মহানগর

শিক্ষা উপদেষ্টার নাম ব্যবহার করে প্রধান শিক্ষককে সরানোর পায়তারা

  • ''
  • প্রকাশিত ১৭ অগাস্ট, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউট এর শিক্ষিকা জান্নাতুল নাঈম মিলি অন্তবর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে নিজের ভাই পরিচয় দিয়ে প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে, শনিবার (১৭ আগস্ট) মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি স্কুলে গিয়ে দেখা যায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ প্রতিবাদ
মানববন্ধন করছেন। মানববন্ধন থেকে তারা অভিযোগ করেন, বিপাশা ইয়াসমিন, খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত জান্নাতুল নাঈম মিলি, আফরোজা আক্তার বেবী, আব্দুল হান্নান এবং বহিষ্কৃত শিক্ষক শাহীন বিশ্বাস মিরাজসহ স্থানীয় কিছু আওয়ামী লীগ রাজনীতির সাথে জড়িত প্রভাবশালী স্কুলের নিয়ন্ত্রণ নিতে শিক্ষার্থীদের নানা ভয়-ভীতি দেখানো সহ মিথ্যা অভিযোগ এনে প্রধান শিক্ষক জিনাত ফারহানার পদত্যাগ দাবি করছেন। তার প্রতিবাদে আজ বেলা ১১ টা ৩০ মিনিটে মানববন্ধন করেন।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করা শিক্ষকরা জানান, মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউট বৃহত্তর মিরপুরের একমাত্র নারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং এই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান প্রধান শিক্ষক জিনাত ফারহানা অত্যন্ত সুনাম ও সফলতার সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ এই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তিনি ১৯৯৭ সালে এই প্রতিষ্ঠানে প্রথম যোগদান করেন, পরবর্তীতে ২০১৩ সালে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে এবং সর্বশেষ ২০২২ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।২০১৩ সালে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকেই তিনি অত্যন্ত সফলতার সাথে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা করে আসছেন এবং প্রতিষ্ঠানের প্রভূত উন্নয়ন সাধন করেছেন যা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মচারী, অভিভাবক এবং অত্র এলাকাবাসী একবাক্যে স্বীকার করেন।

তারা বলেন, হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ে এবং অবৈধ ভাবে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনার কর্তৃত্ব কুক্ষিগত করার উদ্দেশ্যে একটি কুচক্রীমহল প্রধান শিক্ষক জিনাত ফারহানাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাকে সরিয়ে দিতে চায়, এবং নিজেরা সেখানে আধিপত্য বিস্তার করার অপচেষ্টা় চালিয়ে যাচ্ছে। তারা প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, এবং প্রভাতী ও দিবা শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ সহ অন্যান্য দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ এনে বিভিন্ন মিডিয়াকে ব্যবহার করে স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কে বিভ্রান্ত করার মাধ্যমে তাদের ষড়যন্ত্র সফল করার চেষ্টা করছে। এখানে, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৪/৫ জন বিপদগামী, চাকুরিচ্যুত শিক্ষক যারা এমপিওভুক্ত নন এবং এডহক কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত, তারা প্রতিষ্ঠানের ভিতরে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। কিছু কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে মেসেঞ্জার ওর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জঘন্য মিথ্যাচার ও বানোয়াট অভিযোগ প্রচার করছে। এই প্রতিষ্ঠানের ১১০ জন শিক্ষকদের মধ্য থেকে এই ৪/৫ জন অযোগ্য ও অদক্ষ শিক্ষক যারা বিগত ক্ষমতাশীল রাজনৈতিক দলের প্রভাব ব্যবহার করে এতোদিন “এমপির লোক” হিসেবে পরিচয় দিত, তারাই পট পরিবর্তনের সাথে সাথে ভোল পাল্টিয়ে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং অন্যান্য দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে বানোয়াট অভিযোগ প্রচার করছে।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষকরা বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নীতিমালার বাইরে বিগত ক্ষমতাশীল দলের এমপির সরাসরি হস্তক্ষেপে সঙ্গীত শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পায় বিপাশা ইয়াসমিন এবং খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয় জান্নাতুল নাঈম মিলি। এছাড়াও আফরোজা আক্তার বেবী, আব্দুল হান্নান এবং বহিষ্কৃত শিক্ষক শাহীন বিশ্বাস মিরাজ, যারা অদক্ষ এবং অযোগ্য হিসেবে বার বার প্রমাণিত হয়েছে, তারাই এই ষড়যন্ত্রের সাথে সরাসরি লিপ্ত।

তারা বলেন, সহকারী শিক্ষক জান্নাতুল নাঈম মিলির ভাই (মঈনউদ্দিন) বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে প্রধান শিক্ষক, এবং অন্যান্য শিক্ষকদের ফোন করে হুমকি, গালিগালাজ, ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।

ভয়ভীতি প্রদর্শনের একটি ফোন কল রেকর্ড রূপালী বাংলাদেশের হাতে এসেছে।

শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন থেকে অভিযোগ করেন, মিরপুর গার্লস আইডিয়ালের শিক্ষিকা বিপাশা ইয়াসমিন স্কুলে এসেও টিকটক করেন একই সাথে তাদেরকে টিকটকে উৎসাহ প্রদান করেন। একইসাথে শিক্ষিকা বিপাশার ব্যবহার গত সমস্যা নিয়ে অভিযোগ তোলেন তারা।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কিছু শিক্ষার্থী জানান, তারা প্রধান শিক্ষক জিনাত ফারহানার পদত্যাগের প্রতিবাদে একইসাথে তার প্রধান শিক্ষকের পদ বহালের দাবিতে রাস্তায় নামলে মিলি ম্যাম, বিপাশা ম্যাম, বেবি ম্যাম এবং আফরোজা ম্যাম আমাদেকে গালি-গালাজ সহ শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করেন। তারপরও তারা অন্যায়ের প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে চান বলে জানান।

মানববন্ধন থেকে তারা ‘দফা এক দাবি এক অন্যায় নিপাত যাক’ মানতে হবে মানতে হবে, প্রধান শিক্ষকের পদে জিনাত ফারহানা ম্যামকে রাখতে হবে’ চাই না চাই না রাজনীতি চাই সহ নানা স্লোগান দেন তারা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads