতটি জোগান দিচ্ছে হাজার কোটি টাকা।
শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণে জড়িত নাজিরারটেক এলাকার রমিজ আহাম্মদ জানান, প্রতি বছর শুকনো মৌসুমে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ শুরু হয়। বৈজ্ঞানিক উপায়ে এসব শুঁটকি প্রক্রিয়াজাত করতে না পারলেও লবণ মিশিয়ে সূর্যের তাপে এসব মাছ শুকিয়ে বাজারজাত করা হয়। এজন্য রয়েছে শতাধিক ছোট-বড় কারখানা। আধুনিক প্রযুক্তিতে শুঁটকি করতে পারলে কক্সবাজার থেকে এ খাতে সিংহভাগ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। তহিদুল ইসলাম নূরী জানান, কক্সবাজারের শুঁটকি অন্যান্য এলাকার শুঁটকি থেকে নিরাপদ। শুঁটকি মাছের পাশাপাশি কক্সবাজারে আরো জনপ্রিয় খাবার রয়েছে। মহেশখালীর মিষ্টিপান, টেকনাফের সুপারি, চকরিয়ার মানিকপুর, ডেমুশিয়া ও মালুমঘাটের মহিষের দুধের দই সর্বাধিক জনপ্রিয়। তবে মহিষ পালন কমে যাওয়ায় এখন আর আগের মতো দই পাওয়া যায় না। এ ছাড়া কৃষিপণ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন জাতের কাঁচা তরিতরকারি, নারকেল, তরমুজ, বাঙি, শসাসহ বিভিন্ন প্রজাতির লেবু অন্যতম।