সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের অপসারণ দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন চলছে।
অনশনে থাকা এক শিক্ষার্থীর শ্বাস কষ্ট শুরু হলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। তবে, এখন পর্যন্ত তাদের কেউ অনশন ভঙ্গ করেনি।
বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. তুলসী কুমার দাস, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধানসহ শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তাদের প্রত্যাখ্যান করে কথা বলার সুযোগ দেননি।
এর আগে, বিকেল থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনেই অনশনে বসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ শিক্ষার্থী। লাগাতার অবস্থান, মিছিল, সমাবেশের মতো কর্মসূচির পরও উপাচার্য পদত্যাগ না করায় আমরণ অনশনে নামেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে, সিলেট নগরীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করে অনশনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে সাবেক শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া, শিক্ষার্থীরা আলোচনায় বসছে না বলে অভিযোগ করেছেন, উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। পরিস্থিতি বিবেচনায় ২রা ফেব্রুয়ারির সিন্ডিকেট নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি আদায় না হওয়ায় রবিবার বিকেলে মিছিল থেকে উপাচার্যকে ধাওয়া করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। হামলা এড়াতে আইসিটি ভবনে আশ্রয় নেন উপাচার্য। এসময় সেই ভবনে তালা দিয়ে ভিসিকে অবরুদ্ধ করে চলে বিক্ষোভ। দফায় দফায় শিক্ষক প্রতিনিধিরা আলোচনার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়, পরে ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয় পুলিশ। আলোচনায় ব্যর্থ হয় পুলিশও। এক পর্যায়ে দু'পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ও লাঠিচার্জ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। প্রায় ৩ ঘন্টা পর পুলিশি অভিযানে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করা হয় শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে। এ সময় সংঘর্ষে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পুলিশসহ আহত হয় অর্ধশতাধিক। আহতদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী।
এরপর পরিস্থিতির অবনতি হলে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। সন্ধ্যায় পুলিশ ও শিক্ষার্থীর মধ্যে সংঘর্ষের পর এক জরুরি সভায় শাবিপ্রবির ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের এই সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজা পদত্যাগ করেছেন, তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরী।