রোহিঙ্গা সংকটের কারণে দেশ এখন মহাসংকটের মধ্যে পড়েছে। কক্সবাজার এলাকায় তৈরি হয়েছে বহুমাত্রিক নিরাপত্তাঝুঁকি। তা ছাড়া এ সংকটের কারণে এসডিজির সূচকগুলো বাধাগ্রস্ত হবে। আর এ সংকট দূর করতে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পাশাপাশি বহুপাক্ষিক আন্তর্জাতিক আলোচনা এখন সময়ের দাবি।
গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে কক্সবাজার ফোরাম আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সমস্যা : মহাসংকটে কক্সবাজার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা। আলোচনা সভায় বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, বিপদের সময় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আমরা খারাপ করিনি। আমাদের সমস্যা থাকা সত্ত্বেও তাদের আশ্রয় দেওয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের মহাত্ম্য বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছি। তাদের বিপদের সময় যেমন আশ্রয় দিয়েছি, এখন আমরা নিজেরাই বিপদের মধ্যে আছি। মহাসংকট তৈরি হয়েছে দেশের মধ্যে। তিনি বলেন, এই বিরাটসংখ্যক রোহিঙ্গাদের অন্যত্র না সরিয়ে যেখানে আছে সেখান থেকেই বিশ্ববাসীর কাছে সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আমরা আমাদের মানবিকতা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছি। এখন তাদের নিরাপদে ফিরে যাওয়ার বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে। তাদের আসাতে আমাদের যে অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত সমস্যা তৈরি হয়েছে সেটি বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে। এ জন্য সুনির্দিষ্ট একটি টাস্কফোর্স তৈরি করতে হবে। তিনি বলেন, এখন আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ হলো বিলম্বে প্রত্যাবর্তন, বহুমাত্রিক নিরাপত্তা। রোহিঙ্গাদের কারণে সমস্যা তৈরি হচ্ছে এসিডিজির সূচকের। ঝুঁকিতে আছে স্বাস্থ্য খাত, শিক্ষা খাত, সামাজিক নিরাপত্তা।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রুহুল আলম চৌধুরী বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদ আর বন্দরনগরী কক্সবাজারের আজ বেহালদশা। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সম্প্রদায় যারা সেখানে সবসময় বন্দি অবস্থায় ছিল আজ তারা আমাদের এখানে উন্মুক্ত অবস্থায় আছে। যার কারণে আমাদের নিরাপত্তা ঝুঁকির পাশাপাশি মাদকের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষার উপায় নেই। সব সমস্যা নিয়ে আইসিসির চলমান মামলায় আমাদের লড়তে হবে।
কক্সবাজার ফোরামের আহ্বায়ক ব্যারিস্টার মিজান সাঈদের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সাবেক সচিব এ এম এম নাসির উদ্দিন, সিনিয়র আইনজীবী আখতার হামিদ, সংগঠনটির সদস্য সচিব সুজন শর্মা প্রমুখ।