সম্পাদকীয়

কেমন হবে মন্ত্রিসভা

লক্ষ্য হোক উন্নত বাংলাদেশ

  • প্রকাশিত ৬ জানুয়ারি, ২০১৯

বিপুল জনসমর্থন পেয়ে বিজয়ী হয়েছে মহাজোট। ইতোমধ্যে এমপিদের শপথবাক্য পাঠ সম্পন্ন হয়েছে। যদিও ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে বিজয়ী এমপিরা এখনো শপথ নেননি। আবার এরই মধ্যে মহাজোটের অন্যতম শরিকদল জাতীয় পার্টি বিরোধী দলে থাকা এবং মন্ত্রিপরিষদে না থাকার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। নির্বাচন-পরবর্তী আনুষ্ঠানিকতার ধারাবাহিকতায় এখন বাকি রইল মন্ত্রিপরিষদ গঠন। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল সোমবার মন্ত্রিপরিষদ গঠন হবে। এ নিয়ে বিজয়ী এমপিরাসহ দেশবাসীর জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। কেমন হবে নতুন মন্ত্রিসভা, কারা কারা থাকবেন, কারা আসছেন নতুন করে অথবা নতুন মন্ত্রিসভা গঠনে শেখ হাসিনার চমক কী থাকছে? এসব বিষয়ে আলোচনায় মুখর সারা দেশ।

এ নিয়ে টানা তৃতীয়বার রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নেতৃত্ব দেবেন শেখ হাসিনা। তিনি ইতোমধ্যে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রভূত সাফল্য দেখিয়ে বিশ্বে নন্দিত হয়েছেন। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জনগণের মননে যে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন, সেই বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে তার মন্ত্রিপরিষদকেও হতে হবে উদ্যমী, সৎ, নিষ্ঠাবান এবং স্বপ্নচারী। রূপকল্প-২০২১ এবং রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে একটি গতিময়, স্বচ্ছ, দায়িত্বশীল এবং প্রত্যয়ী মন্ত্রিসভা গঠনের কোনো বিকল্প নেই।

নতুন মন্ত্রিসভার পরিধি নিয়ে গণমাধ্যমে সম্ভাব্যদের নামও ছাপা হচ্ছে। যদিও কারা মন্ত্রী হবেন এটা একান্তই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিবেচনার ওপর নির্ভরশীল। পত্রিকান্তরে জানা যাচ্ছে, বিজয়ী এমপিরা মন্ত্রিপরিষদের নিজের অবস্থান করে নিতে তৎপরতা চালাচ্ছেন। এসব নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকা ও টিভি মিডিয়ায় বিভিন্ন রকম বিশ্লেষণও প্রচার হচ্ছে। এর ফলে জনমনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তবে শেখ হাসিনার চমক বলেও একটি বিষয় আছে, যা তিনি অতীতে মন্ত্রিসভা গঠনে দেখিয়েছেন।

আমরা দেখেছি, মন্ত্রিপরিষদ গঠনের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার একটি নিজস্ব স্টাইল আছে। তিনি যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, তারুণ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন সর্বোপরি উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে একটি প্রত্যয়ী মন্ত্রিপরিষদ গঠন করবেন- এমনটাই ধারণা করা যাচ্ছে। তবে গত সরকারের মন্ত্রিপরিষদে অনেকের নামে বহুল সমালোচনা এবং অনিয়মের অভিযোগগুলো নিশ্চয়ই তিনি বিশেষভাবে বিবেচনায় আনবেন। আবার বিগত সরকারের মন্ত্রিপরিষদের কর্মদক্ষতা ও অবিতর্কিত ভূমিকার বিষয়গুলো নিশ্চয়ই তিনি প্রাধান্য দেবেন। কারণ আগামী পাঁচ বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি।  কেননা দেশের উন্নয়নের গতি বৃদ্ধি, নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দেশীয় সংস্কৃতির বিকাশ, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতি নির্মূলে কঠোর অবস্থান- এসব লক্ষ্য সামনে রেখেই তিনি মন্ত্রিপরিষদ সাজাবেন এমনটাই জনগণ প্রত্যাশা করে। মনে রাখতে হবে ভোটের হিসাবে বিপুল জনপ্রিয়তা একটি প্রত্যাশার জনচাপও বটে। এ কারণে প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই মন্ত্রী হিসেবে তার বৃহৎ বিজয়ী এমপিদের থেকে বেছে নেবেন সৎ, দেশপ্রেমিক, পারদর্শী, নারী-পুরুষ এবং তারুণ্যের ভারসাম্যপূর্ণ একটি আদর্শিক মন্ত্রিসভা- যারা সততা, যোগ্যতা এবং দেশের প্রতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিবেদিত ভূমিকা রাখতে পারবে।

জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী আমরাও মনে করি বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাশীল রাষ্ট্র হিসেবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এমন মন্ত্রিসভা গঠনই যথার্থ হবে। বিশেষত তরুণ ভোটার এবং আগামী প্রজন্মকে চেতনায় বিকশিত করতে হলে মেধা, আধুনিকতা ও মননশীলতার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে হবে সেই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে যাদের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হবে, তারা যেন তাদের অপকর্মের জন্য সরকারের বোঝা না হয়ে সরকারের সম্পদ হিসেবে ভূমিকা নেন। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads